মৌমিতার সঙ্গে দেখা করলেন সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের জেলা আধিকারিক ভাস্কর ঘোষ। সোমবার শান্তিপুরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
সুপুষ্টি দিবসের দিন অন্তঃসত্ত্বা মহিলার সামনে খাবারের থালা সাজিয়ে তার পর তা সরিয়ে নেওয়া নিয়ে যতই বিতর্ক হোক, খোদ দফতরের মন্ত্রী তাতে কোনও অন্যায় দেখছেন না। উল্টে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, খাওয়ার জন্য নয়, শুধু থালায় কিছু খাবার সাজিয়ে তার গুণাগুণ ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দফতর থেকেই গিয়েছে। সুতরাং যাঁরা এটা করেছেন তাঁরা নির্দেশিকা মেনেই করেছেন। তাই তাঁদের শাস্তির প্রসঙ্গও আসছে না।
গত শুক্রবার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নদিয়ার বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সুপুষ্টি দিবস পালন করা হয়। প্রতি মাসের চতুর্থ শুক্রবার দিবস পালিত হবে বলে স্থির হয়েছে। সে দিন গর্ভবতীদের পুষ্টিকর খাবার, রক্তাল্পতা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হবে।
কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় শান্তিপুরের বড় গোস্বামীপাড়া এলাকার একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে। অভিযোগ, গত শুক্রবার ভগবতী দাস রোডের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সাধুখাঁর সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মৌমিতা সাধুখাঁকে ওই কেন্দ্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁর সামনে থালায় নানা রকম খাবার সাজিয়ে দেওয়া হয়। ছবিও তোলা হয়। তার পরই সব খাবার সরিয়ে নিয়ে তাঁকে জানানো হয়, এগুলি শুধু মাত্র ছবি তোলার জন্য আনা হয়েছিল। তাঁর হাতে অন্য খাবারের প্যাকেট ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার অপমানিত মৌমিতা ও বিশ্বজিৎ শান্তিপুরের শিশুকল্যাণ প্রকল্প আধিকারিকের দফতরে অভিযোগ জানান। রবিবার তাঁদের বাড়ি গিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীও ছিলেন।
সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা সোমবার দাবি করেন, “নিয়মিত যে ডায়েট অন্তঃসত্ত্বাদের দেওয়া হয় সুপুষ্টি দিবসের দিনও তাই দেওয়ার কথা। পাশাপাশি কিছু খাবার সাজিয়ে তাঁদের দেখানোর কথা কোনটা এই সময় খাওয়া উচিৎ আর কোনটা খাওয়া উচিত নয়। এই বিষয়টি ওই কেন্দ্রের কর্মীরা অন্তঃসত্ত্বাকে ঠিকঠাক বোঝাতে পারেননি বলেই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।” মন্ত্রী আরও জানান, অন্তঃসত্ত্বাদের বোঝানোর জন্য থালায় যে খাবার রাখা হয়েছিল তা দীর্ঘক্ষণ ধরে বহু মানুষের সামনে পড়ে থাকায় খারাপ হয়ে গিয়েছিল। প্রশাসন সূত্রের খবর, পরে তা ফেলে দেওয়া হয়।
ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে জানা গিয়েছে, সে দিন মোট ২ জন অন্তঃসত্ত্বা অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। অন্য বেশ কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সে দিন রুটিন ডায়েটের বাইরেও বাড়তি কিছু খাবার খাওয়ানো হয়েছিল। অনেক জায়গায় আবার এলাকার বাসিন্দারাও কিছু পদ রান্না করে এনেছিলেন। শশী পাঁজা এ দিন বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কিছু দেখছি না। দফতরের গাইডলাইনের মধ্যে থেকেই ওই কর্মী কাজ করেছেন। শুধু তিনি আগে থেকে ভাল করে বোঝাতে পারেননি। তবে খাবার সাজিয়ে ছবি তোলার কোনও নির্দেশ দফতর দেয়নি।’’
সোমবার সকালে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়েছিলেন সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের নদিয়া জেলার প্রকল্প আধিকারিক ভাস্কর ঘোষ, রানাঘাট ১ ব্লকের শিশু উন্নয়ন প্রকল্প আধিকারিক মদন কুমার দাস। সেখানে তাঁরা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পর যান মৌমিতা সাধুখাঁর বাড়ি। কোনও অসুবিধা হলেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তাঁকে জানাতে অনুরোধ করেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy