Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Attack on ED officials

সন্দেশখালি এবং বনগাঁতে ঠিক কী হয়েছিল? মঙ্গলেই ইডি ডিরেক্টরকে রিপোর্ট জমা দেবেন তদন্তকারীরা

ইডি ডিরেক্টরের কলকাতায় আসা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। ১৯৯৩ ব্যাচের আইআরএস নবীন ইডি-র বিশেষ অধিকর্তা পদে রয়েছেন গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে।

(বাঁ দিকে) তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে আহত ইডি আধিকারিক। (ডান দিকে) ভেঙে যাওয়া গাড়ি।

(বাঁ দিকে) তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযানে গিয়ে আহত ইডি আধিকারিক। (ডান দিকে) ভেঙে যাওয়া গাড়ি। —ফাইল চিত্র ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৯
Share: Save:

সন্দেশখালি এবং বনগাঁতে ঠিক কী হয়েছিল? রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে গিয়ে কী ভাবে বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল ইডি আধিকারিকের? সেই বিষয়ে বিশদ জানিয়ে মঙ্গলবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) ডিরেক্টর রাহুল নবীনের হাতে একটি রিপোর্ট তুলে দেবেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এমনটাই জানা গিয়েছে ইডির একটি সূত্রে। ইডি সূত্রে খবর, সন্দেশখালি এবং বনগাঁতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে কী ভাবে বাধার মুখে পড়তে হয় ইডি আধিকারিকদের, তা ওই রিপোর্টে বিশদে লেখা থাকবে। মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ কলকাতার ইডি দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন নবীন।

মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতার ইডির পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা নবীনের। একই সঙ্গে রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তকারী আধিকারিক-সহ ওই মামলার সঙ্গে যুক্ত অন্য ইডি আধিকারিকদের সঙ্গেও একটি বিশেষ বৈঠক করার কথা রয়েছে ইডি ডিরেক্টরের। এর পরেই তাঁর হাতে ওই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে বলে ইডি সূত্রে খবর। ইডির পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের খোঁজে নতুন কোনও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলেও জানা যাচ্ছে।

সন্দেশখালি এবং বনগাঁকাণ্ড নিয়ে খোঁজখবর নিতে এবং পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কলকাতায় এসেছেন নবীন। সোমবার মধ্যরাতে কলকাতা পৌঁছন তিনি। গত শুক্রবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে রেশন দুর্নীতির তদন্তে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ইডি আধিকারিকের একটি দল। সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির সামনে গিয়ে তাঁকে ডাকাডাকি করেন ইডি আধিকারিকরা। ভিতর থেকে সাড়াশব্দ না মেলায় দরজা ভাঙার চেষ্টা হয়। ঠিক সেই সময়েই তাঁদের ঘিরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সরিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও। এর পর ইডি আধিকারিকদের ধাওয়া করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করেন শাহজাহানের অনুগামীরা। ভাঙচুর চলে গাড়িতে। সেই সময়েই তিন ইডি আধিকারিক জখম হন। তাঁদের সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা হয়। এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। একই ভাবে পরে বনগাঁতেও ইডির উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেখানে বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে একই মামলায় তল্লাশি চালাচ্ছিল ইডি। দু’টি ঘটনাতেই ইডি রাজ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এর মধ্যে বনগাঁর ঘটনায় ইডির দাবি, পুলিশ সুপারকে আগে থেকে জানানো সত্ত্বেও তিনি বাহিনী পাঠাননি। পাঠালে বনগাঁয় প্রাক্তন পুর প্রধান শঙ্করকে নিয়ে বেরোনোর সময় ইডির উপর হামলার ঘটনা আটকানো যেত। সন্দেশখালিতে অবশ্য তেমন সুযোগ ছিল না। তবে ইডি বলেছিল, এফআইআর করা সত্ত্বেও সন্দেশখালির ঘটনায় এফআইআরের কপি দেয়নি পুলিশ।

শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ইডি আধিকারিকদের একাংশের মতে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারেন ওই তৃণমূল নেতা। এ জন্য তাঁর খোঁজে আইবি এবং বিএসএফের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেও ইডির একটি সূত্রে খবর। ইডির অন্য একটি সূত্র অবশ্য বলছে, সন্দেশখালিতেই কোথাও লুকিয়ে আছেন শাহজাহান। এর মধ্যে শাহজাহানের কণ্ঠে একটি অডিয়ো বার্তা ভাইরাল হয়েছে (তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তাতে বক্তাকে বলতে শোনা যায়, তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হয়েছে। তবে ইডি বা সিবিআইকে নিয়ে যেন তাঁর অনুগামী এবং দলের নেতাকর্মীরা ভয় না পান।

অন্য দিকে, সন্দেশখালিকাণ্ডে এই প্রথম বার মুখ খুলেছেন রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি রাজীব কুমার। সোমবার তিনি বলেছেন, যাঁরা যাঁরা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠিনতম পদক্ষেপ করা হবে। আর যাঁরা আইন ভেঙেছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও। এর মধ্যে ইডি ডিরেক্টরের কলকাতায় আসা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে। ১৯৯৩ ব্যাচের আইআরএস নবীন ইডি-র বিশেষ অধিকর্তা পদে রয়েছেন গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে। তার আগে তিনি ইডি-র সদর দফতরে প্রধান ভিজিল্যান্স অফিসার ছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

ED Attacked in Sandeshkhali ED
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy