শান্তনু ঠাকুর। — ফাইল চিত্র।
প্রথমে বলেছিলেন, নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে তাঁর আবেদন জানানোর কোনও কারণ নেই। তিনি এ দেশেই জন্মেছেন। কিন্তু শনিবার সেই অবস্থান থেকে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জানালেন, তিনিও সিএএ-তে দেশের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন। কেন? শান্তনুর দাবি, সিএএ চালুর পরে তৃণমূল যে দাবি করছে, এই আইনে আবেদন করলে সব পরিচয়পত্র বাতিল হয়ে যাবে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সরকারি ভর্তুকি বন্ধ হয়ে যাবে, তা যে অসত্য, সেটাই তিনি প্রমাণ করে দিতে চান।
সিএএ চালু হওয়ার পরে শান্তনু জানিয়েছিলেন, যে হেতু তাঁর বাবা-মা এবং তাঁর নিজেরও জন্ম এ দেশে, ফলে নতুন আইনে তিনি আবেদন করবেন না। কিন্তু তৃণমূল প্রথম থেকেই আইনটির সমালোচনায় সরব। তার জবাব দিতেই শান্তনু এ বার জানালেন, নাগরিকত্বের জন্য তিনিও আবেদন করবেন। শনিবার বাগদায় দলের কর্মসূচি সেরে শান্তনু বলেন, ‘‘তৃণমূল যে অপপ্রচার করছে, মিথ্যাচার করছে, সেটা যে ঠিক নয়— তা প্রমাণ করতেই আমি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করব। দেখি, আমার কোনও পরিচয়পত্র বাতিল হয় কি না। আমি বে-নাগরিক হয়ে যাই কি না!’’
শান্তনুর কথায়, ‘‘সকলকে বলছি, বাংলাদেশের কোনও নথিপত্র থাকলে আবেদনে জমা দিতে হবে। নথি না থাকলেও সমস্যা নেই।’’ পাশাপাশি, শান্তনুর মতে, জঙ্গি সংগঠনের কাউকে নাগরিকত্ব পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে কি না, তা তো সরকার খতিয়ে দেখবেই। যিনি আবেদন করছেন, তিনি ভাল মানুষ, না কি জঙ্গি— সেটা দেখা হবে।
সিএএ কার্যকর হওয়ার পর থেকে বেশ কিছু প্রশ্নে সংশয় তৈরি হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে এক দিকে কেন্দ্রীয় শাসকদল ও উল্টো দিকে বিরোধীদের লাগাতার প্রচার। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও জানিয়েছেন, যে কোনও মূল্যে এ রাজ্যে সিএএ আটকাতে
তিনি মরিয়া। সিএএ-বিরোধী মিছিলে হেঁটেওছেন।
এই পরিস্থিতিতে গত কয়েক দিন ধরে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায় মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্য হিসাবে কার্ডের জন্য আবেদনের লাইন পড়ছে। শান্তনু শিবিরের মতে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর নিজেও মতুয়া। তিনি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলে মতুয়াদের অনেকেই সে পথে হাঁটতে ভরসা পাবেন।
তবে শান্তনুর এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বনগাঁ কেন্দ্রে এ বারের প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘শান্তনু ঠাকুর নিজে বুঝতে পারছেন, মতুয়ারা এই নাগরিকত্ব চাননি। তাই এখন তিনি বলছেন, নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করবেন। এই কথা বলে শান্তনু আবারও মতুয়াদের ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy