প্রতীকী ছবি।
করোনার জরুরি ওষুধ রেমডেসিভিয়ার হোক বা প্রাণদায়ী অক্সিজেন—দেশজুড়ে কালোবাজারিদের তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছে। মানবিকতা বিসর্জন দিয়ে মওকা বুঝে টাকা রোজগারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে অসংখ্য অসাধু চক্র।
রোগীর অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ঝোপ বুঝে কোপ মারার কোনও সুযোগই যে তারা ছাড়ছে না তার প্রমাণ আরেক বার মিলল নদিয়ার কল্যাণীর যক্ষা হাসপাতালে। এখানে বিপুল টাকার বিনিময়ে সরকারি কোভিড হাসপাতালের শয্যা ‘বিক্রি’র গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্ত একটি চক্র। রোগীপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যে ওই চক্রে জড়িত সন্দেহে এক জনকে আটক করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সর্ষের মধ্যেই ছিল ভূত! হাসপাতালেরই অস্থায়ী কর্মচারীদের একাংশ এই চক্র চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। কোভিড রোগীকে শয্যা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিতেন তাঁরা! শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা জানাজানি হতেই তোলপাড় শুরু হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে বুধবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে কল্যাণীর হাসপাতালে এসেছিলেন বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়়ির লোকের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির খুব ভিড় ছিল। অন্য এক রোগীর আত্মীয়দের থেকে তাঁরা একটি ফোন নম্বর পান। জানতে পারেন যে, সেটি সুখদেব মধু নামে এক
অস্থায়ী কর্মচারীর।
সুখদেবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি শয্যার জন্য ত্রিশ হাজার টাকা দাবি করেন বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত দশ হাজার টাকায় রফা হয়। ওই রোগী ভর্তিও হয়ে যান। শুক্রবার সকালে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, সেই খবর বাড়ির লোককে না জানিয়ে শুক্রবার দুপুরে তাঁদের থেকে দশ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এর পর রোগীর মৃত্যুর খবর জানতে পেরে হাসপাতালের সামনে মৃতের আত্মীয়েরা জমা হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
তখন জানা যায়, এর আগে শ্যামনগরের আরও দুই রোগীকে ভর্তি করার জন্য সুখদেব মোট কুড়ি হাজার টাকা নিয়েছেন। ওই রোগীদের এক জন হাসপাতালের এ ব্লকের ৬৯ নম্বর শয্যায় ও অন্য জন বি ব্লকে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের বাড়ির লোক এই ডামাডোলে অভিযুক্তের থেকে ঘুষের টাকা ফেরত চান ও পেয়ে যান। কিন্তু যে রোগী মারা গিয়েছিলেন তাঁর বাড়ির লোক টাকা ফেরত নিতে চাননি। তাঁরা সরাসরি শনিবার সকালে হাসপাতালে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশেও খবর যায়। পুলিশ সুখদেব মধুকে আটক করে থানায় তুলে নিয়ে আসে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সুখদেবের সঙ্গে আরও চার জন এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা প্রত্যেকেই আগে কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে ডাটা অপারেটরের কাজ করেন। নদিয়ার জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, “বিষয়টি নিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি।” মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “সুখদেব মধু নামে ওই কর্মীকে বরখাস্ত করতে বলা হয়েছে। আরও যাঁরা এতে জড়িয়ে আছেন তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy