Advertisement
E-Paper

ঝোড়ো হাওয়া, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃষ্টি, কোথাও আবার পড়ল শিলও! কোন জেলার কী পরিস্থিতি?

কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আগামী রবিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। বৃষ্টির পাশাপাশি ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে।

সকাল ১১টায় কালো মেঘে অন্ধকার নেমেছে হুগলির হরিপালে!

সকাল ১১টায় কালো মেঘে অন্ধকার নেমেছে হুগলির হরিপালে! — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২৮
Share
Save

আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিলই। সেইমতো বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বৃষ্টিপাত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। সকালের দিকে বিভিন্ন জায়গায় কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও রাস্তায় জল জমে গিয়ে ব্যাহত হয়েছে যান চলাচল। বৃহস্পতিবার সারা দিনই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে কোন জেলায় কী পরিস্থিতি?

দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের চিত্র।

দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরের চিত্র। — নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা

সকাল থেকেই মেঘে ঢেকেছিল কলকাতার আকাশ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। শহরের বেশির ভাগ জায়গাতেই ঘণ্টাখানেক ধরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও জল জমে যায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সারা দিন জুড়েই বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েক পশলা হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে ভিজতে পারে শহর। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে দমকা হাওয়া বইবে।

হুগলি

মেঘের ঘনঘটায় সকাল ১১টাতেই অন্ধকার নেমে এসেছিল হুগলিতে! বেশির ভাগ দোকানে আলো জ্বলতেও দেখা যায়। তার পরেই শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বৃষ্টি চলেছে। তাতেই কোথাও কোথাও জল জমে যায় রাস্তায়। ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে ধনেখালি এবং হরিপালে।

হাওড়া

সকাল থেকেই হাওড়াতেও শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে বজ্রপাত। খুব সকালের দিকে রোদ থাকলেও বেলা বাড়তেই অন্ধকার হয়ে আসে চারদিক। বেলা ১১টার পর থেকেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতেই বিপর্যস্ত জনজীবন। বেশ কিছু রাস্তায় জল জমে যায়, যার জেরে ব্যাহত হয় যান চলাচল।

হাওড়ায় জলমগ্ন রাস্তার ছবি।

হাওড়ায় জলমগ্ন রাস্তার ছবি। — নিজস্ব চিত্র।

উত্তর ২৪ পরগনা

বুধবার দুপুরে বসিরহাট, বাদুড়িয়া ,স্বরূপনগর, গাইঘাটা-সহ উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়। বৃহস্পতির সকাল থেকে ফের শুরু হয় বৃষ্টি। মাঠের ফসল মাঠেই নষ্ট হতে বসায় মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সরষে, আলু, পটল-সহ বিভিন্ন সবজি চাষে। কৃষকেরা জানাচ্ছেন, লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারি সাহায্যও দাবি করেছেন তাঁরা।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা

সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয় বিষ্ণুপুর, বজবজ মহেশতলা-সহ বিভিন্ন এলাকায়। সঙ্গে বয়ে যায় ঝোড়ো হাওয়া। সোনারপুর, বারুইপুর, জয়নগর, কুলতলি, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, কাকদ্বীপ, নামখানা, মথুরাপুর, ডায়মন্ডহারবার, কুলপি-সহ জেলার প্রায় সব জায়গাতেই মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে।

নদিয়া

সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ নদিয়া জেলার সর্বত্র। কোনও কোনও জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টিও হয়েছে। কয়েক পশলা বৃষ্টি হয়েছে কল্যাণী, কৃষ্ণনগর, চাপড়া, তেহট্ট এবং করিমপুরে।

মুর্শিদাবাদ

মুর্শিদাবাদে বৃষ্টির পাশাপাশি বইছে হালকা ঝোড়ো হাওয়া। রবিবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ফলে আম চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

বর্ধমান

সকাল থেকেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হয় আসানসোল শিল্পাঞ্চলে। ঝড়বৃষ্টির ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় জেলায়। ভোরবেলা থেকেই আসানসোল শিল্পাঞ্চলের একাংশ বিদ্যুৎহীন। সর্বত্র তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা। আকাশের মুখ ভার। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি থেমেছে, তবে আকাশ এখনও মেঘলা। শিলা বৃষ্টি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের গলসিতে। বর্ধমান শহরেও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজেছে জেলার দক্ষিণ দামোদর এলাকা।

পূর্ব মেদিনীপুর

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজেছে পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। হলদিয়া, তমলুক, মহিষাদল, কোলাঘাট-সহ উপকূলবর্তী বেশ কিছু এলাকায় প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। বেলা ১১টার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া পর্যন্তও কালো মেঘে ঢেকে রয়েছে আকাশ। তবে দিঘা ও সংলগ্ন এলাকায় আকাশ পরিষ্কার রয়েছে। এই এলাকাগুলিতে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের বিশেষ খবর নেই।

পশ্চিম মেদিনীপুর

সকালের দিকে রোদ থাকলেও বেলা গড়াতেই মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে ঝোড়ো বাতাস। কয়েক পশলা বৃষ্টি হয় দাসপুরে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতেও শিলাবৃষ্টি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকটি এলাকায়। যার জেরে খড়্গপুর ডিভিশনে কিছু ক্ষণের জন্য থমকে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস-সহ বিভিন্ন ট্রেন। ঝড়ের কারণে ভেঙেছে প্রচুর গাছপালা। গাছের ডাল ভেঙে রেললাইনে পড়ায় সাময়িক ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচলও।

কয়েক পশলা বৃষ্টিতে ভিজেছে পশ্চিম মেদিনীপুর।

কয়েক পশলা বৃষ্টিতে ভিজেছে পশ্চিম মেদিনীপুর। — নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আগামী রবিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। বৃষ্টির পাশাপাশি ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস বইবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান এবং হুগলি জেলায়। ওই জেলাগুলির জন্য কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার।

এখনই বৃষ্টি না শুরু হলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরের জেলাগুলিতেও। বৃহস্পতিবার থেকে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার-সহ উত্তরের সব জেলাতেই হালকা বৃষ্টি হতে পারে। দার্জিলিঙে হালকা তুষারপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, উত্তর ও পূর্ব ভারতে রাজস্থান এবং অসমে রয়েছে জোড়া ঘূর্ণাবর্ত। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে পূর্ব ভারতের দিকে এগোচ্ছে নতুন একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা। এ সবের কারণেই বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বঙ্গে। তবে এই সময়ে রাজ্য জুড়ে বৃষ্টিতে রবি শস্যের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদেরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে আলু চাষে।

rainfall Hailstorm Kolkata Hooghly

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}