Advertisement
E-Paper

যাদবপুরে পূর্ণ সময়ের উপাচার্য কবে, উঠছে প্রশ্ন

গত ১ মার্চ শিক্ষামন্ত্রীর ক্যাম্পাসে যাওয়ার পরের গন্ডগোলের ঘটনাগুলি চরম অস্থিরতা, বলছেন শিক্ষাজগতের সঙ্গে জড়িতেরা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫ ০৯:৪১
Share
Save

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তের চলতি মাসেই অধ্যাপক হিসেবে কাজের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর পরে তিনি অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদে থাকবেন কি না, প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) বৈঠকে উঠেছে, দাবি সূত্রের। সূত্রের খবর, রাজভবন ও উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে চিঠি দিতে চলেছেন ভাস্কর।

আইন অনুযায়ী এই রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়স ৬৫ বছর। তবে উপাচার্যদের কার্যকালের মেয়াদ ৭০ বছর। যাদবপুরের ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক হিসেবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভাস্করের কার্যকালের মেয়াদ রয়েছে। রাজ্যপাল যখন গত বছর অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে ভাস্করকে নিয়োগ করেছিলেন, তখন তাঁকে পরবর্তী নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। এর পরে এক বছর হতে চলেছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সার্চ কমিটি গড়ে এই রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। যে ক’টিতে এখনও স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের নির্দেশ রাজ্যপাল দেননি, যাদবপুর তার অন্যতম। সূত্রের খবর, এখানে উপাচার্য বাছাইয়ের সার্চ কমিটি যে তিন জনের নামের প্যানেল করেছে, তাতে ভাস্করের নাম রয়েছে। গত নভেম্বরে সার্চ কমিটির প্যানেল তৈরি হয়েছে। কিন্তু অধ্যাপক হিসেবে ভাস্করের অবসরের সময় চলে এলেও এখনও স্থায়ী উপাচার্য কে হবেন, সেই বিষয়ে রাজ্যপাল কিছু জানাননি।

গত ১ মার্চ শিক্ষামন্ত্রীর ক্যাম্পাসে যাওয়ার পরের গন্ডগোলের ঘটনাগুলি চরম অস্থিরতা, বলছেন শিক্ষাজগতের সঙ্গে জড়িতেরা। এর পর্যালোচনা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো নিয়ে সিদ্ধান্ত জরুরি। কিন্তু অন্তর্বর্তী উপাচার্যের সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কর্মসমিতির বৈঠক ডাকার ক্ষমতা নেই। এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের অনুমতি চাই। ইতিমধ্যেই উচ্চশিক্ষা দফতরে অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত উচ্চশিক্ষা দফতর এই বিষয়ে কোনও কিছু জানায়নি বলেই খবর।

এ দিন জুটার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কমিটিগুলিতে অবিলম্বে নির্বাচিত প্রতিনিধি আনতে উচ্চশিক্ষা দফতর এবং আচার্যকে লেখা হবে। এর সঙ্গে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে পর্যাপ্ত রক্ষী নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের অবস্থা যে কতটা খারাপ এবং তা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে পঠনপাঠন ও গবেষণার ক্ষেত্রে কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, সেই নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশেরও সিদ্ধান্ত বৈঠকে নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পরে জুটা সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় চলছে না। নেই স্থায়ী উপাচার্য। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাজনিত সমস্যাও প্রকট হয়ে উঠেছে। এই সবের দ্রুত মীমাংসা না হলে আমরা আন্দোলনের পথে যাব।” এ দিন জুটার বৈঠকে ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরির বিষয়টির বিরোধিতা করা হয়। প্রশ্ন ওঠে, একটি স্বশাসিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা না করেই কি কোনও থানার ওসি ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে পারেন? এর সঙ্গে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার স্বার্থে এখন যে সব নিয়ম আছে, তা যথাযথ ভাবে পালন এবং পড়ুয়াদের বিভিন্ন ‘ফেস্ট’-এর সময়ে ছাত্রছাত্রীদের সংযত আচরণের যে প্রয়োজন রয়েছে, সেই বিষয়টিও এ দিন বৈঠকে ওঠে।

এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস বলেন, “শুধু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নয়, যে কোনও ক্যাম্পাসে যে কোনও ধরনের ঘটনা রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর।” এর আগে শিক্ষামন্ত্রীর যাদবপুর ক্যাম্পাসে যাওয়ার পরবর্তী ঘটনার জেরে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে ক্যাম্পাসে শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে রাজ্যপাল বৈঠক ডেকেছিলেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

JU vice chancellor

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}