Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

রাণুর জন্য এল মটন বিরিয়ানি

ওঁদের গলায় সুর ছিল। কিন্তু ভাগ্য ছিল না সঙ্গে। দুর্ভাগ্যের স্রোতে তাঁরা ঠোক্কর খেয়ে বেরিয়েছেন ইতিউতি। মেলেনির প্রতিভার স্বীকৃতি। এমন কয়েক জনকে খুঁজে পেল আনন্দবাজার।গান শোনার আবদার নিয়ে অনেকেই এসেছেন। যার জেরে গলার উপরে বেশ চাপ পড়ছে গত ক’দিন ধরে। অবস্থা এমন যে, মাঝে মধ্যে কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে রাণুর। 

গান শোনালেন রাণু। নিজস্ব চিত্র

গান শোনালেন রাণু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০৪:১৮
Share: Save:

রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে কেউ মোটরবাইক থামিয়ে জানতে চাইছেন তিনি কেমন আছেন। আবার, কেউ এসে জানতে চাইছেন— গান গাইতে কবে বাইরে যাবেন। গানের ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রাতারাতি এলাকায় বিখ্যাত হয়ে গিয়েছেন বেগোপাড়ার রাণু মারিয়া মণ্ডল।

শুক্রবার তাঁর জন্য এসেছে মটন বিরিয়ানি-চিকেন চাপ। এলাকার এক যুবক এই খাবার তাঁর হাতে তুলে দিয়ে গিয়ে বলেছেন— ‘‘আজ এটা খেয়ে নিয়ো।’’

গান শোনার আবদার নিয়ে অনেকেই এসেছেন। যার জেরে গলার উপরে বেশ চাপ পড়ছে গত ক’দিন ধরে। অবস্থা এমন যে, মাঝে মধ্যে কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে রাণুর।

ব্যাকরণ মেনে গান শেখেননি, জানাচ্ছেন রাণু। তাই তাঁর কোনও গানের গুরুও নেই। রেডিয়ো আর টেপ রেকর্ডার থেকেই যাবতীয় গান শেখা। রাণুর পছন্দের তালিকায় একদম প্রথমে লতা মঙ্গেশকরের নাম থাকলেও পছন্দ করেন মহম্মদ রফি, অলকা ইয়াগ্নির গান।

কয়েক দিন আগে রানাঘাট স্টেশনের এক যাত্রী তাঁর গান রেকর্ড করে ফেসবুকে দেন। তার পর থেকে রাণু রানাঘাটের পরিচিত নাম।

রানাঘাট থানার বেগপাড়ার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে খানিক দূরেই রাণুর মাসির বাড়ি। সেখানে রাণু একাই থাকেন। মাঝে মাঝে কলকাতা থেকে মাসি আসেন তাঁকে দেখতে। দিন দুয়েক আগেই তিনি এক বার ঘুরে গিয়েছেন। রাণু আপন খেয়ালে থাকেন। ইচ্ছা হলে কোনও দিন রাতে বাড়ি ফেরেন। আবার, কোনও কোনও দিন ঘরের বাইরেই কেটে যায়। কোনও ভাবে লোকজনের থেকে চেয়েচিন্তে চালাচ্ছেন জীবন। তবে চাহিদা খুব সামান্যই। দশ-কুড়ি টাকা।

ঘরে একা-একা ভাল না লাগলে রাণু চলে যান রানাঘাট স্টেশনে। গান করেন। তাঁর পাশ দিয়ে চলে যান ব্যস্ত ট্রেনযাত্রীরা। কেউ আবার গান শুনে থমকে দাঁড়ান। রাণুর গান থামে না।

রানাঘাট স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাগজ-বিক্রেতা মানিক লাল আচার্য বলেন, “শুধু গান গাওয়া নয়, খবরের কাগজ পড়ার প্রতিও ওঁর আগ্রহ আছে। মাঝে মাঝেই বাংলা কাগজ কিনে নিয়ে যান। আবার কখনও এসে বলেন— টাকা দাও, খাব। কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন না।”

বেগোপাড়া জাতীয় সড়কের ধারেই রয়েছে ‘আমরা সবাই’ ক্লাব। তার সদস্যদের সঙ্গে রাণুর খুব ভাব। বছর পঞ্চাশ পার করে আসা রাণু তাঁদের কারও দিদি, আবার কারও পিসি। ক্লাব সদস্যদের দাবি, এর আগে তাঁরা রাণুর গান সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছিলেন। তবে এ বারের ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা তপন দাস, উজ্জ্বল মণ্ডল, রূপেশ মণ্ডলেরা বলছেন, “রানু দিদি আমাদের সকলের খুব প্রিয়।” আর রাণু এক গাল হেসে বলছেন, “আমি দিল্লিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গেয়েছি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Ranu Maria Mandal Viral Ranaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy