ভাঙনের জেরে তলিয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি, চাষের জমি। —নিজস্ব চিত্র।
গঙ্গার পাড়ে ভাঙনের জেরে বিপাকে মালদহের ভূতনি চর এলাকার বাসিন্দারা। তলিয়ে গিয়েছে ঘরবাড়ি, বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। ভাঙনের গ্রাসে নিমেষে উধাও হয়েছে বড় বড় গাছ। এ ভাবেই ভাঙন হতে থাকলে ভূতনির চরের বাঁধও ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। আতঙ্কে ঘুম উড়েছে ভূতনি চরের বাসিন্দাদের। তাঁদের নিরাপদ জায়গায় সরাতে তৎপর হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার বিকেল ৪টে থেকে মালদহের মানিকচকের ভূতনি চরের কেশোরপুর কাল্টুনটোলা এলাকায় নদীপাড়ে ব্যাপক ভাঙন হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে এলাকার বহু ঘরবাড়ি-সহ চাষের জমি। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও স্থানীয়দের মতে, এ ভাবে ভাঙন রোধ করা অসম্ভব। উল্টে এই গতিতে ভাঙন হতে থাকলে গোটা এলাকাই জলের তলায় চলে যাবে বলে আশঙ্কা তাঁদের। ভীম মণ্ডল নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমার ১০ বিঘা জমি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। এলাকার আরও অনেকে ঘরবাড়ি হারিয়েছে। শুধুমাত্র বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোখা যাবে না।’’ একই মত ভোলা মণ্ডল নামে আর এক বাসিন্দার। তাঁর কথায়, ‘‘ভাঙনের আতঙ্কে রাতে ঘুমাতে পারছি না। এখনও পর্যন্ত আমার সাত বিঘা জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। এ ভাবে ভাঙন চলতে থাকলে গোটা ভূতনির চরই তলিয়ে যাবে।’’
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বর্ষার সময় মালদহ অঞ্চলের গঙ্গা অববাহিকা দিয়ে ৪০ লক্ষ কিউসেক জল বয়ে যায়। তবে বেশ কয়েক বছর পর ভূতনির চরের এই এলাকায় ভাঙন ধরল। ভাঙনের জেরে বিপন্ন নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভূতনির বাঁধ ভাঙলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এলাকার প্রায় দেড় লক্ষ বাসিন্দা। জেলাশাসক নীতিন সিংহনিয়া বলেন, ‘‘ভূতনির চরে ভাঙনের খবর পেয়েছি। গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধির কারণে এই ভাঙন। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সেচ দফতরকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
রবিবার রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। ভাঙনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে তিনি বলেন, ‘‘ভূতনির বাঁধ বিপন্ন। এই বাঁধ ভেঙে গেলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হবে। সবই প্রশাসনকে জানিয়েছি। নদী-তীরবর্তী বাসিন্দাদের উচু স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ভাঙন প্রতিরোধের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করছে না কেন্দ্রীয় সরকার। এবং রাজ্য সরকারের একার পক্ষে এই ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এলাকাবাসীর ভরসা এখন ভগবান!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy