প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজোয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ‘আমন্ত্রণপত্র’। ছবি: ফেসবুক।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো হচ্ছে। সোমবার রাতে ফেসবুকে ‘আমন্ত্রণপত্র’ পোস্ট করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। গত কয়েক দিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং টিএমসিপি-র মধ্যে সরস্বতী পুজো নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। তার মধ্যেই নতুন এই পোস্ট। সেখানে লেখা, ‘‘প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো হচ্ছে, সকলের আমন্ত্রণ রইল।’’ উদ্যোক্তা হিসাবে সেখানে লেখা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রী এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট।
সোমবার রাতে সমাজমাধ্যমে আরও একটি পোস্টার পোস্ট করে পিইউটিএমসিপি। সেখানে লেখা ছিল, ‘‘দেখা হচ্ছে বৃহস্পতিবার, ২৬ তারিখ। সকাল সকাল চলে এসো সকলে।’’ রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে রাজি করিয়ে ক্যাম্পাসের মধ্যেই বাগ্দেবীর আরাধনার আয়োজন করতে। যদি কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেন, তা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনেই পুজোর আয়োজন করা হবে।’’ এ ছাড়া তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকে একটি হ্যাশট্যাগ চালু করা হবে— #PresidencyPujaKorche। যাঁরা টিএমসিপি-র দাবিকে সমর্থন করছেন, তাঁরা তাঁদের পোস্টে ওই হ্যাশট্যাগটি যাতে ব্যবহার করেন, সে অনুরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রান্তিক।
প্রেসিডেন্সির দীর্ঘ ইতিহাসে এ যাবৎ প্রতিষ্ঠান চত্বরে কখনও সরস্বতী পুজো হয়নি। কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধর্মনিরপেক্ষতার কথাই বলেছেন বরাবর। গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সরস্বতী পুজো করার অনুমতি চেয়ে ডিন অব স্টুডেন্টসের কাছে আর্জি পেশ করেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। চিঠিতে তারা জানিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তারা এ বছর সরস্বতী পুজো করতে চায়। সে জন্য ২৫ থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণ ব্যবহারের অনুমতি চায় তারা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেননি। শিক্ষাঙ্গনে পুজো নিয়ে কর্তৃপক্ষের আপত্তির মধ্যেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জানিয়ে দিয়েছিল, প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো তারা করবেই। হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, ‘‘পুজো কেউ আটকাতে পারবে না।’’
পিইউটিএমসিপি প্রশ্ন তুলেছিল কর্তৃপক্ষের যুক্তি নিয়েই। তাদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই ধর্মনিরপেক্ষ শব্দটির সঠিক সাংবিধানিক অর্থ জানেন না। প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজোর দাবিতে একটি দীর্ঘ ফেসবুক পোস্ট করেছিল পিইউটিএমসিপি। সেই ফেসবুক পোস্টের বক্তব্য ছিল, শিক্ষাঙ্গনে ধর্মনিরপেক্ষতার ওজর তুলে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো করতে দেন না কর্তৃপক্ষ। যা আদতে বাম ছাত্র সংগঠনের চাপে কর্তৃপক্ষের ভয় পাওয়ার ফল। এ ব্যাপারে বাম নেতা সুভাষ চক্রবর্তীর তারাপীঠে পুজো দিতে যাওয়ার প্রসঙ্গও তুলে ধরে তারা। পিইউটিএমসিপির এই ‘জেদ’ প্রসঙ্গে টিএমসিপির রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় চন্দ যদিও অন্য কথা বলেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের সঙ্গে এ সব মানায় না। আমি চাই না কেউ জেদ করে বসে থাকুক।’’
শেষমেশ যদিও পুজো হবে বলেই জানিয়ে দিল টিএমসিপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy