—ফাইল চিত্র।
করোনা-ওমিক্রনের মোকাবিলায় ভোটকর্মীদের ডিসেম্বরে জোড়া টিকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। একই কারণে এ বার ভোটের সরঞ্জাম বিলির কেন্দ্রে কর্মীদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বা র্যাট পরীক্ষার উপরে জোর দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ওই পরীক্ষায় কারও রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তাঁকে তো বটেই, বাকিদেরও তো আইসোলেশনে পাঠাতে হবে। তখন কী হবে? তাতে ভোট-প্রক্রিয়া ধাক্কা খাবে না কি?
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই চার পুর নিগমের ভোট-প্রস্তুতি চালাচ্ছে কমিশন। এ নিয়ে আগেই সবিস্তার বিধি প্রকাশ করে তা মানা বাধ্যতামূলক বলেও জানিয়েছে তারা। কমিশনের সাম্প্রতিক নির্দেশ, বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুর নিগমের ভোটে যে-সব কেন্দ্র থেকে ভোটের সরঞ্জাম বিলি হবে, সেখানেই ভোটকর্মীদের র্যাটের ব্যবস্থা করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলার নির্বাচন আধিকারিকদের। এই কাজের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যায় স্বাস্থ্যকর্মীর দল তৈরির নির্দেশও দিয়েছে কমিশন।
ডিসেম্বরে কমিশনের তরফে জেলা প্রশাসনগুলিকে দেওয়া সবিস্তার নিয়মবিধিতে জানানো হয়েছিল, প্রত্যেক ভোটকর্মীর করোনা টিকার দু’টি ডোজ় নেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রশাসনিক সূত্রের ধারণা, তখনকার কোভিড পরিস্থিতির সঙ্গে এখনকার আবহের অনেকটা ফারাক রয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই এই বাড়তি সুরক্ষাকবচ হাতে থাকা খুব জরুরি।
নতুন নির্দেশ নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, একটি সরঞ্জাম বিতরণ কেন্দ্রে বহু ভোটকর্মীর সমাবেশ হয়। সেখানে র্যাটে কারও সংক্রমণ ধরা পড়লে তাঁর আশেপাশে থাকা অন্য কর্মী-সহ বিভিন্ন ব্যক্তির জন্যও তো নিভৃতবাসের বন্দোবস্ত করতে হবে। র্যাটে একাধিক ব্যক্তির কোভিড ধরা পড়লে শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটা আরও বাড়বে। এতে ভোট-প্রক্রিয়া ধাক্কা খেতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন জেলা-কর্তাদের অনেকেই।
এই নিয়ে সরকারি ভাবে মুখ খুলতে না-চাইলেও কমিশনের একটি সূত্রের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট সকলে বিতরণ কেন্দ্রে ঢুকে পড়ার পরে হয়তো এই পরীক্ষা করানো হবে না। সেই কেন্দ্রে ঢোকার আগে কারও কারও পরীক্ষা করানো যেতে পারে। তাতে অন্য লোকের সংস্পর্শে আসার ব্যাপার থাকবে না। সরঞ্জাম বিতরণ কেন্দ্রে কোভিড বিধি মেনে চলার ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। ফলে সেখানে গাদাগাদি পরিস্থিতি তৈরির কারণ নেই। র্যাটের ক্ষেত্রে সাধারণ ভাবে ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়া যায়। ফলে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে ভোটকর্মীদের কেন্দ্রে ঢোকার অনুমতি দেওয়া বা না-দেওয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে।
জেলা প্রশাসনিক সূত্রে অবশ্য মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, ভোটের সরঞ্জাম নিতে গিয়ে কোভিড বিধি যে পুরোপুরি মানা হয়, তা নয়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরঞ্জাম সংগ্রহের প্রক্রিয়া সাঙ্গ করতে সব সময় এমনকি দূরত্ব-বিধিও মেনে চলা হয় না। সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, কমিশন যখন নির্দেশ দিয়েছে, তখন এর একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি বার করতে হবে। কমিশন সূত্রের খবর, চারটি পুর নিগমের আসন্ন নির্বাচনে ভোটকর্মী লাগবে কমবেশি ন’হাজার। সেই জায়গায় অন্তত ১২ হাজার ভোটকর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। চলতি পরিস্থিতিতে ভোটকর্মীদের কারও কারও কোভিড হলে যাতে সমস্যা না-হয়, অতিরিক্ত লোকবলের বন্দোবস্ত সেই জন্যই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy