পুড়ে যাওয়া গাড়ি। শুক্রবার শ্যামনগর ওয়েভারলি জুটমিলে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
বকেয়া না-পেয়ে শ্রমিক অসন্তোষ দানা বাঁধছিল অনেক দিন ধরেই। শুক্রবার সকালে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস পড়ায় উত্তেজনা ছড়াল শ্যামনগর ওয়েভারলি জুটমিলে। আচমকাই কর্মহীন হয়ে পড়েন মিলের হাজার তিনেক শ্রমিক। উত্তেজিত কিছু শ্রমিক এ দিন কারখানার অফিসার-কর্মীদের আবাসনে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালান। বাকিরা প্রাণভয়ে পালান। দু’টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া
হয়। চটকলের ভিতরেও ঢুকেও ভাঙচুর করা হয়। ঘোষপাড়া রোড অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে তারা।
ওয়েভারলি জুটমিল দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। ২০১১ সালে মালিকানা হাতবদল হয়। কারখানার বিজেপি ইউনিয়নের নেতা অজয় রায় বলেন, ‘‘প্রথম তিন বছর মিল ভাল ভাবেই চলেছিল। তার পর থেকেই শুরু হয় গোলমাল।’’ তাঁর অভিযোগ, শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা পড়া বন্ধ হয়ে যায়। অবসরের পরে গ্র্যাচুইটির টাকা বাকি পড়তে থাকে। বছর দু’য়েক আগে থেকে শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরিও অনিয়মিত হয়ে পড়ে। তৃণমূল ইউনিয়নের নেতা প্রতীক সোনার বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, পিএফের প্রায় ১৭ কোটি টাকা বাকি পড়েছে।’’
শ্রমিকেরা জানান, ২৮ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিলেন, চটকল এখন থেকে ভাল ভাবে চালানো হবে। কিন্তু ঠিক তার পর দিনই কারখানার গেটে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝোলানো হয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি ফের খোলে কারখানা। কিন্তু যন্ত্রাংশ এবং কাঁচামাল না-থাকায় উৎপাদন চালু হয়নি। শ্রমিকেরা বকেয়া মজুরিও পাননি। এরই মধ্যে শুক্রবার ভোরে তাঁরা দেখেন, কারখানার গেটে নোটিস ঝুলছে। এর পরেই শুরু হয় গোলমাল। দলে দলে লোক ঢুকে কারখানা, আবাসনে ভাঙচুর, তাণ্ডব শুরু করে। বাসিন্দারা প্রাণভয়ে পালান।
আরও পড়ুন: তারকা হোটেলে মদ সারা রাতই, ছাড় নবান্নের
কারখানার জেনারেল ম্যানেজার অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি আমরা। যদি পালিয়ে না যেতাম, আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত। পুলিশ ঠিক সময়ে না এলে মিলেরও আরও ক্ষতি হত।’’ তিনি জানান, চটকলের আর্থিক অবস্থা খারাপ বলেই পিএফ, মজুরি এবং অন্যান্য প্রাপ্য নিয়ে সমস্যা হয়েছে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে চটকল ফের চালু হবে। কেউ বঞ্চিত হবেন না।’’
এআইইউটিইউসির রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস বলেন, ‘‘মালিক ও সরকারের কাছে আমাদের দাবি, অবিলম্বে মিল চালু করে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মেটানো হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy