ফাইল চিত্র।
আদর্শ আচরণবিধি মেনে ট্রেন পরিষেবায় রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করতে জেলা প্রশাসনগুলির মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দিল রাজ্য সরকার। প্রায় সাড়ে সাত মাস পরে আগামিকাল, বুধবার ফের শুরু হচ্ছে রেল পরিষেবা। তার আগে চূড়ান্ত হওয়া আদর্শ আচরণবিধি সোমবার প্রকাশ করল রাজ্য সরকার। এ দিনই সোমবার দক্ষিণবঙ্গের ১০টি জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে ভিডিয়ো বৈঠকের মাধ্যমে আদর্শবিধির ব্যাখ্যা দিয়েছেন নবান্নের শীর্ষকর্তারা। রেল সূত্রের খবর, সাধারণ কামরায় হকারেরা এখনই উঠতে না পারলেও বাণিজ্যিক প্রয়োজনে ট্রেনের ভেন্ডার কামরা বৈধ টিকিট-সহ ব্যবহার করতে পারবেন ব্যবসায়ী-যাত্রীরা। তবে স্টেশন চত্বরে স্টল খোলার অনুমতি এখনই দেওয়া হচ্ছে না।
রাজ্যস্তরে নোডাল অফিসার ডিজি (রেল) অধীর শর্মা। পূর্ব রেলের পক্ষে চিফ প্যাসেঞ্জার ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজার এবং ডিভিশনের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার নোডাল অফিসার হিসেবে ডিজি (রেল)-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। জেলাস্তরে জেলাশাসকেরাই হবে নোডাল অফিসার। এত দিন বাদে রেল পরিষেবা চালু হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই যাত্রী-চাপ তৈরি হবে। তার উপরে সবার জন্য পরিষেবার সুবিধা উন্মুক্ত হওয়ায় সেই চাপ আরও খানিকটা বেশি থাকবে। রাজ্যের দাবি মেনে বেশি সংখ্যক ট্রেন নিয়ে পরিষেবা শুরু হতে চললেও সুরক্ষা-বিধিগুলির ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকতে হচ্ছে প্রশাসনকে। তাই রাজ্যের তৈরি করা আচরণবিধিগুলি সব জেলা প্রশাসনকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ভিড় এড়াতে তাঁদের সময়োপযোগী পদক্ষেপ করতে বলেছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
প্ল্যাটফর্মে আলাদা ঘর রাখতে হবে। কোনও যাত্রী উপসর্গযুক্ত হলে তাঁকে সেই ঘরে আলাদা করে রেখে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। প্রতিটি স্টেশনে গণ পরিবহণ যাতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে জেলাগুলিকেই। কাছাকাছি একাধিক স্টেশনের মধ্যেও পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে হবে। লক্ষ্য, ট্রেন থেকে নেমে অন্য পরিবহণের অভাবে যাত্রীদের যাতে স্টেশনেই অপেক্ষা করতে না হয়। আধিকারিক মহলের বক্তব্য, এমনিতে বিনা টিকিটে স্টেশনে কেউ যাতে না ঢুকতে পারেন, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রেলের।
আরও পডুন: ছেলে মারা গিয়েছে বুঝতে পেরেও আব্দুল রা কাড়েননি, পাছে বাস থেকে নামিয়ে দেয়
কিন্তু স্টেশনে ঢোকা-বেরোনোর জন্য নির্দিষ্ট পথ যাত্রীরা মানছেন কি না, স্টেশনের প্রত্যেককে থার্মাল স্ক্রিনিং নিশ্চিত করা, মাস্কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার, সতর্কতাবিধিগুলির প্রচার ইত্যাদি আচরণবিধিগুলি কঠোর ভাবে পালিত হচ্ছে কি না, তা দেখতে হবে জেলা-কর্তাদেরও। রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাজ্যের বৈঠকে উভয়ের মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়টি বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পেয়েছিল। কার্যক্ষেত্রে রেলরক্ষী বাহিনী এবং জিআরপি সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করবে। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলিতে এই সমন্বয় নিশ্চিত হবে নোডাল অফিসারের তত্ত্বাবধানে। সামগ্রিক এই পদ্ধতিও জেলা প্রশাসনকে দেখভাল করতে হবে। বস্তুত, এই সব বিষয়ে সহযোগিতা ছাড়া নোডাল অফিসার নিয়োগের প্রস্তাব রাজ্যকে দিয়েছিল রেলও। এ ছাড়া, অবরোধ বা যাত্রী বিক্ষোভের ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপের ব্যাপারে রেল-রাজ্য মন্বয়ের উপর বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে।
যাত্রীদের সচেতন করতে হাওড়া-শিয়ালদহের মতো স্টেশনে মাইক-প্রচার ছাড়াও ভিডিয়ো-বার্তায় জোর দেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল প্রচার-ভিডিয়ো তৈরি করেছে। যে সব জনবহুল স্টেশনে বহু প্রবেশ পথ, সেখানে এক-দু’টি খোলা রেখে বাকিগুলি বন্ধ করা হচ্ছে। হাওড়া এবং শিয়ালদহ ডিভিশনে অফিসের ব্যস্ত সময়, সকাল ৮টা থেকে ১১টার মধ্যে মোট ১৭৭ টি ট্রেনের ১৪৮টিই (প্রায় ৮৪ শতাংশ) পরিষেবায় যুক্ত হচ্ছে বলে রেল সূত্রে খবর। সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়েও প্রায় একই সংখ্যক ট্রেন চালবে। বয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে এই ট্রেন-সফর এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া রেল-সফর না করার কথাও বলা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy