Advertisement
E-Paper

সংবিধান কি অম্বেডকরের, উপাচার্যের দাবিতে জলঘোলা

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪০
Share
Save

সংবিধান লিখেছেন বি আর অম্বেডকর, এটা সত্যি নয়।— রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় এমনই মন্তব্য করেছেন। এর পরেই বিজেপি-যোগের কথা বলে ‘ইতিহাস বিকৃতি’র অভিযোগে সরব হয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধী সিপিএম। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিট সোমবার ‘ধিক্কার মিছিল’ও করেছে।

প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন, রবিবার উপাচার্য তথা কর্নাটক হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি শুভ্রকমল বলেছেন, “অম্বেডকর সংবিধান লিখেছেন, এর থেকে বড় মিথ্যা কিছু নেই! সংবিধান খসড়া কমিটিতে ৭ জন ছিলেন। প্রথম খসড়াটি লিখে কমিটিতে জমা দিয়েছিলেন বেনেগাল নরসিংহ রাও।” অম্বেডকরকে চেয়ারম্যান করার ‘কারণ’ প্রসঙ্গে উপাচার্যের দাবি, “কমিটির ৭ জন মিলে ঠিক করলেন, অম্বেডকরকে চেয়ারম্যান করা হবে। অম্বেডকরের পদবি নিজস্ব নয়। উনি অন্ত্যজ পরিবার থেকে এসেছিলেন। একটি ব্রাহ্মণ পরিবার ওঁকে দত্তক নেয় এবং নিজেদের পদবি দেয়। অম্বেডকরকে চেয়ারম্যান করা হয়েছিল, কারণ এঁরাই (দলিতেরা) ফাঁপরে পড়েন। তাই এঁদেরই চেয়ারম্যন করা হয়েছিল!”

উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে অতীতে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে বার বার সংঘাত বেধেছিল রাজ্যের। শুভ্রকমলকে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন বোসই। শুভ্রকমলকে ‘বিজেপির নিয়োগ করা’ বলে অভিযোগ তুলে তৃণমূলের মুখপাত্র তন্ময় ঘোষের বক্তব্য, “বিচারপতি থাকাকালীন উনি স্বাধীনতা সংগ্রামে টিপু সুলতানের ভূমিকা অস্বীকার করেছিলেন। বিজেপি-আরএসএসের ইতিহাস-বিকৃতি সহ্য করা হবে না।” এই প্রশ্নে মুখ খোলেননি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তবে বিষয়টি নিয়ে ইতিহাসবিদ অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত, “অম্বেডকর সংবিধানের মৌলিক প্রবক্তা। পরে অনেক বারই তা সংশোধন হয়েছে। অম্বেডকরকে দত্তক নেওয়ার বিষয়টি ইতিহাস বিকৃতির শামিল। স্কুল-জীবনে তিনি উচ্চবর্ণের এক শিক্ষকের স্নেহধন্য ছিলেন।” সেই সঙ্গে আইন, অর্থনীতি এবং সংস্কৃত ভাষায় অম্বেডকরের বিশেষ অধিকারের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অরুণ। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সৃজন ভট্টাচার্যেরও মন্তব্য, ‘‘পিছনের দরজা দিয়ে যিনি পদে এসেছেন, তিনি এই ভাবেই অমিত শাহদের তুষ্ট করতে চাইছেন। সংবিধান রচনা, পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য অম্বেডকরের ভূমিকা সব কিছুকেই নস্যাৎ করার এই চেষ্টা যাঁরা করছেন, তাঁদের মূর্খ না শয়তান বলা উচিত, জানি না!’’

যদিও বিতর্কের মুখেও উপাচার্যের দাবি, “সত্যিটাই বলেছি। অম্বেডকর সংবিধান রচনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, আদৌ পুরো সংবিধান লেখেননি। প্রমাণ করুন, ভুল বলছি! ভুল বললে ক্ষমা চেয়ে নেব। আমি ইতিহাস বলেছি। সেই সময়ে এক জন দলিতের এত লেখাপড়া করার সুযোগ ছিল না। উচ্চবর্ণের পরিবার ওঁকে দত্তক নেওয়ায় তা সম্ভব হয়েছিল।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rabindra Bharati University

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}