নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগটুইয়ের অনেক বাসিন্দা বলছেন, যখন একের পর বাড়িতে আগুন জ্বলছিল, তখন পুলিশ কোথায় ছিল? রাতে কেন পুলিশ সেখানে যায়নি? তাঁদের মতে, পুলিশ বুঝতেই পারেনি এমন কিছু ঘটতে পারে।
ছবি পিটিআই।
বগটুই গ্রামে একাধিক আগুন লাগার ঘটনায় এবং অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৮ জনের মৃত্যুর পরে বীরভূম জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এবং প্রশ্ন উঠেছে বলেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রামপুরহাট থানার আইসি ত্রিদীপ প্রামাণিক এবং এসডিপিও সায়ন আহমেদকে। রাজ্য পুলিশের ডিজি নিজেও এ দিন কলকাতায় সে-কথা জানিয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় বগটুই মোড়ের কাছে একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান নেতা ভাদু শেখ। সেই সময় তাঁকে বোমা মেরে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই গ্রামের সাত-আটটি বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ডিজি নিজেও এ দিন মেনেছেন, যা ঘটেছে, উপপ্রধান খুন হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগটুইয়ের অনেক বাসিন্দা বলছেন, যখন একের পর বাড়িতে আগুন জ্বলছিল, তখন পুলিশ কোথায় ছিল? রাতে কেন পুলিশ সেখানে যায়নি? তাঁদের মতে, পুলিশ বুঝতেই পারেনি এমন কিছু ঘটতে পারে। শাসকদলের উপ-প্রধান খুনের পরে গ্রাম অশান্ত হতে পারে, সেই সম্ভাবনার কথা কি পুলিশ আদৌ মাথায় রাখেনি, ঘটনা মোকাবিলায় পুলিশের ভূমিকা কী ছিল— এ প্রশ্নও উঠছে। উল্লেখ করার মতো বিষয়, ঘটনাস্থলের সঙ্গে এসডিপিও-র আবাসনের দূরত্ব সামান্যই। ফলে, এত বড় ঘটনা ঠেকাতে কেন ‘ব্যর্থ’ হল পুলিশ, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। ভাদু শেখের মৃত্যুর পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল পুলিশ। অথচ ঘটনাস্থল থেকে মাত্র এক-দেড় কিলোমিটার দূরে বগটুইয়ের পূর্বপাড়ায় (ভাদু শেখের বাড়ি) তারা যায়নি। কেন যায়নি, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
গত বছর গুলি করে খুন করা হয়েছিল ভাদু শেখের দাদা বাবর শেখকে। সেই খুনে যারা অভিযুক্ত ছিল, সোমবার ভাদু-খুনে অভিযুক্ত তাদের অনেকেই। তাদের বাড়ি বগটুই গ্রামেই। এই নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ থেকে অভিযুক্তদের পরিবারের উপরে ‘হামলা’ হতে পারে, সেটা বুঝতেই পারেনি পুলিশ। যদিও ‘হামলা’ বা আগুন লাগানোর লিখিত অভিযোগ হয়নি। কিন্তু, ঘটনা হল, পরের পর বাড়িতে আগুন লেগেছে এবং একটি বাড়ি থেকেই সাত জনের পুড়ে কাঠ হয়ে যাওয়া দেহ মিলেছে। একটা খুনের মাত্র এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে এতগুলি মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই রাঠগড়ায় রামপুরহাট থানার ভূমিকা। জেলা পুলিশেরই একটি বিশ্বস্ত সূত্রে বলছে, ভাদুকে খুনে অভিযুক্তদের খোঁজে এতটাই ব্যস্ত ছিল পুলিশ, যে গ্রামটা কার্যত ‘অরক্ষিত’থেকে গিয়েছিল। পুলিশ ও দমকল পৌঁছয়, ততক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। এক বাড়িতেই পড়ে আছে ৭ জনের লাশ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy