শিল্পী মালির আঁকা এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আকাশে যেন ছাতা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।
সূদূর বিলেতের মাঠে কবির ছায়া দেখে আবেগে থরো থরো দু’পারের খণ্ডিত বাঙালি।
ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীতের সূত্রে এমন মুহূর্ত নতুন কিছু নয়। তবু আবেগের ছোঁয়াচ ক’জনই বা সহজে এড়াতে পারে! বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুই লড়াকু প্রতিপক্ষের খেলা শুরুর আগে তাই দু’দেশেই এক ধরনের দ্রবীভূত মেজাজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় চট্টগ্রামের ফারহানা আনন্দময়ীর দৃপ্ত ঘোষণা: আ-হা এজবাস্টনের আকাশ আজ রবি ঠাকুরময়! বেঙ্গালুরুবাসী কলকাতা-কন্যা ঋদ্ধি তখন টিভি-তে দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত রেকর্ড করে কলকাতায় দাদাকে ‘মেসেজ’ পাঠিয়েছেন! ‘কী মুশকিল বল তো! বুকের মধ্যে তোলপাড় হয় প্রতিবার!’
ঘোর পেশাদার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জাতীয়তাবাদী-বাজার বহু দিনই তাক করেছেন নানা কিসিমের পণ্য নির্মাতারা। তাতে ভারতীয় সমর্থক তথা বাজারের আবেগ উসকে দিতে কখনও প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান, বাংলাদেশকে এক হাত নেওয়াও দস্তুর। বাংলাদেশ-ভারতের ক্রিকেট ম্যাচ সেই বাজারের অঙ্কেও গরমিল ধরিয়ে ছেড়েছে। এ দেশের গড়পড়তা বঙ্গসন্তান বিরাট কোহালিদের হয়ে গলা ফাটালেও একটি দাঁত মাজার পেস্টের বিজ্ঞাপনে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতির অপমান নিয়ে সরব। সন্ধ্যার মধ্যেই টুইট করে ক্ষমা চেয়ে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে নিয়েছেন সেই পণ্য নির্মাতা। এবং এ ক্ষেত্রেও সৌজন্যে বাঙালির সাংস্কৃতিক আবেগ এবং রবীন্দ্রনাথ!
সন্ধ্যায় খেলা দেখতে দেখতে এই আবেগের কথাই বলছিলেন একনিষ্ঠ ভারত-সমর্থক সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ‘‘শেষ পর্যন্ত ভারত জিতুক এটা আমি চাইব। কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগে দু’দেশের জন্যই রবীন্দ্রনাথের গান এবং মাঠে ১১টি বাঙালি ছেলে, এই আবেগ কেনই বা অস্বীকার করি!’’ চট্টগ্রামের বাসিন্দা প্রবীণ প্রাবন্ধিক-লেখক আবুল মোমেন টেলিফোনে খুব হাসলেন, ‘‘আমার কলকাতার বন্ধুদের একটু মুশকিল হয় বাংলাদেশের সঙ্গে খেলা পড়লে! একই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ আর এক দিকে ১১টি বাঙালি ছেলের ব্যাপার!’’ কয়েক বছর আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় দলে থাকাকালীন তাঁর বহু অনুরাগীর দেখা মিলত ও-পার বাংলায়। শীর্ষেন্দুর আদি বাড়ি ঢাকা-বিক্রমপুরে। মোমেন সাহেবের বাবা কৃষ্ণনগরে কলেজে পড়িয়েছেন। ‘‘আবার বাংলাদেশ টিমের তামিম ইকবালের পূর্বপুরুষরা আদতে বিহারের বাসিন্দা! এখন পুরোপুরি বাঙালি,’’— বললেন মোমেন সাহেব।
এ দিনই ফ্রান্সের স্ত্রাসবুর্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অধিবেশনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘অ্যানথেম’ গাইতে না-চেয়ে পিছন ফিরে দাঁড়িয়েছিলেন ব্রিটেনের ব্রেক্সিট পার্টির সদস্যেরা। তখনই ক্রিকেট মাঠে প্রতিপক্ষ দেশের জাতীয় সঙ্গীত শুনে চোখে জল আসছে কিছু ক্রিকেট সমর্থকের। দুনিয়া জুড়ে কট্টর জাতীয়তাবাদী রাজনীতির রমরমাতেও অন্য রকম আবেগ কিছু বেঁচে আছে, তা-ও দেখাল ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy