Advertisement
০৭ নভেম্বর ২০২৪
Ramkrishna mission

Ramakrishna Mission: বিবেক-পথে শিবজ্ঞানে জীব সেবার সঙ্কল্প মঠ ও মিশনের

ভারত ভ্রমণের সময় তিনি লক্ষ করেছিলেন, নিজেদের মুক্তির জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন অসংখ্য সন্ন্যাসী।

রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলুড় মঠে দর্শনার্থীদের ভিড়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলুড় মঠে দর্শনার্থীদের ভিড়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২২ ০৬:০০
Share: Save:

ভারত ভ্রমণের সময় তিনি লক্ষ করেছিলেন, নিজেদের মুক্তির জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন অসংখ্য সন্ন্যাসী। তাঁদের কেউ কেউ আবার অলস জীবন কাটাচ্ছেন। সেই পর্যবেক্ষণ এবং শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের ‘শিবজ্ঞানে জীব সেবা’র আদর্শকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। মঠের মন্দিরে ঈশ্বরের আরাধনা এবং মিশনের হাসপাতালে রোগীর সেবা— এই দু’টিকে দেখেছিলেন এক দৃষ্টিতে।

রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের সন্ন্যাসীদের দক্ষতা-শক্তিকে দু’টি ভাগে বিভক্ত করে চালনা করার জন্য বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘আত্মনো মোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ’, অর্থাৎ নিজেদের মুক্তি ও জগতের কল্যাণ। সেই লক্ষ্যেই বেঁধেছিলেন রামকৃষ্ণ সঙ্ঘকে। ১২৫ বছর পরেও স্বামীজির দেখানো সেই লক্ষ্যের পথে অবিচল রামকৃষ্ণ মিশন। তাই ২০২২ সালের ১ মে, রবিবার মিশনের ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবের সূচনায় সঙ্কল্প নেওয়া হল ‘মানবকল্যাণের’। প্রাধান্য দেওয়া হল নারীশক্তির উন্নয়নের বিষয়টিকে। ঠিক হয়েছে, আগামী এক বছর ধরে শুধু অনুষ্ঠান নয়, কল্যাণ ব্রতের মাধ্যমেই পালিত হবে রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সঙ্কল্পিত বিভিন্ন কর্মসূচি।

এ দিন সেই কর্মসূচির সূচনা করলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষষ্ঠদশ অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ। সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, ‘‘শুধু উৎসব-অনুষ্ঠান নয়, বরং লোকহিতকর কাজের উপরে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। আগামী এক বছর ধরে দেশ জুড়ে চলবে সেই কর্মসূচি।’’

রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব সাড়ম্বরে পালন করতে স্বপ্রণোদিত হয়ে রামকৃষ্ণ মিশনে চিঠি পাঠিয়ে অনুদান দিতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে থেকে ওই সহযোগিতা করতে চেয়েছেন। কিন্তু আমরা জানাই, উৎসব নয়। ১২৫ বছর পূর্তিতে আমাদের লক্ষ্য মানবকল্যাণ। মিশনের সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে কেন্দ্র।’’ মিশন সূত্রের খবর, কেন্দ্রের প্রদেয় ৩৫-৪০ কোটি এবং‌ নিজেদের তহবিল মিলিয়ে যে-রাজ্যে যেমন প্রয়োজন, সেই ভাবে জনকল্যাণের কাজ হবে।

১৮৯৭ সালের ১ মে বাগবাজারে বলরাম বসুর বাড়িতে বিবেকানন্দের নেতৃত্বে অন্যান্য সন্ন্যাসী এবং শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের গৃহী ভক্তদের উপস্থিতিতে তৈরি হয় রামকৃষ্ণ মিশন। সেই বছরেই মুর্শিদাবাদে দুর্ভিক্ষে আক্রান্তদের বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন স্বামী অখণ্ডানন্দ। ১৮৯৮-এ কলকাতায় প্লেগ রোগীদের সেবায় ভগিনী নিবেদিতা ও স্বামী সদানন্দ নিয়োজিত করেছিলেন নিজেদের। সেই ধারাবাহিকতা আজও বিদ্যমান। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের আদর্শ প্রচারের কর্মকাণ্ডকে শৃঙ্খলার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে ১৯০৯ সালে ভারতীয় আইনের ১৮৬০/২১ ধারা অনুযায়ী সঙ্ঘের প্রচার বিভাগকে রামকৃষ্ণ মিশন নামে রেজিস্ট্রি করানো হয়।

বর্তমানে ছ’টি মহাদেশে বহু শাখা কেন্দ্র রয়েছে মিশনের। এ ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে অনুরাগীরা রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের নামে কেন্দ্র চালাচ্ছেন। তবে পাকিস্তান ও চিনে মিশনের কোনও কেন্দ্র নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, কলকাতায় নিযুক্ত চৈনিক কনসাল জেনারেল তাঁদের শিক্ষা কেন্দ্রে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের আদর্শ ও কর্মকাণ্ডের প্রচারের জন্য বছরখানেক আগেই মিশনকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, ‘‘কেন্দ্রের অনুমতি মিললে সেটা করা যেতে পারে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ramkrishna mission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE