Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
পকসো মামলায় বেকসুর

ধর্ষক কে, ‘চিনতেই পারে না’ নাবালিকারা!

২০১৭ থেকে ওই আদালতে পকসো আইনে যে ২০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে, প্রতিটিরই একই পরিণতি। কাউকেই সাজা দেওয়া যায়নি। আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, চূড়ান্ত শুনানিতে এজলাসে নাবালিকারা বলেছে, ধর্ষণকারীকে তারা চিনতে পারছে না।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৮ ০৪:০৮
Share: Save:

নাবালিকা ধর্ষণের অভিযোগ হচ্ছে। অভিযুক্তেরা ধরা পড়ছে। চার্জশিট হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেকসুর খালাসও হয়ে যাচ্ছে।

এমনই চলছে উলুবেড়িয়া আদালতে। ২০১৭ থেকে ওই আদালতে পকসো আইনে যে ২০টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে, প্রতিটিরই একই পরিণতি। কাউকেই সাজা দেওয়া যায়নি। আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, চূড়ান্ত শুনানিতে এজলাসে নাবালিকারা বলেছে, ধর্ষণকারীকে তারা চিনতে পারছে না।

কেন এমন হচ্ছে? হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পু‌লিশকর্তাদের একাংশ জানান, প্রলোভন দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে গরিব পরিবারগুলিকে মামলা থেকে সরে আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। সমাজকর্মী মীরাতুন নাহার বলেন, ‘‘নিগৃহীতারা সাধারণত গরিব ও নিপীড়িত শ্রেণির। অভিযুক্তেরা তুলনায় প্রভাবশালী। চাপের কাছে হার মানছে তারা।’’ জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার গৌরব শর্মার কথায়, ‘‘যখন বুঝি, ভুক্তভোগী পরিবারগুলি চাপে নতিস্বীকার করতে চাইছে, বোঝানোর চেষ্টা করি তাদের। ফল হয় না।’’ এ ক্ষেত্রে সরকারের সক্রিয় হওয়া উচিত বলে মত পুলিশ এবং আইনজীবীদের একাংশের। এই আদালতের ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক খায়রুল বাশার বলেন, ‘‘ধর্ষিতাকে চিকিৎসা বা বিয়ের খরচ দিয়ে মামলা তোলানোর চেষ্টা হয়। সরকার ফাঁকটি পূরণ করতে পারে আর্থিক সহায়তা দিয়ে।’’

আরও পড়ুন: ‘এ ভাবে প্রাণটা চলে গেল?’, ডুকরে উঠলেন মনীষার মা

২০১৭ সালের গোড়া থেকে উলুবেড়িয়া আদালতে পকসো আইনে নাবালিকা ধর্ষণের বিচার শুরু হয়। এ পর্যন্ত রুজু হওয়া ১৫৪টি মামলার অধিকাংশেই অভিযুক্তেরা ধরা পড়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষা, গোপন জবানবন্দি, চার্জশিট হয়েছে। যে ২০টি মামলায় অভিযুক্তেরা বেকসুর খালাস পেয়েছে, সেগুলিতে কী হয়েছিল?

পুলিশ জানিয়েছে, চার্জ গঠনের পরে চূড়ান্ত সাক্ষ্যগ্রহণের সময়ে আদালতে অভিযোগকারিণী বেঁকে বসে। বলে, সে অভিযুক্তকে চিনতে পারেনি। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে চাপ দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়। সরকারি আইনজীবী নবেন্দু দে বলেন, ‘‘প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগকারীকে বিরূপ ঘোষণা করে ফের শুনানিতে হাজির করাই আমরা। তার পরেও এফআইআর এবং বিচারককে দেওয়া গোপন বয়ান থেকে সে সরে আসে। ধর্ষণের কথা স্বীকার করেও এজলাসে চিনতে চায়নি অভিযুক্তকে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Rape POCSO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy