থাকুন: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরীকে পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন পড়ুয়ারা। শনিবার ক্যাম্পাসে। ছবি: সুমন বল্লভ
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বসন্তোৎসবে ‘অশ্লীলতা’ বিতর্কের জেরে শুক্রবার রাতে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী। শিক্ষামন্ত্রী এবং উচ্চশিক্ষা সচিবের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছিলেন। তবে সেই পদত্যাগপত্র গৃহীত না-হওয়ায় স্বপদেই বহাল থাকছেন তিনি। শনিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, সব্যসাচীবাবুর ইস্তফা গ্রহণ করা হবে না। সকালে উপাচার্যকে ফোনে ইস্তফা দিতে নিষেধ করেন তিনি। বিকেলে ই-মেলও করেন। তার পরেই উপাচার্য তাঁর সিদ্ধান্ত বদল করেন।
ইস্তফার কথা জানালেও এ দিন সকালেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন সব্যসাচীবাবু। সূত্রের খবর, উপাচার্যের জন্য বরাদ্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চেপে তিনি আসেননি, নিজের ঘরেও ঢোকেননি। এ দিন স্নাতকোত্তর স্তরের কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। তিনি সেগুলি তদারক করেন। তবে সিদ্ধান্ত বদলের পরে বিকেলে তিনি নিজের ঘরে ঢুকেছেন।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি টি রোড ক্যাম্পাসে (মরকতকুঞ্জ) বৃহস্পতিবার বসন্তোৎসবে যোগ দেওয়া এক দল তরুণ-তরুণী নিজেদের বুকে ও পিঠে আবির দিয়ে ‘চাঁদ উঠে ছিল গগনের’ রবীন্দ্রসঙ্গীতের পংক্তির কদর্য বিকৃতি করেছিলেন। এ ছাড়াও আরও কিছু ‘অশালীন’ ও ‘কুরুচিকর’ শব্দ লিখেছিলেন এবং সেই সব ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষা প্রাঙ্গণে এমন কদর্য রুচি এবং রবীন্দ্রনাথের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রবি-দূষণের এমন বিতর্ক উঠতেই ইস্তফার কথা জানান উপাচার্য। এ দিন সকালে তিনি বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ছাত্রছাত্রী জড়িত নয়। কিন্তু তা হলেও ঘটনা ঘটেছে। উপাচার্য হিসেবে দায় এড়াতে পারি না। সেই কারণেই ইস্তফা পত্র পাঠিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: দোলে থাকবেন দিলীপ
উপাচার্যের ইস্তফার ব্যাপারে এ দিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘উপাচার্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁকে বলেছি, যা হয়েছে সে তো একটা ব্যাধি! এর নৈতিক দায়িত্ব আপনার একার কেন হবে? আপনি কাজ চালিয়ে যাবেন।’’ তিনি জানান, উপাচার্য দায়িত্ব পালন করে ব্যবস্থা নিয়েছেন। পুলিশকে জানিয়েছেন। তারা ব্যবস্থা নেবে।
উপাচার্যকে ইস্তফা ফেরানোর আর্জি জানিয়ে এ দিন ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছিলেন পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডের কোনওটিতে উপাচার্যকে তাঁদের অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করা ছিল, কোনওটিতে উপাচার্যকে তাঁদের পাশে থাকার আর্জি ছিল। সে সব দেখে সব্যসাচীবাবু পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘তোমাদের এই চাওয়ায় আমি অভিভূত। তোমরা এখন ফিরে যাও। মন দিয়ে লেখাপড়া করো। আমি তোমাদের কথা ভেবে দেখব।’’ ঘটনাচক্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (আরবুটা) শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, সব্যসাচীবাবু উপাচার্য পদ থেকে ইস্তফা দিলে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেবেন। আরবুটার সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাস উপাচার্যের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে কথাও বলে ইস্তফা না-দেওয়ার অনুরোধ করেন। দেবব্রতবাবু বলেন, ‘‘উপাচার্য তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন, এ খুবই আনন্দের বিষয়। কিন্তু কেন তিনি ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন তা-ও সামনে আসা প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy