প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
তখন কোভিড-কাল। সেই ২০২০-২২ সালে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার আসবাব, এসি, ফ্রিজ়, টিভি কিনেছিল রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। ওই সময়কালেই নলবন ফুড পার্কের সৌন্দর্য্যায়ন ও রংবাহারি গাছ লাগাতে খরচ হয়েছিল প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা!
নিগমের কর্মীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা অবসরকালীন মোটা টাকা থেকে বঞ্চিত। এই আবহে কোভিড-কালে নিগম কোটি টাকা স্রেফ ‘অপব্যয়’ করেছিল বলে রাজ্য অর্থ দফতরের করা সাম্প্রতিক ‘স্পেশ্যাল অডিট রিপোর্টে’ উঠে এসেছে।
২০১৮-২২ সালে নিগমের বিভিন্ন আয়ব্যয়ের গরমিল ধরা পড়ায় নবান্ন ‘স্পেশ্যাল অডিট’-এর নির্দেশ দেয়। সেই রিপোর্টই সম্প্রতি জমা পড়েছে মৎস্য দফতরে। যেখানে গত পাঁচ বছরে নিগমের বিভিন্ন প্রকল্পে মোটা টাকা খরচে বিস্তর অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।নিগমের তদানীন্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমার সময়ে সব কিছুই নিয়ম মেনে হয়েছিল।’’ এ সম্পর্কে জানতে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরীকে একাধিক বার ফোন ও এসএমএস করলেও জবাব মেলেনি।
রাজ্যে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গি নিবারণে গাপ্পি মাছ চাষে জোর দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় গাপ্পি মাছ সরবরাহের ভার দেওয়া হয়েছিল নিগমকে। যার জন্য ২০১৮-২২ সালে নিগমকে সরকারের বরাদ্দ করা সাড়ে ন’কোটি টাকার বেশিরভাগই নয়ছয় হয়েছে বলে অডিট রিপোর্টে অভিযোগ। রিপোর্ট জানিয়েছে, যে দু’-তিনটি সংস্থা থেকে নিগম গাপ্পি কিনেছিল, তাদের মাছ বিক্রি সংক্রান্ত কোনও বৈধ লাইসেন্সই ছিল না। দু’টি সংস্থা ভিন্ন নামে গাপ্পি সরবরাহ করলেও তাদের ঠিকানা, মালিকানা একই।
সরকরি নিয়মে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কমপক্ষে চারটি সংস্থার যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও গাপ্পি কিনতে মাত্র তিনটি সংস্থা যোগ দিয়েছিল বলেও জানিয়েছে অডিট। বলা হয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়াটাই ছিল অবৈধ। অভিযোগ, টেন্ডারে যে সংস্থার নিগমকে ন্যুনতম মূল্যে গাপ্পি সরবরাহ করার কথা ছিল, কোনও অজ্ঞাত কারণে তারা মাছ দেয়নি। নিগম নির্ধারিত দরের থেকে অত্যধিক বেশি দরে গাপ্পি কিনেছিল। যা পুরোপুরি বেআইনি। অডিট রিপোর্ট জানিয়েছে, অডিটের আগে নিগম থেকে গাপ্পি কেনা সংক্রান্ত অ্যাকাউন্টস বুক, নথি কিছুই দেওয়া হয়নি।
রিপোর্টে অভিযোগ, নিগমের বিভিন্ন জলাশয়ে মাছের চারা ছাড়া, পরিকাঠামো উন্নয়নে ন’টি সংস্থাকে আর্থিক ভাবে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, বেশিরভাগ সংস্থার মাছ কেনাবেচা সংক্রান্ত ট্রেড লাইসেন্সই ছিল না। ‘জেনারেল অর্ডার সাপ্লায়ারস’ নামে তাদের ট্রেড লাইসেন্স ছিল। অথচ তাদের থেকে কোটি টাকার মাছের চারা কেনা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
রিপোর্ট আরও জানিয়েছে, ২০২০-২১ সালে নলবনে টেন্ডার ছাড়াই ‘বেঙ্গল ফিশ ফেস্ট’ উপলক্ষে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল, ২০১৮-২২ অর্থ বছরে কোনও প্রকল্পেই টেন্ডারের কোনও বিধি মানা হয়নি। একাধিক সংস্থাকে ‘অন্যায় ভাবে’ কাজের সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy