সায়নী জানিয়েছেন, তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করবেন তিনি।
শনিবারের পর রবিবারের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে দেখা যাবে না তৃণমূলের যুব সভানেত্রী ঘোষকে। রবিবার তৃণমূলের তরফে ভোট প্রচারকদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে নাম নেই এই অভিনেত্রীর। শুক্রবার অনেক রাত পর্যন্ত জেরার পর বেরিয়ে সায়নী জানিয়েছিলেন, তদন্ত সব রকম সহযোগিতা করবেন তিনি. যত বার ডাকা হবে, তদন্তের স্বার্থে তত বারই আসবেন তিনি। এর পর শনিবার তৃণমূলের প্রচারকদের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল, তাতে নাম ছিল না সায়নীর। আর রবিবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। তাই পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে আর সায়নীকে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ, ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট হলে সে ক্ষেত্রে প্রচার শেষ হবে ৬ এপ্রিল। আর সায়নীকে ৫ জুলাই ফের ইডি জেরার জন্য তলব করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সায়নী আর ভোটের প্রচারে নামতে পারবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূলের অন্দরেই। তবে যদি ভোটের দফা বৃদ্ধি হয়, তা হলে ফের তাঁর প্রচারে নামার সুযোগ থাকছে। কিন্তু, মঙ্গলবার ইডির নোটিস পাওয়ার পর যে ভাবে নিজেকে প্রচার থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন সায়নী, তাতে তিনি আর পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নামবেন কি না, তা নিয়েও থাকছে প্রশ্ন।
তবে শনিবার সায়নী বলেছিলেন, ‘‘আমি যুব সভানেত্রী। আমি প্রচারে যাব না? আমি শিডিউলটা করছি। প্রচার মানে তো অনেকটা দূরত্বেরও বিষয়। এটা তো কলকাতার ভোট না। সবটাই দেখা হচ্ছে। তবে অবশ্যই প্রচারে যাব। দু’এক দিনের মধ্যেই যাব। অনেক কর্মসূচি আছে। একটা রোড শো-এ প্রচুর মানুষ আসেন। ফলে আয়োজন করতে সময় লাগে। সবাই ফোন করছে, ডাকছে সারা ক্ষণ। আমি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চেষ্টা করছি।’’ প্রচার তালিকায় তাঁকে আর রাখা হবে কি না, সেই সংক্রান্ত জল্পনা শনিবার উড়িয়ে দেন সায়নী। তিনি বলেন, ‘‘দল আমার পাশেই আছে। আমি প্রচারেও যাব। মমতাদি আমার ফোনের ওয়ালপেপারে নেই, মনের ওয়ালপেপারে আছেন।’’
মঙ্গলবার সায়নীকে নোটিস পাঠানো হয়। ওই দিন তিনি পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রামে প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। ভোটের প্রচারে থাকাকালীনই ইডির নোটিসের প্রসঙ্গে জানতে পারেন তিনি। ওই দিন রাতে সমাজমাধ্যমে নিজের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে অংশ নেওয়ার ছবিও পোস্ট করেছিলেন সায়নী। বুধবার তাঁর প্রচারসূচি ছিল পূর্ব বর্ধমানে জামালপুর বিধানসভা এলাকায়। কিন্তু বুধবার নোটিসের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সায়নীকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। পূর্ব বর্ধমানের পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারেও যাননি তিনি। বৃহস্পতিবার ইদ উৎসবের কারণে তৃণমূলের তারকা প্রচারকেরা প্রচারে নামেননি। তাই মঙ্গলবারের পর কার্যত বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলেন সায়নী। তারপর তাঁকে দেখা গিয়েছিল শুক্রবার সিজিও কমপ্লেক্সে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বর্তমানে এমনিতেই খানিকটা ‘কোণঠাসা’ তৃণমূল। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব রাজনৈতিক ভাবে বিষয়টির মোকাবিলার চেষ্টা করছেন। সায়নীকে সেই বিষয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি প্রচারে নামলে তার ফল কী হবে, তা নিয়ে খানিক সংশয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব। সে কারণেই শনিবারের তালিকায় সায়নীর নাম রাখা হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে আপাতত তাঁকে আর না-ও রাখা হতে পারে। তৃণমূলের একাংশ আবার বলছে, আগামী বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দেওয়ার আগে সায়নীকে আরও নথিপত্র জোগাড় করতে হচ্ছে। তিনি আগামী কয়েক দিন সেই কাজে ব্যস্ত থাকতে পারেন। তা-ই তাঁকে পঞ্চায়েতের প্রচারে আপাতত রাখা হচ্ছে না। দলের অন্য অংশ যদিও অতি সাবধানী। তাঁরা দেখতে চান রবি, সোম বা মঙ্গলবার সায়নীকে প্রচারে পাঠানো হয় কি না। তার আগে তাঁরা এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন।
ভোটের আগে শেষ রবিবার সব রাজনৈতিক দলের কাছে প্রচারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিন তৃণমূলের সব তারকা প্রচারককে একযোগে ময়দানে নামানো হচ্ছে। সেই তালিকা যেমন রয়েছেন মালদহের সুজাপুরে সভা করবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনি রয়েছেন দলের প্রথম সারির নেতা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিরবাহা হাঁসদা, ইন্দ্রনীল সেন ও তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ প্রমুখ। রুপোলি জগতের তারকাদের মধ্যে প্রচারের জন্য থাকছেন বীরভূমের অভিনেত্রী সাংসদ শতাব্দী রায়, পরিচালক বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও গায়িকা অদিতি মুন্সি প্রমূখ। সেই তালিকাতে রাখাই হল না সায়নীকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy