লের কারখানা পরিদর্শনে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জিএম। বৃহস্পতিবার খড়্গপুরে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
এ বার যাত্রী পরিষেবা ও সুরক্ষায় ট্রেনে ‘রিয়েল টাইম ইনফরমেশন সিস্টেম (আরটিআইএস)’ বসাতে চলেছে রেল। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার ললিতচন্দ্র ত্রিবেদী একথা ঘোষণা করেছেন।
আরটিআইএস ঠিক কী? রেল সূত্রের খবর, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) নির্ভর একটি ব্যবস্থা। যা কাজ করবে একটি যন্ত্রের মাধ্যমে। যন্ত্রটির ইন্ডোর ইউনিট থাকবে দূরপাল্লার ট্রেনের লোকো ইঞ্জিনের কেবিনে। আউটডোর ইউনিট বসানো হবে ওই কেবিনের ছাদের উপর। আউটডোর ইউনিটটির মাধ্যমে ইন্ডোর ইউনিটের সঙ্গে সরাসরি যোগ থাকবে স্যাটেলাইটের। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ট্রেনের গতি এবং অবস্থান সম্পর্কে তথ্য পাবে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ‘সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম(ক্রিস)’-এর নয়াদিল্লির ডেটা সেন্টারে। সেখান থেকে তথ্য পাবে রেলের বিভিন্ন দফতর। যাত্রীরাও জানতে পারবেন সংশ্লিষ্ট ট্রেনটির নির্দিষ্ট অবস্থান। গোটা প্রক্রিয়াই হবে এক লহমায়।
কিন্তু এখনও তো যাত্রীরা ট্রেনের অবস্থান জানতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নয়া ব্যবস্থা আলাদা কোথায়? রেলের দাবি, চলতি ব্যবস্থায় বিভিন্ন অ্যাপ এবং অনলাইন পরিষেবার ট্রেনের অবস্থান, গতি সম্পর্কে যাত্রীরা জানতে পারেন বটে। তবে বহু ক্ষেত্রে ভুলভ্রান্তির অবকাশ থেকে যায়। সঠিক তথ্য পেতে বিলম্বও হয়। কারণ, বর্তমান ব্যবস্থার অনেকটাই রেলের রেডিয়ো পরিষেবার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু নয়া ব্যবস্থা জিপিএস দ্বারা পরিচালিত হবে। ফলে তথ্য মিলবে অনেকটাই নির্ভুল। এ ছাড়াও সার্বিক রেল সুরক্ষাতেও এই ব্যবস্থা কাজে আসবে। কোথাও রেললাইন বা অন্য কোথাও কোনও সমস্যা দেখা দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে তা জানতে পারবেন চালক। ট্রেন নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে কম গতিবেগে চললে তা জানতে পারবেন কন্ট্রোল রুমের আধিকারিকেরা। কারণ জানতে যোগাযোগ করবেন চালককে।
এ দিন খড়্গপুর রেল কারখানা পরিদর্শন ও একটি ‘উৎকৃষ্ট’ রেল রেকের উদ্বোধনে এসেছিলেন ললিতচন্দ্র । ওই রেক হাওড়া-ভাস্কো শাখার ট্রেন হিসাবে চলবে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দায়িত্বভার নেওয়ার দিন কয়েক পরে এ দিনই প্রথম খড়্গপুরে আসেন তিনি। সেখানেই রেলের সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি আরটিআইএস-এর বিষয়ে জানান। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আরটিআইএস নামে নতুন একটি ব্যবস্থা চালু করতে চলেছি। প্রতিটি লোকোতে আমরা আরটিআইএস লাগাব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ব্যবস্থায় সেন্ট্রাল কন্ট্রোলে বসে আমরা ট্রেনের প্রতিটি অবস্থান বুঝতে পারব। ট্রেন কোথায় আছে
জানতে পারব। এতে নজরদারিতেও সুবিধা হবে।”
আপাতত দেশের ২হাজার ৭০০টি দূরপাল্লার লোকো ইঞ্জিনে এই আরটিআইএস বসানো হবে। প্রথম পর্যায়ে দিল্লি-মুম্বই, দিল্লি-চেন্নাই, হাওড়া-দিল্লি, কলকতা-চেন্নাই, হাওড়া-মুম্বই ট্রাঙ্ক রুটে এই ব্যবস্থা চালু করা হবে। ইতিমধ্যে দক্ষিণ পূর্ব রেলে এর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর।
ললিতচন্দ্র জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রতিটি লোকো ট্রেনের ‘ফগ সেফ ডিভাইস’ লাগানো হয়েছে। এর ফলে কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থায় সিগন্যাল দেখতে চালকদের অসুবিধা হচ্ছে না। এমনকী যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এলএইচবি কোচ চালু করা হয়েছে। এমনকি, আইসিএফ রেকগুলিকে নবরূপে এই ‘উৎকৃষ্ট’ রেক করার চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে স্টিল এক্সপ্রেসের এলএইচবি কোচের ‘বাকেট চেয়ার’ নিয়ে যাত্রীদের যে সমস্যা রয়েছে তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস এ দিন তিনি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে খড়্গপুর-হাওড়া শাখায় ১৩০কিলোমিটার বেগে ট্রেন চালানোর জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy