বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে জবাব আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির। ফাইল চিত্র।
‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগান তুলে সমস্যার সমাধান হবে না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে এই বার্তাই দিলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর নেতা নওশাদ সিদ্দিকি। ‘ভোট-সংঘর্ষের শিকার’ বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে শনিবার বারুইপুর জেলা বিজেপির কার্যালয়ে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি নওশাদকে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেন। সঙ্গে ‘নো ভোট টু মমতা’ স্লোগানেও সরব হতে বলেন তিনি। এরই জবাবে ওই মন্তব্য করেন নওশাদ।
শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ সেই ভাঙড়ের দিকে যাওয়ার সময় নওশাদকে বাধা দেয় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। বলা হয়, ওই এলাকায় ঢোকার অনুমতি নেই তাঁর। বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও কেন ভাঙড়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না, এ নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের উপরে ক্ষোভ উগরে দেন নওশাদ। টানা অপেক্ষার পর গাড়ি ঘুরিয়ে নেন তিনি। অভিযোগ, ভাঙড়ের বিধায়ককে নিজের এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই সংক্রান্ত বিষয়ে শুভেন্দুকে প্রশ্ন করা হলেন তিনি বলেন, ‘‘নওশাদ আগে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুন। বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবে দেখাচ্ছেন। আপনি আগে নিজে হাত খুলে দিন, তা হলে তো আমরা ভাঙড়ে যাব।’’ সঙ্গে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘নো ভোট টু মমতার স্লোগানও তাঁকে তুলতে হবে।’’ জবাবে নওশাদ বলেন, ‘‘এ কথা বললেই যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এমনটা নয়। আমি শুরু থেকে বলেছি। আজও বলছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেওয়া বাংলার জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রত্যাখান করতে হবে। তিনি যত কম ভোট পাবেন বাংলার গণতন্ত্রের জন্য তত মঙ্গল হবে।’’
শনিবার রাতে এক ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করেন নওশাদ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আমি কী রাস্তা খুলে দেব? তিনি একজন সিনিয়র নেতা। এত দিনের রাজনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে যে পদে আছেন, সারা রাজ্যের মানুষের জন্য তাঁকে কথা বলতে হবে। তিনি শুধু বিজেপির হয়ে কথা বলবেন এমনটা নয়। সিপিএম, কংগ্রেস, আইএসএফ-সহ সামগ্রিক ভাবে সেই মানুষের হয়ে কথা বলতে হবে যাঁরা এই শাসকের অত্যাচারে অতিষ্ট। আমি তো প্রথম দিন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সমালোচনা করে আসছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাজনীতি করছেন, তাঁর সমালোচনা করে আসছি। এই পঞ্চায়েত ভোটেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ভোট দিতে বারণ করেছি। বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁদের ভোট দিতে বারণ করেছি। আবার কী ভাবে রাস্তা খুলব।’’
রাজনীতির বৃত্তে ঘোরাফেরা করাদের একাংশের মতে, বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের মতোই ভাঙড়ের বিধায়ক রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন। পাশাপাশি, বিজেপি-বিরোধী অবস্থান নিতেও ভোলেন না তিনি। তাই ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করে তৃণমূলের সঙ্গে নিজের বিজেপি-বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে শুভেন্দুকে জবাব দিয়েছেন নওশাদ। যেখানে তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীকে আমি বিরোধী দলনেতার থেকেও তাঁকে আমি সারা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলে মনে করি। তাঁর কাজ, রাজ্যের যেখানে সংবিধান লঙ্ঘিত হচ্ছে, সংবিধান বর্হিভূত কাণ্ড হচ্ছে, মানুষের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে, মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, গণতন্ত্র আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে গিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু ভাঙড়, ক্যানিং, আমতা নয়, সারা রাজ্যে তাঁকে যেতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy