Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪
Visva Bharati

ফেব্রুয়ারির বেতনে হতে পারে দেরি, নোটিসে জানাল বিশ্বভারতী

ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে উপাচার্য বলেছিলেন, অর্থের সঙ্কট চলছে। এ বার রীতিমতো নোটিস দিয়ে সে কথা জানালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

সৌরভ চক্রবর্তী 
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৩
Share: Save:

ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে উপাচার্য বলেছিলেন, অর্থের সঙ্কট চলছে। এ বার রীতিমতো নোটিস দিয়ে সে কথা জানালেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকেলে নিজেদের ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্বভারতী জানিয়েছে, অর্থাভাবের কারণে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দিতে বিশ্বভারতীর দেরি হতে পারে পারে। এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এবং শিক্ষকদের মধ্যে।

ভাষা দিবসে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেছিলেন, ‘‘আমি মনে করি, বিশ্বভারতী এখন অসুস্থ। তাকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে চলতে হচ্ছে।’’ এর পরেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা

দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘বিশ্বভারতীতে অর্থের সমস্যা একটু চলছে। আমরা যারা প্রশাসনিক দায়িত্বে আছি, তারা জানি কী আর্থিক সঙ্কট চলছে।’’

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে বিশ্বভারতীর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হঠাৎ এ রকম আর্থিক দুরবস্থার মুখে পড়ল কেন। তবে, বিশ্বভারতীতে বেশ কিছু দিন ধরেই আর্থিক ঘাটতি চলছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে তাঁদের প্রাপ্য বকেয়া মেটানোর দাবিতে গত বছর কর্মবিরতি এবং অবস্থানে বসেছিল কর্মিসভা। বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, সেই সময় অন্যান্য তহবিল থেকে কর্মী-অধ্যাপকদের বেতন মিটিয়ে দেওয়া হয়।

সে সময়েও কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বেতন ও পেনশন তহবিলে ঘাটতি থাকায় বকেয়া এরিয়ার এখনই মেটানো সম্ভব হবে না। ঘাটতি মিটলে তার ব্যবস্থা করা হবে। ঘাটতি অবশ্য মেটেনি বলেই দাবি করেছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার। তিনি এদিন বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী সত্যিই অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ভাষা দিবসের মঞ্চে উপাচার্য যে বলেছিলেন, বিশ্বভারতী কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের সাহায্যে চলছে, তা সম্পূর্ণ সত্য।’’ তিনি আরও জানান, মাইনে বাবদই মাসে প্রায় ২২ কোটি টাকা খরচ হয়। চলতি মাসে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

যদিও কর্তৃপক্ষের বক্তব্য মানতে নারাজ কর্মী ও শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। কর্মিসভার একাধিক সদস্য এ দিন কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ‘‘দেশের বাজেটে প্রধানমন্ত্রী যেখানে ভারতের অর্থনীতিকে গগনচুম্বী করার কথা বলেন, সেখানে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইনে দিতে না পারা অত্যন্ত লজ্জার। আর এখানে প্রধানমন্ত্রীর যিনি প্রতিনিধি রয়েছেন, তিনিও বিশ্বভারতীর অর্থনীতিকে সামলে রাখতে ব্যর্থ।’’ কর্মিসভার দাবি, মাস কয়েক আগেও যখন এ রকম ঘটনা ঘটেছিল, তখন বিশ্বভারতী যে ভাবে অন্য ফান্ড থেকে বেতনের টাকা মিটিয়েছিল, এ বারও সেরকম করা হোক। মাইনে পেতে সত্যিই দেরি হলে কর্মিসভা তার পরবর্তী পদক্ষেপ করবে বলেও জানিয়েছে। অধ্যাপকদের তরফ থেকেও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করে জানানো হয়, উপাচার্য প্রথমে বললেন বিশ্বভারতী ভেন্টিলেশনে চলে গিয়েছে। তার পরেই বেতনপ্রদানের এই অনিশ্চয়তা, কবে হবে নোটিসে বলাও নেই। আদৌ পাওয়া যাবে কিনা, তা-ও জানা নেই। উপাচার্যের বক্তব্য ও ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে এমন সম্পর্ক কি নেহাত কাকতালীয়?’’

সমস্যা মেটানোর আশ্বাস অবশ্য শোনা গিয়েছে অনির্বাণবাবুর মুখে। তিনি বলেছেন, ‘‘আর্থিক সঙ্কটের সমস্যা মেটাতে উপাচার্য দিল্লি গিয়েছেন। আশা করা যায়, শীঘ্রই কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Visva Bharati Salary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE