খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে প্রায় ১৯ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি-জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা রাতে বেরোনোর পর খাদ্যমন্ত্রী রথীন সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, তিনি তদন্তে সাহায্য করেছেন। ইডি যাতে সুষ্ঠু ভাবে এই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, তার জন্য আধিকারিকদের একটি বইও উপহার দিয়েছেন তিনি।
পুর-নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এই প্রথম রাজ্যের কোনও মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করল ইডি। রথীন মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান। প্রায় এক দশক ওই পদে ছিলেন তিনি। সেই সূত্রে পুর-নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁকে প্রশ্ন করা প্রয়োজন ছিল বলে ইডি সূত্রে দাবি। বৃহস্পতিবার কাকভোরে মধ্যমগ্রামের মাইকেলনগরে রথীনের বাড়িতে হাজির হয় ১০ জন তদন্তকারী অফিসারের দল। সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী। মন্ত্রীকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রাত পর্যন্ত। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, পুর-নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত এবং স্কুলে নিয়োগ মামলায় ধৃত প্রোমোটার অয়ন শীলের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে রথীনের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে।
ইডির হানা নিয়ে শুক্রবার রথীন জানান, ইডি আধিকারিকেরা তাঁর বাড়ি থেকে একটি ল্যাপটপ এবং দু’টি মোবাইল নিয়ে গিয়েছেন। তিনিও চান, দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। মন্ত্রী আবারও বলেন, ‘‘পুরসভায় নিয়োগ কী ভাবে হয়, সেটা বুঝতে পারছেন না ই়ডি আধিকারিকেরা। ওঁদের বোঝায় কিছু গোলযোগ ছিল। সেই জন্য ওদের একটা বই উপহার দিয়েছি। ওই বইটা পড়লে পুর-নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে সুবিধা হবে ইডি আধিকারিকদের।’’
প্রসঙ্গত, স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে যে তদন্ত ইডি এবং সিবিআই করছে, সেই মামলাতেও অয়ন অন্যতম অভিযুক্ত। বস্তুত সেই মামলার সূত্রেই অয়নের সল্টলেকের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে তদন্তকারীরা প্রথম রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নয়ছয়ের আঁচ পান। ওই হানার পরে ইডি সূত্রে দাবি, অয়নের সংস্থার মাধ্যমে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনার ছ’টি পুরসভা-সহ রাজ্যের প্রায় ৫০টির বেশি পুরসভায় বাঁকা পথে কয়েক হাজার মজুর, কম্পিউটার অপারেটর এবং অন্যান্য কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে এফআইআর দায়ের করে পুর-নিয়োগ সংক্রান্ত তদন্ত প্রথম শুরু করে সিবিআই। পরে ইডি-ও তদন্ত শুরু করে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, একাধিক মন্ত্রী, প্রভাবশালী নেতা এবং সরকারি আধিকারিকের এই বেআইনি নিয়োগে জড়িত থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। ইডির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জেলে গিয়ে এ বিষয়ে একাধিক বার জেরাও করা হয়েছে অয়নকে। তাতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে বলে তাঁর দাবি।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর বাড়িতে হাজির হওয়ার পাশাপাশি, ইডি আধিকারিকেরা পৌঁছে গিয়েছিলেন নগরোন্নয়ন দফতর, দক্ষিণ দমদম পুরসভা, কামারহাটি পুরসভা, বরাহনগর পুরসভা, টিটাগর পুরসভার বিভিন্ন কর্তা, প্রাক্তন কর্তা, চেয়ারম্যান, চেয়ারপার্সন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কাউন্সিলরের বাড়িতে। সকাল থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন জায়গায় টানা জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলেছে সন্ধ্যা গড়িয়ে যাওয়ার পরেও। দক্ষিণ দমদম এবং কামারহাটি পুরসভার অফিসেও হানা দিয়েছে ইডি। প্রত্যাশিত ভাবেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy