সায়ন্তন বসুর নেতৃত্বে মিছিল বসিরহাটে। —নিজস্ব চিত্র।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বেনজির অবনতির অভিযোগ তুলে রাজ্য জুড়ে পুলিশ সুপার এবং কমিশনারদের অফিস ঘেরাও করল বিজেপি। মিছিল, ধর্না, বিক্ষোভে সরগরম হল প্রায় সব জেলা সদর। আসানসোলে বিজেপি কর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করায় দু’পক্ষে ধস্তাধস্তিও হল। আর বসিরহাট থেকে সায়ন্তন বসু এবং বাঁকুড়া থেকে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিলেন, প্রয়োজন হলে বাংলায়ও চালু হবে উত্তরপ্রদেশের মতো ‘এনকাউন্টার’ মডেল।
ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে ভাটপাড়া-কাঁকিনাড়ায় অনবরত অশান্তি তো চলেছেই, সন্দেশখালি, আমডাঙা, খণ্ডঘোষ, পাত্রসায়র-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনা এবং খুন-জখমের খবর এসেছে। তার প্রেক্ষিতেই রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, সোমবার গোটা রাজ্যে এসপি অফিস ঘেরাও করবে বিজেপি।
ঘেরাও কর্মসূচি সফল করার জন্য এ দিন সকাল থেকে বিজেপির তরফে তৎপরতা যেমন ছিল, গোটা রাজ্যে ঠিক তেমনই তৎপর ছিল পুলিশও। পুলিশ সুপারদের অফিস বা বিভিন্ন কমিশনারেটের সদর দফতরকে প্রায় দুর্গে পরিণত করা হয়েছিল। রাস্তায় নামানো হয়েছিল বিরাট বাহিনী।
আরও পড়ুন: ফের ধস তৃণমূলে, দঃ দিনাজপুর জেলা পরিষদের দখল নিল বিজেপি, গেলেন কালচিনির বিধায়কও
আসানসোলে ঘেরাও চলছে প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। —নিজস্ব চিত্র।
বসিরহাটে এসপি অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি পালিত হয় রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর নেতৃত্বে। বাঁকুড়ায় নেতৃত্ব দেন আর এক সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ সপ্তর্ষি চৌধুরীও। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট ঘেরাও হয় সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। প্রায় সর্বত্রই মিছিল নিয়ে এসপি অফিস বা কমিশনারেটের দিকে এগোন বিজেপি নেতৃত্ব। পুলিশ ব্যারিকেডে বাধা পেয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ বা ধর্না। তবে কোথাও কোথাও ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টাও হয়। আসানসোলে সে চেষ্টা নিয়ে কিছুটা উত্তেজনাও ছড়ায়। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তবে পশ্চিম বর্ধমান জেলা বিজেপির সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। পুলিশের সঙ্গে আমাদের কর্মীদের একটু ধস্তাধস্তি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু পরে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আমাদের খুব ভাল আলোচনা হয়েছে। তিনি যত দ্রুত সম্ভব দুষ্কৃতীরাজ নিয়ন্ত্রণে আনার প্রতিশ্রুতি আমাদের দিয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: কোচবিহারে বিক্ষোভের মুখে সুব্রত বক্সী, ঢুকতে পারলেন না শীতলকুচিতে
রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অবস্থান বিক্ষোভ বাঁকুড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
এই দুষ্কৃতীরাজ প্রসঙ্গেই এ দিন আবার বসিরহাটে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সায়ন্তন বসু। সন্দেশখালি কাণ্ডের অভিযুক্তরা কেন এখনও গ্রেফতার হল না, সে প্রশ্ন তুলে পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সায়ন্তন। তার সঙ্গেই বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। হয় গ্রেফতার করতে হবে, না হলে এনকাউন্টার। উত্তরপ্রদেশে যে মডেল চালু হয়েছে, প্রয়োজন হলে সেই মডেল এখানেও চালু করতে হবে।’’
সমাপতনই হোক বা পরিকল্পিত, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়ানও সোমবার মিলে গিয়েছে সায়ন্তনের মন্তব্যের সঙ্গে। বাঁকুড়ায় এ দিন নিজের ভাষণে কাটমানি প্রসঙ্গে তৃণমূলকে আক্রমণ করেন রাজু। তৃণমূল নেতাদের শুধরে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই সূত্রেই তাঁর হুঁশিয়ারি— শুধরে না গেলে এনকাউন্টার।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy