Advertisement
E-Paper

মুক্ত বিদ্যালয়ের পরীক্ষা বাড়িতে কেন, উঠছে প্রশ্ন

করোনার জন্য রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ে ২০২০ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩১
Share
Save

অতিমারিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষা বাড়িতে বসে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। এ বার পশ্চিমবঙ্গ রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় কাউন্সিল পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাড়ি থেকে দেওয়ার বন্দোবস্ত হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বড় অংশের প্রশ্ন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বাড়িতে বসে দেওয়ার ব্যবস্থা হল কেন? তাঁদের আশঙ্কা, এই সুযোগে বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীই বই খুলে লিখবেন।

করোনার জন্য রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ে ২০২০ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। ওই বিদ্যালয় সূত্রের খবর, তাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা আজ, সোমবার শুরু হচ্ছে এবং উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হবে ২ ফেব্রুয়ারি। কাউন্সিল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্র রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের যে-কোনও কেন্দ্র থেকে নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসে পরীক্ষা দিতে পারবেন। ওই সব কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার প্রশ্ন ও খাতা সংগ্রহ করতে পারবেন পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও। উত্তর লিখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মুক্ত বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে খাতা জমা দিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার্থীরা অনলাইনেও প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের প্রিন্ট আউট নিয়ে উত্তর লিখে কেন্দ্রে জমা দিতে পারেন।

সাধারণ মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের মতো রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়েরও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বসেই দেওয়ার কথা। করোনার কারণে গত বছর এই দু’টি পরীক্ষা না-হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হওয়ায় অনেকেই স্বস্তিতে।

কিন্তু এতে প্রকৃত মূল্যায়ন হবে কি না, সেই বিষয়ে শিক্ষা শিবিরের একাংশ সন্দিহান। “মুক্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিট সাধারণ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সমতুল্য। মুক্ত বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে যে-কোনও ধরনের উচ্চশিক্ষা পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়া যায়। বসা যায় সব ধরনের চাকরি পরীক্ষাতেও। এই অবস্থায় রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাড়িতে বসে দিলে প্রকৃত মূল্যায়ন হবে না,” বলেন কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠ, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রধান শিক্ষক তথা শিক্ষাবিদ কাজি মাসুম আখতার। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের মতে, কোনও শিক্ষক-নজরদার ছাড়াই বাড়িতে বসে পরীক্ষা দেওয়া মানে প্রায় সকলেই বই খুলে পরীক্ষা দেবেন। অনেক পরীক্ষার্থী নিজে না-লিখে শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের দিয়েও উত্তর লিখিয়ে নিতে পারেন। ‘‘এ ভাবে পরীক্ষা দেওয়া এবং পরীক্ষার পরে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন হবে হাস্যকর,” মন্তব্য ওই শিক্ষকের। শিক্ষকদের একাংশের মতে, গত বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা আর পিছোনো সম্ভব না-হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা যেত। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারত। তা না-করে এ-রকম দু’টি বড় পরীক্ষা বাড়িতে বসে দেওয়ার বন্দোবস্ত হল কেন, সেটা তাঁদের মাথায় ঢুকছে না বলে জানান অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই।

“করোনার জন্য পরীক্ষা নেওয়া যায়নি, পরীক্ষার্থীরা ভাল করে পড়তেও পারেনি। ক্লাসও হয়নি। পরীক্ষার্থীদের নানা অসুবিধার মধ্যে পড়াশোনা করতে হয়েছে। তাই শিক্ষা দফতর এ বার বাড়িতে বসেই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে,” বলেন পশ্চিমবঙ্গ রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় কাউন্সিলের সভাপতি অমরেন্দ্র মহাপাত্র।

Open University Examination

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy