Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Ration Distribution Case

বাকিবুর-কাণ্ডে নয়া মন্ত্রী-যোগ

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর এক আপ্ত সহায়কের মোবাইলের তথ্য উদ্ধারের পরে ওই মন্ত্রী-সহ একাধিক প্রভাবশালীর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়ের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে।

bakibur

বাকিবুর রহমান। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৫৪
Share: Save:

রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় ধৃত বাকিবুর রহমানের সঙ্গে শুধুমাত্র প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বা বালু নন, আরও এক মন্ত্রীর ‘ঘনিষ্ঠতার’ প্রাথমিক তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি ইডি সূত্রের।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, দুর্নীতির কালো টাকা বিভিন্ন সম্পত্তি, জমি, হোটেল এবং পানশালায় বিনিয়োগ করেছিলেন বাকিবুর। আইনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর সংলগ্ন হোটেল, কৈখালির পানশালা এবং বাড়ির জমি পেতে ওই মন্ত্রীর সঙ্গে ‘টাকার লেনদেন হয়েছে’ বলে অভিযোগ ইডি সূত্রের। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ওই মন্ত্রীর দফতরেও বাকিবুরের যাতায়াত ছিল এবং অধিকাংশ সময় ‘অ্যান্টি-চেম্বারে’ বাকিবুরের সঙ্গে বৈঠক করতেন মন্ত্রী।

ইডি-র অভিযোগ, এক দিকে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে এক শ্রেণির ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা লুট করেছেন বাকিবুর। অন্য দিকে ওই কালো টাকার একাংশ দ্বিতীয় ওই মন্ত্রীর মাধ্যমে বিভিন্ন সম্পত্তিতে তিনি বিনিয়োগ করেছিলেন বলে ইডি সূত্রের অভিযোগ। তদন্তকারীদের সূত্রে এ-ও অভিযোগ, জ্যোতিপ্রিয়ের সুপারিশে, ‘মোটা টাকার বিনিময়ে বাকিবুরকে জমি লিজ় দিয়ে’ সাহায্য করেছিলেন ওই মন্ত্রী।

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর এক আপ্ত সহায়কের মোবাইলের তথ্য উদ্ধারের পরে ওই মন্ত্রী-সহ একাধিক প্রভাবশালীর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়ের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। বাকিবুর ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে ওই আপ্ত সহায়কের মোবাইল ফোন থেকেই জ্যোতিপ্রিয় অধিকাংশ সময় কথা বলতেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।

তদন্তকারীদের সূত্রে আরও দাবি, ওই আপ্ত সহায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করে জ্যোতিপ্রিয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন আরও দু’টি সংস্থার হদিস পাওয়া গিয়েছে। এর আগে জ্যোতিপ্রিয় ও বাকিবুরের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈরি তিনটি সংস্থার হদিস পাওয়া গিয়েছিল। ইডি সূত্রের দাবি, ওই দু’টি সংস্থা জ্যোতিপ্রিয়ের হয়ে দেখভাল করতেন তাঁর এক ঘনিষ্ঠ হিসাবরক্ষক এবং ওই দু’টি সংস্থার মাধ্যমে রেশন দুর্নীতির কালো টাকার লেনদেন হত। ওই হিসাবরক্ষক ওই দু’টি সংস্থার ‘ডামি ডিরেক্টর’ ছিলেন বলেও অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শান্তনু ভট্টাচার্য নামে এক হিসাবরক্ষকের (নেতাজিনগরের বাসিন্দা) ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানো হয়। সম্প্রতি ওই হিসাবরক্ষক কলকাতার বাইরে ছিলেন। তাঁকে তলব করা হয়েছিল। এ দিন বিকেলে ফেরার পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।

জ্যোতিপ্রিয়ের পরিবারের সদস্যদের ব্যাঙ্কের লকারেও তল্লাশি করা হবে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি অনুযায়ী, আপাতত ওই সদস্যদের দু’টি লকারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এবং চাবি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

এ দিকে জ্যোতিপ্রিয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে যে আর্জি কমান্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, তাতে সাড়া দেয়নি কলকাতা হাই কোর্ট। ফলে কোর্টের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত মন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা কমান্ড হাসপাতালেই হতে পারে।

বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি মধুরেশ প্রসাদ জানান, কমান্ড হাসপাতাল যে আপত্তি জানিয়েছে, ইডি-র বক্তব্য জানার পরেই তা বিবেচনা করা হবে। হাসপাতালের আইনজীবী বলেন, ‘‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরই এই হাসপাতালে চিকিৎসা হয়। বাইরের রোগী এলে বাড়তি চাপ পড়ে।’’ ইডি-র আইনজীবী জানান, কেন্দ্রের দুই সংস্থা একে অপরের বিরুদ্ধে কোর্টে আসতে পারে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Bakibur Rahman Jyotipriya Mallick TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE