Advertisement
E-Paper

যাদবপুরের ‘শব্দকল্প’-এর চলার পথে সাহায্যের হাত

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব কালচারাল টেক্সটস অ‍্যান্ড রেকর্ডসের উদ্যোগে, ধাপে ধাপে আসা অর্থসাহায‍্যের জোরেই পাহাড়প্রমাণ কাজ এগোচ্ছে।

বাংলার একটি পুরনো, সুপরিচিত শিল্পোদ‍্যোগী পরিবার এগিয়ে আসায় অনেকটা অক্সিজেন পেল বাংলা ভাষা প্রসারের প্রকল্পটি।

বাংলার একটি পুরনো, সুপরিচিত শিল্পোদ‍্যোগী পরিবার এগিয়ে আসায় অনেকটা অক্সিজেন পেল বাংলা ভাষা প্রসারের প্রকল্পটি। ছবি: সংগৃহীত।

ঋজু বসু

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৫
Share
Save

হাতে আর তিন বছরও নেই। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারির প্রথম পূর্ণাঙ্গ সংস্করণের জন্মের শতবর্ষ, ২০২৮-কেই পাখির চোখ করেছেন শব্দকল্পের কারিগরেরা। ২০২৮-এর একুশে ফেব্রুয়ারির সময়সীমা সামনে রেখে প্রথম বৈদ‍্যুতিন বাংলা বিবর্তনমূলক অভিধান শব্দকল্পের কাজ চলছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব কালচারাল টেক্সটস অ‍্যান্ড রেকর্ডসের উদ্যোগে, ধাপে ধাপে আসা অর্থসাহায‍্যের জোরেই পাহাড়প্রমাণ এই কাজ এগোচ্ছে। সম্প্রতি বাংলার একটি পুরনো, সুপরিচিত শিল্পোদ‍্যোগী পরিবার এগিয়ে আসায় অনেকটা অক্সিজেন পেল বাংলা ভাষা প্রসারের প্রকল্পটি।

দীপঙ্কর চট্টোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত, তাঁর ঠাকুরদার নামাঙ্কিত ‘বিশ্বেশ্বর চট্টোপাধ্যায় ট্রাস্ট’-এর দুই ট্রাস্টি রুদ্র চট্টোপাধ্যায় এবং মিতাক্ষরা কুমারী সম্প্রতি যাদবপুরে শব্দকল্পের কাজ দেখতে গিয়েছিলেন। আগামী তিন বছরের জন‍্য শব্দকল্পের প্রসারে খানিকটা অনুদান দিতে তাঁরা এগিয়ে এসেছেন। লক্ষ্মী টি গোষ্ঠী এবং কার্পেট প্রস্তুতকারী ওবিটি সংস্থার কর্ণধার রুদ্র (দীপঙ্করের পুত্র) বলছিলেন, “বাংলা তো আমার নিজের ভাষা! বাংলা ভাষার সব মুদ্রিত শব্দের মহাসাগর সাজিয়ে এক জায়গায় জড়ো করার কাজ আমার দারুণ দরকারি মনে হচ্ছে। ভবিষ‍্যৎ প্রজন্মের হাতে বাংলা ভাষাকে যত্নে তুলে দিতে এটাই পথ। খুব আগ্রহ নিয়ে আমরা এই কাজের শরিক হচ্ছি।”

শব্দকল্প প্রকল্পটির নির্দেশক, যাদবপুরের ইমেরিটাস অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী মনে করছেন, বিশ্বেশ্বর চট্টোপাধ্যায় ট্রাস্টের এই সাহায‍্য তাঁদের আগামীতে যথেষ্ট শক্তি জোগাবে। সুকান্তের কথায়, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীদের গ্লোবাল ফাউন্ডেশন এবং বিশ্বেশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের নামের ট্রাস্ট, দুটোই আমাদের বড় সম্বল। আরও কিছু সাহায‍্য, অনুদান আমরা পেয়েছি। তবে, পুরো কাজটা শেষ করতে এর বাইরেও কিছুটা সাহায‍্য লাগবে।”

বিশ্বের যে কোনও ভাষায় এবং অ-ল্যাটিন লিপিতে প্রথম বৈদ‍্যুতিন বিবর্তনমূলক অভিধানের জন‍্য কিছু অভূতপূর্ব সফটওয়‍্যার ইতিমধ্যে তৈরি। নেট দুনিয়া থেকে বাংলার বিপুল শব্দ-ভাঁড়ার অনেকটাই জড়ো করা হয়েছে। সুকান্ত বলছিলেন, “শব্দকল্প যে ওয়েবসাইটটিতে আত্মপ্রকাশ করবে, সেটি তৈরির কাজ আগামী বছরে শুরু হবে। আনুষঙ্গিক আরও কয়েকটি সফটওয়্যারও তৈরি হবে। কিছু নির্দিষ্ট কাজ, প্রযুক্তি প্রয়োগের জন‍্য কয়েক জনকে নিয়োগ করা দরকার। চট্টোপাধ্যায় পরিবারের মতো বাঙালি সমাজের আরও কেউ নিশ্চয়ই এগিয়ে আসবেন।”

রুদ্র আগে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেসের বেঙ্গল লাইব্রেরি সিরিজ প্রকল্পটিতে বাংলার কালজয়ী কিছু সাহিত‍্য-কাজের বাংলা ও ইংরেজি দ্বিভাষিক সটীক সংস্করণেরও পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। ওই প্রকল্পটি আবার অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের তত্ত্বাবধানে চলছে। রুদ্রেরা সেখানে সিরিজের প্রথম তিনটি বই, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কালান্তর’ প্রবন্ধ সঙ্কলন, মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ কাব‍্য’ ও আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’ প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত।

রুদ্রের কথায়, “বাংলা ভাষার পরিচর্যার প্রধান কাজগুলির সঙ্গে এ ভাবেই আমরা যুক্ত থাকতে চাই।” বিশ্বেশ্বর চট্টোপাধ্যায় ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা দীপঙ্কর চট্টোপাধ‍্যায় বলেন, “শব্দকল্পের মাধ‍্যমে বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ভাষার চলমান পরম্পরা আগলে রাখার কাজে জড়িয়ে থাকার একটা সুযোগ আমরা পাচ্ছি।” শব্দকল্পের জন‍্য সাহায‍্যের আশায় কাজটি মেলে ধরতে সম্প্রতি নেটে একটি পরিচিতি (shabdakalpa.com) প্রকাশিত হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jadavpur Jadavpur University

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy