Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Recruitment Scam

‘কালীঘাটের কাকু’-র রহস্যময় ডায়েরি উদ্ধার! সাঙ্কেতিক ভাষায় কার কার নাম লেখা, তদন্তে ইডি

সুজয় এখন জেলে। ডায়েরির নথির ভিত্তিতে সুজয়কে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, সুজয়ের সংস্থায় হাওয়ালার মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা জমা হয়েছিল।

Sujay Krishna Bhadra.

সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। —ফাইল চিত্র।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ০৯:০৪
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে একটি ডায়েরি হাতে এসেছে ইডির। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, নিয়োগ কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির কাছ থেকে ওই ডায়েরিটি উদ্ধার হয়েছে।

এই ডায়েরিটিকে তদন্তের ক্ষেত্রে এবং আদালতে পেশ করা নথির নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ইডির দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে বাজার থেকে তোলা প্রায় ১০ কোটি টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে হাতবদল হয়েছে। সেই টাকার অনেক হিসাবই ওই ডায়েরিতে লেখা রয়েছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। অভিযোগ, ওই ডায়েরিতে সাঙ্কেতিক ভাষায় বেশ কিছু ব্যক্তির নামও লেখা রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, সুজয়-ঘনিষ্ঠ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই সব নামের বিস্তারিত পরিচয় জানা গিয়েছে।

ওই ডায়েরির নথির ভিত্তিতে তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৮ সালের পরে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশের নানা সংস্থায় জমা করা হয়েছিল। পরে ওই সংস্থাগুলির থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে ডায়েরিতে লেখা নথিতে দেখা গিয়েছে। ইডির অভিযোগ, সুজয়ের বিভিন্ন সংস্থায় এই ঋণ নিয়ে তা নির্মাণ ব্যবসা এবং জমি ও সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, এ ভাবে হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার এবং বিদেশ থেকে ওই টাকা সুজয়ের বিভিন্ন সংস্থায় ঋণ বাবদ ফেরত আনার পিছনে সক্রিয় ছিলেন এমন এক যুব নেতা, যিনি পলাতক।

সুজয় এখন জেলে। ডায়েরির নথির ভিত্তিতে সুজয়কে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, সুজয়ের সংস্থায় হাওয়ালার মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা জমা হয়েছিল। একটি সংস্থায় নগদ এক কোটি টাকা জমা হয়। ইডির দাবি, সুজয় তাদের হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তিকে সুজয়ের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়ার বাসিন্দা জেলা পরিষদের সদস্য জ্ঞানানন্দ সামন্ত ও বিষ্ণুপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরা। গত ফেব্রুয়ারি থেকে রাহুলকে নিয়োগ দুর্নীতির সমস্ত নথি ও আর্থিক লেনদেনের খতিয়ান নষ্ট করে দেওয়ার জন্য সুজয় একাধিকবার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে ইডির অভিযোগ।

তদন্তকারীদের দাবি, সুজয় তাঁর চারটি সংস্থা, ১০০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করেছেন। শাসক দলের যুব নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জেল হেফাজতে থাকা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার তথ্য প্রমাণ হাতে এসেছে। বস্তুত, কুন্তলের সূত্রেই সুজয় ওরফে কালীঘাটের কাকুর নাম উঠে এসেছিল।

তদন্তকারীদের দাবি, এর আগে কয়লা পাচারের মামলায় লভ্যাংশের একটি মোটা অংশ হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে পাচার করার অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের যুব নেতা বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে। সেই টাকা পরে প্রভাবশালীদের বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল বলে দাবি করেছে ইডি। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দেশ থেকে পালিয়ে বিনয় বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগরের ভানাটু নামে একটি দ্বীপ রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়েছেন।

ইডির দাবি, এই বিনয়ও সুজয়ের ঘনিষ্ঠ ছিল। তাই, কয়লা পাচারের পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে বিনয়ও জড়িত কিনা, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে ইডি।

অন্য বিষয়গুলি:

Recruitment Scam Sujay Krishna Bhadra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy