গৃহীত হল পানিহাটি পুরসভার পুরপ্রধান মলয় রায়ের পদত্যাগপত্র। পুরসভা সূত্রে খবর, নানা টালবাহানার পর দলীয় নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন মলয়। সেটাই গৃহীত হয়েছে সোমবার। মলয় বলেন, ‘‘আমার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে নতুন পুরপ্রধান নির্বাচন করা হবে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলর সোমনাথ দে-কে চেয়ারম্যান করা হতে পারে।
নাগরিক পরিষেবা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে পানিহাটি পুরসভায় মলয়ের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। পুরসভার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। স্থানীয় অমরাবতী মাঠের বড় অংশ আবাসন প্রকল্পের জন্য বিক্রির পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিতর্কে হস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৮৫ বিঘার ওই মাঠ অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। দলের কাউন্সিলরেরাই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিধানসভা থেকে মলয়কে ফোন করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁকে ইস্তফার নির্দেশ দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছাতেই মলয়কে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই দিন রাতেই চেতলায় পুরমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন মলয়।
ফিরহাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর তাঁর মাধ্যমে মমতাকে একটি চিঠিও মলয় পাঠিয়েছিলেন। চেতলার বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, দলের সর্বোচ্চ নেত্রী যখন চেয়েছেন, তিনি অবশ্যই ইস্তফা দেবেন। যথাসময়ে মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন। কিন্তু তার পরেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও চিঠি পৌঁছোয়নি মহকুমাশাসকের কাছে। মলয়কে চিঠি দিয়ে মহকুমাশাসক আস্থা প্রমাণ করতেও বলেছিলেন। পুরসভা সূত্রে খবর, তার পরেই পদত্যাগপত্র জমা দেন মলয়। সোমবার তা গৃহীত হয়েছে।
পানিহাটি পুরসভার অধীনে মোট ৩৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর মলয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে তৃণমূলের শীর্ষ স্তরে চিঠি দিয়েছিলেন ৩২ জন কাউন্সিলর। পুরসভার বেহাল অবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল ওই চিঠিতে। পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষও সেই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছিলেন। কিন্তু মমতা সে বার মলয়ের পদত্যাগ আটকে দেন। বিধায়ক নির্মলকে ডেকে তিনি মলয়কে না-সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর, এ বার মমতা নিজেই মলয়ের ইস্তফা চান। এ বার পুরসভার দায়িত্ব কে পাবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।