গণহত্যায় অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হয়েছে রানা শেখ নামে এক যুবক। শেখলালদের দাবি, কুমাড্ডা গ্রামে সাজিনাদের বাড়ির পাশেই রয়েছে রানার মামারবাড়ি।
সিবিআই দফতরের পথে শেখলাল ও মিহিলাল। মঙ্গলবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম
তাঁর স্ত্রী টিভি ফেটে মারা যাননি। ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন বগটুই-কাণ্ডে নিহত নাজিমা বিবির স্বামী শেখলাল শেখ।
২১ মার্চ রাতের ওই ঘটনার পরদিন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেন, শর্ট সার্কিটে টিভি-তে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লেগেছিল বাড়িতে। মঙ্গলবার সেই দাবি উড়িয়ে শেখলাল বললেন, ‘‘নাজিমা কিন্তু টিভি ফেটে মারা যায়নি।’’ তিনি জানান, হামলাকারীদের আগুনে স্ত্রীর শরীরে নীচের অংশ পুড়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থাতেই ঘণ্টা দেড়েক পরে এক আত্মীয়ার হাত ধরে অন্ধকারে মাঠ পেরিয়ে নাজিমা বিবি পৌঁছেছিলেন কুমাড্ডা গ্রামে, মেয়ে সাজিনার শ্বশুর বাড়িতে। বগটুই গ্রাম থেকে যার দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার। সেই রাতের কথা এখনও ভুলতে পারছেন না শেখলাল।
এ দিন ওই বাড়ির বারান্দায় বসে শেখলাল বলেন, “ভুলতে পারছি না ওই দিনের কথা। নাজিমার কথাগুলো কানে বাজছে!”
সোমবার রামপুরহাট মেডিক্যালে মারা গিয়েছেন নাজিমা। শোকে কার্যত খাওয়াদাওয়া বন্ধ ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা সাজিনার। মাঝেমধ্যে মেয়েকে কেঁদে উঠতে দেখে শেখলাল বলছেন, “আর কাঁদিস না। শরীর খারাপ করবে। উপরওয়ালা বিচার করবেন, সিবিআই বিচার করবে।” শেখলাল জানান, দোকান বন্ধ করে ঘরে এসে শুয়ে ছিলেন। সেই সময় বাইরে হট্টগোল শুনে দেখতে পান অনেক লোকজন ছোটাছুটি করছে। শেখলাল বলেন, “কয়েক জন বলল কাকা তুমি পালাও।” তখন তিনি যেতে না চাইলেও, নাজিমা তাঁকে চলে যেতে বলেন। তার পরেই তিনি ও ছেলে আব্দুল আজিজ মাঠ পেরিয়ে চলে যান কুমাড্ডা গ্রামে।
ওই দিন নাজিমার সঙ্গে বাড়িতে ছিল তাঁদের আত্মীয় এক নাবালক। সে এ দিন বলে, “বাড়ির লোহার দরজা আটকানোর পরেও জেঠিমা পিঠে হেলান দিয়ে আটকে বসেছিলেন। আর আমরা সব ঘরে ঢুকে ছিলাম।” ওই নাবালক ও নাজিমা, দু’জনেই হামলায় পুড়ে যান। শেখলাল জানান, রাত ১২টা নাগাদ এক বন্ধুর মাধ্যমে পুলিশকে খবর পাঠান তিনি। এর পরে পুলিশ কুমাড্ডা গ্রামে এসে নাজিমা বিবিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
গণহত্যায় অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হয়েছে রানা শেখ নামে এক যুবক। শেখলালদের দাবি, কুমাড্ডা গ্রামে সাজিনাদের বাড়ির পাশেই রয়েছে রানার মামারবাড়ি। রানার মামা মনিরুল শেখ বলেন, “২৩ মার্চ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, বাড়ির দরজার সামনে রানার মোটরবাইক, টোটো আর ওর বাবার টোটো রাখা। কী ব্যাপার জানতে ফোন করলেও মোবাইল বন্ধ ছিল।”
শেখলালের ছেলে আজিজের আক্ষেপ, ‘‘রানার সঙ্গে স্কুলে যেতাম। মাস পাঁচেক আগেও একসঙ্গে ঘুরেছি। সেই রানাই আমাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল!’’ তাঁর দাবি, নিহত উপপ্রধান ভাদু শেখের দলে ভিড়ে যাওয়া ইস্তক রানার চালচলন বদলে যায়। হুমকি দিত যখনতখন।’’
পাশ থেকে শেখলাল বলে উঠলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটই তো দিতে পারিনি! সকলে ভোট দিতে পারলে ভাদু কিন্তু জিততে পারত না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy