Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
RSS Annual Report

সঙ্ঘের রিপোর্টে সন্দেশখালি, আহ্বান ‘একজোট’ হওয়ারও

সঙ্ঘের বার্ষিক রিপোর্টে এ বার দেশের বাছাই করা কিছু ঘটনার তালিকায় সন্দেশখালি-কাণ্ডের কথা তুলে ধরে নারীর সম্মান রক্ষায় সব দলের ‘একজোট’ হওয়া উচিত বলে আহ্বান জানানো হল।

Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪ ০৫:১৬
Share: Save:

সন্দেশখালি-কাণ্ডের আবহে সেখানে আরএসএসের (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ) ‘বাসা’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, ওই মন্তব্যের এক মাস পরে প্রকাশিত সঙ্ঘের বার্ষিক রিপোর্টে এ বার দেশের বাছাই করা কিছু ঘটনার তালিকায় সন্দেশখালি-কাণ্ডের কথা তুলে ধরে নারীর সম্মান রক্ষায় সব দলের ‘একজোট’ হওয়া উচিত বলে আহ্বান জানানো হল।

আরএসএসের ২০২৩-২৪ বর্ষের রিপোর্টে ‘জাতীয় চিত্র’ শীর্ষক অংশে সন্দেশখালির ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে লেখা, ‘শত শত মা-বোনেদের, বিশেষ করে তফসিলি ও আদিবাসীদের উপরে অত্যাচার সমাজের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে।... আরও জঘন্য বিষয়, অপরাধীদের কড়া শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে প্রশাসন তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। নারী নিরাপত্তা ও সম্ভ্রমের প্রশ্নে স্বার্থ ভুলে সমস্ত দলের একজোট হওয়া উচিত...।’

গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়া এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকদের উপরে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল গ্রামবাসীর একাংশের বিরুদ্ধে। এর কিছু দিনের মধ্যে মূলত মহিলাদের নেতৃত্বে শুরু হয় সন্দেশখালির আন্দোলন। তার সূত্রেই শাহজাহান-বাহিনীর বিরুদ্ধে নারী ‘নির্যাতন’-সহ নানা অত্যাচারের অভিযোগ সামনে এসেছিল। শাহজাহান-সহ একাধিক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারও করেছিল রাজ্যের পুলিশ। এই প্রেক্ষিতেই বিধানসভায় মমতা দাবি করেছিলেন, “সন্দেশখালিতে শাহজাহানকে ‘টার্গেট’ করে ইডি ঢুকল। সেই নিয়ে গোলমাল করে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের মধ্যে ঝামেলা লাগানো হচ্ছে। ওখানে আরএসএসেরবাসা রয়েছে।”

এই আবহে তাঁদের সংগঠনের রিপোর্টে সন্দেশখালির উল্লেখ কেন, তা নিয়ে সঙ্ঘের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, “সন্দেশখালিতে সামাজিক অপরাধ ঘটেছে, যার নেপথ্যে আছেন রাজনৈতিক মদতপুষ্ট লোকজন। ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও রাজনৈতিক দল দেখে অপরাধ হয়নি। বিরোধীদের সঙ্গে শাসক দলের মহিলা সমর্থকেরাও অত্যাচারিত। তাই এই ঘটনাবলিকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ঠিক নয়।”

সঙ্ঘ সূত্রের বক্তব্য, সন্দেশখালির পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রতিটি দ্বীপ অঞ্চলে বহু বছর ধরেই তারা সক্রিয়। আয়লা ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যয়ের আবহে সেবামূলক কাজের সূত্রে প্রান্তিক এলাকায় সংগঠন বেড়েছে। তবে রাজনৈতিক পরিসরে হস্তক্ষেপ করেনি সঙ্ঘ, দাবি সংগঠনের এক নেতার।

যদিও সন্দেশখালির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের দাবি, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির জন্যই সন্দেশখালিতে উপযুক্ত পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও আন্দোলন দানা বাঁধেনি। এই সত্যিটাই এখন রিপোর্টে নানা কথা বলে আড়াল করতে চাইছে আরএসএস। তাঁর সংযোজন, “ওখানে বিজেপির সংগঠন আগেও ছিল। আমরা আরএসএস-কে বাড়তে দিইনি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে আরএসএস শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছে। মুখ্যমন্ত্রী সেটা ভালভাবেই জানেন।”

তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, “সন্দেশখালিতে মিথ্যার উপরে রাজনীতি করতে চেয়েছে বিজেপি। আরএসএসের উচিত ছিল, বিজেপির স্থানীয় নেতা গঙ্গাধর কয়ালেরসঙ্গে কথা বলে সেখানকার চক্রান্ত সম্পর্কে জেনে নেওয়া!” তবে বিষয়টি নিয়ে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “সঙ্ঘের রিপোর্ট নিয়ে আমার মন্তব্য করার এক্তিয়ার নেই। যা বলার, সঙ্ঘের মুখপাত্রেরা বলবেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

RSS Sandeshkhali Incident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE