রাজসাক্ষী করার প্রস্তুতি চালাচ্ছে সিবিআই। ফাইল চিত্র।
শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে তারা অনেক অভিযুক্তের নাম পেয়েছে, চার্জশিটে নাম থাকলেও তাঁদের সকলকে যে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা নয়। এই অবস্থায় অপরাধের মাত্রা তুলনায় কম, এমন কোনও কোনও অভিযুক্তকে রাজসাক্ষী করার প্রস্তুতি চলছে বলে বৃহস্পতিবার আদালতে জানিয়েছে সিবিআই।
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক এবং ‘গ্রুপ ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় এ দিন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা-সহ ন’জনকে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়। সেখানেই অভিযুক্তদের রাজসাক্ষী করার কথা বলে সিবিআই। তারা জানিয়েছে, অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা খতিয়ে দেখে তবেই রাজসাক্ষী করা হবে। তুলনামূলক ভাবে যাঁদের অপরাধ কম, মূলত তাঁদেরই রাজসাক্ষী করার কথা তাঁরা বিবেচনা করছেন বলে জানান তদন্তকারীরা।
অভিযুক্তদের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা, সঞ্জয় দাশগুপ্ত ও বিপ্লব গোস্বামী এ দিন বলেন, ‘‘নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে সিবিআই যে-চার্জশিট পেশ করেছে, তাতে বেশ কিছু লোককে অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে তাঁদের সকলকে গ্রেফতার না-করে নির্দিষ্ট কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই।’’ ওই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের সার্ভারে ঢুকে মার্কশিট বিকৃত করার অভিযোগ উঠেছে, এমন কয়েক জনের নাম চার্জশিটে থাকলেও তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি।
আইনজীবীদের এই বক্তব্য শুনে বিচারক সিবিআইয়ের আইনজীবীকে ওই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তখনই সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে একটি সংগঠিত অপরাধ চক্রের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। সে-ক্ষেত্রে যাঁদের বিরুদ্ধে জোরালো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু অভিযুক্ত নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকলেও তাঁদের অপরাধের মাত্রা কম অথবা কোনও পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে অপরাধে যুক্ত হয়েছেন। এই ধরনের অভিযুক্তদের আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ে তাঁদের রাজসাক্ষীও করা হতে পারে। সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।’’ এ দিন অভিযুক্তদের তরফে জামিনের আবেদন করা হয়। অভিযুক্ত সুব্রত সামন্ত রায়কে ১৪ জুন এবং বাকি অভিযুক্তদের ১৫ জুন পর্যন্ত জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
ইডি-র অভিযোগ, সুব্রত তাঁর তিন আত্মীয়কে বাঁকা পথে চাকরি দিয়েছেন। বিচারক জানতে চান, ওই তিন জনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে? ওই তিন জনের জন্য সুব্রতকে কত দিন জেলে আটকে রাখা যায়? এ দিন জীবনকৃষ্ণের জামিনের আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘বলা হচ্ছে, জীবনকৃষ্ণ জামিন পেলে সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবেন। জীবনকৃষ্ণের দোষ, তিনি একটি বিধানসভা কেন্দ্রের জনপ্রতিনিধি। জনপ্রতিনিধি বলেই তিনি প্রভাবশালী?’’ এসএসসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আর্জি জানিয়ে তাঁর আইনজীবী বলেন, ‘‘দরকারে সুবীরেশকে গৃহবন্দি করে রাখা হোক। উনি বয়স্ক। তার উপরে অসুস্থ।’’
কলকাতা হাই কোর্ট সম্প্রতি জীবনকৃষ্ণের বেআইনি দলীয় কার্যালয় ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ওই বিষয়ে এ দিন জীবনকৃষ্ণকে আদালত-চত্বরে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বেআইনি হলে অবশ্যই ভাঙবে।’’ তবে ওই কার্যালয়ে তাঁর অফিস ছিল না বলেও দাবি করেছেন জীবনকৃষ্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy