—ফাইল চিত্র।
আইপিএস অফিসার রাজীব কুমারকে তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের প্রধান সচিব করার সিদ্ধান্তে আইপিএস’রা অবশ্যই খুশি। তাঁদের অধিকাংশের মতে, সর্বভারতীয় ক্যাডারের যে কোনও অফিসারের প্রধান সচিব হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। যদিও নবান্নের আমলারা এ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, আইপিএস অফিসারেদের কি কোনও দফতরের প্রধান সচিব পদে বসানো যায়?
রাজ্যের এক প্রাক্তন মুখ্য সচিবের ব্যাখ্যা, ‘‘আইএএস এবং আইপিএসদের প্রশিক্ষণের ধাঁচ সম্পূর্ণ আলাদা। তাই তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট পদও আছে। প্রশাসন চালাতে তা অনুসরণ করা উচিত।’’ প্রাক্তন ওই মুখ্য সচিবের মতে, ‘‘ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রের ধাঁচে শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়, প্রশিক্ষণ পর্বেই ক্যাডার ভিত্তিক কৌশল রপ্ত করানো হয়। ফলে শিক্ষাগত যোগ্যতা যা-ই হোক না কেন, আইএএসদের সাধারণ প্রশাসন ও আইপিএসদের পুলিশ বাহিনী পরিচালনার কাজেই দক্ষ হিসাবে গড়ে তোলা হয়। তাই একজন আইএএস’কে জেলা শাসক করা হয়, আর আইপিএস’কে পুলিশ সুপার। সিনিয়র পদেও সেটা বজায় থাকা জরুরি।’’
রাজ্যের আর এক প্রাক্তন মুখ্য সচিবের কথায়, ‘‘বিভিন্ন দফতরের প্রধান সচিবের পদ আইএএস’দের জন্য নির্দিষ্ট। সেখানে আইপিএস’দের বসাতে হলে কেন্দ্রীয় পার্সোনেল মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হয়। তিন মাসের বেশি অনুমোদন দিতে পারে না মন্ত্রক। প্রয়োজন হলে তা আবার বাড়ানোর আবেদন করতে হয়। যদি তা মানা না হয়ে থাকে, তা হলে সেটা বেনিয়ম হয়েছে।’’ আইএএসদের জন্য নির্দিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সচিবের পদে আইপিএসকে বসানোর আগে সেই অনুমতি নেওয়া হয়েছিল কি? নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, ‘‘নিয়ম কানুন মানা হবে। আপনারা চিন্তা করবেন না।’’
প্রশিক্ষণ পর্ব
আইএএস
• প্রথম ১০০ দিন মুসৌরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে
• পরের ন’মাস মুসৌরির আইএএস অ্যাকাডেমিতে
• এর পর ১০ মাস জেলাশাসকের অধীনে ব্লক, মহকুমা, জেলাতে প্রশাসন পরিচালনা হাতে কলমে শেখা
• শেষ দু’মাস ফের অ্যাকাডেমিতে ফেরত গিয়ে চূড়ান্ত
পর্বের প্রশিক্ষণ
• সংবিধান ও দেশের প্রায় সব আইনকানুনের সবিস্তার পাঠ।
আইপিএস
• প্রথম ১০০ দিন মুসৌরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে
• ন’মাস হায়দরাবাদে পুলিশ অ্যাকাডেমিতে
• এর পর ১০ মাস পুলিশ সুপারের অধীনে থানা, মহকুমা, জেলা স্তরে পুলিশের কাজ শেখা, তদন্ত শেখা
• শেষ দু’মাস ফের অ্যাকাডেমিতে ফেরত গিয়ে চূড়ান্ত পর্বের প্রশিক্ষণ
• শারীরিক কসরত, গুলি চালনা, তদন্ত শেখানোর সঙ্গে আইপিসি, সিআরপিসি’র পাঠ।
তবে রাজীব কুমারই প্রথম নন। এর আগে জেল সচিবের পদেও পর পর দু’বার দু’জন আইপিএস অফিসারকে বসিয়েছে রাজ্য। সে ক্ষেত্রে পদে বসানোর পর তিন মাসের জন্য পার্সোনেল মন্ত্রকের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। এ বার তথ্যপ্রযুক্তি দফতরে আইপিএস-কে আনা হয়েছে আর জেল সচিবের পদে ফের আনা হয়েছেআইএএস অফিসারকে। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘শীর্ষ স্তর থেকে একটি সচিবের পদ আইপিএস’দের দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেই হিসাবে আইপিএস-কে তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে জেল সচিব পদটি আইএএস’দের দেওয়া হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: দেশছাড়া করার হুমকি, বাবুলের নয়া কীর্তি
তবে ক্যাডার পোস্টে অন্য অফিসারদের বসানোর রীতি অনেক দিনই বদলেছে রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব পদটি আইএএসদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। সেখানে এখন আইএএস নেই। হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনায় জেলাশাসকের পদও আইএএসদের জন্য বরাদ্দ। সেখানেও ডব্লিউবিসিএস অফিসার দেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যে মানবাধিকার কমিশনের প্রধান হয়েছেন আইপিএস।
তবে পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম নয়, দেশে প্রথম তেলঙ্গনাতেই স্বরাষ্ট্র সচিব পদে আইপিএস অফিসার বসেছেন। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের প্রধান কর্তাও আইপিএস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy