Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Taxi Service Disrupted

অশান্তির আশঙ্কায় ট্যাক্সি উধাও স্টেশনে, ভোগান্তি বহু যাত্রীর

গাড়ির সংখ্যা যে তুলনামূলক ভাবে কম ছিল, তা মেনে নিলেন হাওড়া স্টেশনের ট্যাক্সি বুথের এক কর্মীও। তাঁর যুক্তি, ‘‘এমনিতেই রাস্তাঘাটে প্রচুর মিছিল বেরিয়েছে। তার উপরে ঝামেলা, অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে।”

An image of Howrah Station

হাওড়া স্টেশন। —ফাইল চিত্র।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:২০
Share: Save:

স্টেশনের ট্যাক্সি বুথের সামনে লম্বা লাইন। মালপত্র হাতে ট্যাক্সির অপেক্ষায় ঠায় দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। বুথের পাশে ট্যাক্সি দাঁড়ানোর রাস্তায় গাড়ির দেখা নেই। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে মাঝেমধ্যে দু’-একটি ট্যাক্সি আসছে বটে, তবে তাতে লাইন কমা তো দূর, উল্টে তা সময়ের সঙ্গে বেড়েই চলেছে। অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের কেউ বুথের কর্মীকে প্রশ্ন করলে সদুত্তর তো মিলছেই না, উল্টে শুনতে হচ্ছে, ‘‘গাড়ি না থাকলে আমিই কি গড়িয়ে যাব? দাঁড়িয়ে থাকুন, এলেই পাবেন।’’

সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে হাওড়া স্টেশনের এই ছবির সঙ্গে অন্যান্য দিনের হিসেব মেলাতে পারছিলেন না যাত্রীদের একটি বড় অংশ। দূরপাল্লার ট্রেন হোক বা লোকাল, স্টেশনে নেমে ফাঁকা রাস্তাঘাট দেখে অনেকেই জানতে চেয়েছেন, ‘‘কেউ বন্‌ধ ডেকেছে নাকি?’’ কেউ আবার কোথাও হঠাৎ কোনও ঝামেলা হয়েছে কি না, জানতে চাওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই খেয়াল হওয়ায় স্বগতোক্তি করেছেন, ‘‘অযোধ্যায় মন্দিরের উদ্বোধন হচ্ছে, আর এখানে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই।’’ গাড়ির সংখ্যা যে তুলনামূলক ভাবে কম ছিল, তা মেনে নিলেন হাওড়া স্টেশনের ট্যাক্সি বুথের এক কর্মীও। তাঁর যুক্তি, ‘‘এমনিতেই রাস্তাঘাটে প্রচুর মিছিল বেরিয়েছে। তার উপরে ঝামেলা, অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। কে আর ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি নামাবে বলুন তো? চালকদের অধিকাংশই গাড়ি বার করেননি।’’ ট্যাক্সির অভাবে সব থেকে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন ভিন্ রাজ্য থেকে কলকাতায় আসা যাত্রীরা। এ দিন দুপুরে পরিবার নিয়ে হাওড়া স্টেশনের ট্যাক্সি বুথের সামনে ছেলে কোলে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেহালার কাঞ্চন মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘ট্যাক্সির লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায় ৩০ মিনিট হয়ে গেল। গাড়ির দেখাই পাচ্ছি না। যদি ট্যাক্সি না পাই, তা হলে মালপত্র নিয়ে কী ভাবে বাসে উঠব, তা-ই ভাবছি।’’

শুধু হাওড়া নয়, এ দিন সকাল থেকে চেনা ব্যস্ততা ছিল না শিয়ালদহ স্টেশনেও। শহরতলি থেকে একের পর এক লোকাল ট্রেন ওই স্টেশনে এসে থামলেও পরিচিত ভিড় ছিল উধাও। সকালের দিকে তা-ও অফিসযাত্রীদের কিছুটা ভিড় চোখে পড়লেও বেলা গড়াতে তা-ও উধাও হয়ে যায়। বারাসত থেকে ট্রেন ধরে প্রতিদিন কলকাতায় আসেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী মিঠু বিশ্বাস। এ দিন তিনি বললেন, ‘‘অন্যান্য দিন বারাসত থেকে ট্রেনে ওঠা মানে একটা যুদ্ধ করার সমান। আজ তো কোনও ঝঞ্ঝাটই নেই, ফাঁকায় ফাঁকায় ট্রেনে উঠে গেলাম।’’ অশান্তির আশঙ্কায় এ দিন আমজনতার একটি বড় অংশই বাইরে বেরোনো এড়িয়েছেন। একই দাবি হাওড়া শাখার যাত্রীদেরও। তবে, নানা প্রয়োজনে যে অল্প সংখ্যক সাধারণ মানুষ বাইরে বেরিয়েছেন, তাঁরা ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। অন্যান্য দিনের মতো বনগাঁ লোকালে করে শিয়ালদহে আসা সন্তু বিশ্বাস বললেন, ‘‘বন্ধু-বান্ধব কেউ বেরোয়নি। জরুরি পরিষেবায় কাজ করি বলে আমাকে আসতে হচ্ছে। না হলে কে আর ঝুঁকি নেয়?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Station Taxi Ayodhya Ram Mandir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy