বিলম্ব: হাওড়া থেকে প্রায় ৪৫ মিনিট দেরিতে ঢুকল শহিদ এক্সপ্রেস। সোমবার বোলপুর স্টেশনে। —নিজস্ব চিত্র।
সময় মেনে চলা, পরিচ্ছন্ন কামরা আর সাধারণের নাগালের মধ্যে থাকা ভাড়া, এই ছিল শহিদ এক্সপ্রেসের ইউএসপি। গত এক মাস ধরে যা হারাতে শুরু করেছে হাওড়া – রামপুরহাটের মধ্যে সংযোগকারী এই দ্রুতগামী ট্রেনে। প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে বোলপুর পৌঁছোনোটা অভ্যাসেই পরিণত হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। যার ফলে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে এই ট্রেনের নিত্যযাত্রীদের। গড়ে এক ঘন্টা করে দেরিতে চলায় এই ট্রেনের যাত্রী পরিষেবা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সম্প্রতি ট্রেনটি কেন দেরি করছে তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’
হাওড়া – রামপুরহাট শাখার নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, সময়ানুবর্তী বলে এই শাখায় যে ট্রেনটির প্রতি মানুষের দীর্ঘদিনের আস্থা ছিল সেটি এখন প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের থেকে কতটা দেরিতে প্লাটফর্মে এসে পৌঁছোবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেন না। ঘোষণা হওয়ার পরেও দেরিতে ট্রেন ঢোকে মাঝেমধ্যে। সপ্তাহে সাত দিনই হাওড়া থেকে দুপুর ১১টা ৫৫ মিনিটে শহিদ এক্সপ্রেস ছাড়ে। অধিকাংশ বোলপুরের যাত্রীই এই ট্রেনটি পছন্দ করেন প্রায় দু-ঘন্টার মধ্যে এটি বোলপুর পৌঁছে দেয় বলে। কিন্তু সমস্যা হল, এর ছাড়ার সময় নির্দিষ্ট থাকলেও পথে দেরি করায় বোলপুরে ঢুকতে যেমন দেরি হয় তেমনই বিকেলে রামপুরহাট থেকে ছেড়ে এই ট্রেনটি বোলপুরে ঢুকতে দেরি করে। নিত্যযাত্রীদের মধ্যে অনেকেই অফিস সেরে বোলপুর থেকে এই ট্রেন ধরেন। তাঁদেরই একজন পিনাকী আচার্য বলেন, ‘‘রামপুরহাট থেকে বিকেল ৪টা ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়ে। এক ঘন্টা লাগে এই ট্রেনটির বোলপুরে পৌঁছোতে। কিন্তু বেশিরভাগ দিনই হাওড়াগামী শহিদ এক্সপ্রেস ৬টা ১৫ মিনিটের পরে বোলপুরে ঢোকে।’’ বোলপুরের বাসিন্দা সমীর পাল বলেন, ‘‘ব্যবসা সূত্রে প্রতিদিনই যাতায়াত করতে হয়, বেশির ভাগ দিনই ট্রেনটি দেরি করছে, যার ফলে কলকাতা পৌঁছতেও অনেকটা দেরি হয়ে যাচ্ছে। ট্রেনটি যেন সঠিক সময়ে চলে।’’
বোলপুর স্টেশনে কর্মরত রেলের কর্মীদের একাংশ জানান, সিগন্যাল না পাওয়ার সমস্যার জন্য কখনও কখনও ট্রেনটি দেরি করলেও এটা রোজকার ঘটনা নয়। কিন্তু যাত্রীরা এই দাবি মানতে নারাজ। রেলের সময় সারণি অনুযায়ী সোমবারই এই ট্রেনটি বোলপুর স্টেশনে ঢুকেছে ৪৬ মিনিট দেরিতে। আর মঙ্গলবার ১৫ মিনিট দেরিতে। এই ট্রেনের হকার থেকে যাত্রী সকলেই পাল্টা দাবি করেছেন, মঙ্গলবার ট্রেনটির ১৫ মিনিট দেরিতে বোলপুর স্টেশনে পৌঁছনোটাই ব্যতিক্রম।
নিত্যযাত্রীদের কথায়, এই ট্রেনটিকে দেরি করানোর ফলে যাত্রী সংখ্যাও কমছে। এই ট্রেনের নিয়মিত হকার মিন্টু শেখ বলেন, ‘‘প্রায় এক মাস থেকেই এই ট্রেনটি ঘন্টাখানেক দেরি করে ঢুকছে বোলপুরে। যার ফলে আমাদেরও অন্য ট্রেনে ব্যবসা করার কথা ভাবতে হচ্ছে। এই ট্রেন ধরে আর তেমন লাভ হচ্ছে না।’’
এ দিনও বোলপুর স্টেশনে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে অপেক্ষমাণ যাত্রী মালা সূত্রধর বলেন, ‘‘দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছি। প্রায়ই যাতায়াত করি এই ট্রেনে। আগে এতটা দেরি করত না। এখন দেখছি হাওড়া যেতে হলে আগের ট্রেন ধরতে হবে।’’ রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘মেমারি থেকে বর্ধমানের মধ্যে ইন্টার লকিং ও সিগন্যালের কিছু কাজ হচ্ছে। তবে খুব শিগগিরই সেই কাজ শেষ হবে। এই কারণে শহিদ এক্সপ্রেস দেরিতে চলছে কী না খতিয়ে দেখছি। যেহেতু ট্রেনটি দেরিতে রামপুরহাট পৌঁছচ্ছে তাই ফেরার সময়ও বোলপুরে ঢুকতে দেরি হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy