প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘদিনের হাজারো অভিযোগ, হাজারো তর্জনগর্জন, হাজারো নীতি-নির্দেশিকা সত্ত্বেও এক শ্রেণির স্কুলশিক্ষকের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করা যায়নি। করোনা অতিমারিতে স্কুল-সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন বন্ধ, তখনও সেই পরিস্থিতি বদলায়নি। এত দিন শিক্ষকদের বাড়িতে পড়ার জন্য ভিড় জমত, এখন রমরমিয়ে প্রাইভেট টিউশন চলছে অনলাইনে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আচরণবিধিতেই বলা আছে, স্কুলশিক্ষকেরা টিউশন করতে পারবেন না। কিন্তু সেই বিধি আছে বিধিতেই! যাঁরা শুধু প্রাইভেট টিউশন করেই জীবিকা নির্বাহ করেন, তাঁদের বক্তব্য, স্কুলশিক্ষকেরা কেন টিউশন করবেন— এই প্রশ্ন তুলে তাঁরা শিক্ষা দফতর, পর্ষদ, জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে দরবার করেছেন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। গৃহশিক্ষক সংগঠনের সদস্য অভিজিৎ প্রামাণিক বলেন, ‘‘করোনা-কালে শিক্ষকেরা স্কুলে না-গিয়েও বেতন পাচ্ছেন। গৃহশিক্ষকদের সম্বল তো শুধু টিউশন। কিন্তু স্কুলশিক্ষকদের টিউশনের জন্য এই পরিস্থিতিতেও আমরা রুজিরোজগারের সুযোগ হারাচ্ছি।’’
বর্ধমানের সিএমএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায় জানান, স্কুলশিক্ষকদের টিউশনের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। জানতে পেরেছেন, তাঁর স্কুলের এক শিক্ষক ৬০০-৭০০ পড়ুয়াকে বাড়িতে পড়ান। পড়ানোর জন্য বাতানুকূল কক্ষও আছে তাঁর।
গৃহশিক্ষক সমিতির অভিযোগ, শুধু বর্ধমান নয়, সারা রাজ্যেই এক শ্রেণির স্কুলশিক্ষক টিউশন করছেন। কোন স্কুলের কোন শিক্ষক সারা দিনে ক’টি ব্যাচ বাড়িতে পড়ান, ক’জন সেই ব্যাচে পড়ে, কী কী বিষয় পড়ে— এই সব তথ্য জেলা স্কুল পরিদর্শককে দিয়েও কোনও ফল হয়নি। এখন প্রায় প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গেই প্রজেক্ট ওয়ার্ক থাকে। তাঁদের কাছে পড়লে প্রজেক্ট ওয়ার্কে পুরো নম্বর পাওয়া যাবে— স্কুলশিক্ষকদের এই আশ্বাসে অনেকে ওই শিক্ষকদের কাছে টিউশন নেয়।
বর্ধমান শহরের সিএমএস স্কুলের যে-শিক্ষক ৬০০-৭০০ পড়ুয়াকে টিউশন দেন বলে অভিযোগ, তিনি বলেন, ‘‘আমি টিউশন করি না। আমার স্কুলের এক পার্ট-টাইম শিক্ষক আমার বাড়িতে গিয়ে পড়ান।’’ উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার একটি স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘আগে পড়াতাম। কিন্তু গত এক বছর ধরে এ-সবের থেকে আমি অনেক দূরে।’’
উপযুক্ত প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা। ‘‘স্কুলশিক্ষকদের টিউশন অনেক আগেই নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলেই আমরা ব্যবস্থা নেব। এই সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি কমিটিও আছে,’’ বলেন ওই পর্ষদ-কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy