Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
school student

State Government: গাড়ি পাচ্ছে না পড়ুয়ারা, প্রশ্নের মুখে রাজ্য, স্কুল

হিন্দু স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই শুধু একটি নির্দিষ্ট স্কুলের পড়ুয়ারা একটি পুলকারে আসে না। বহু ক্ষেত্রে কলেজ স্ট্রিটের হিন্দু, হেয়ার ও সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা একসঙ্গে একটি নির্দিষ্ট রুটের পুলকার ঠিক করেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৩
Share: Save:

স্কুল খুলে দিলেই কি রাজ্য সরকারের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? কী ভাবে পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে এবং বাড়ি ফিরবে, সেটা দেখার দায় নেই তাদের? অধিকাংশ স্কুলবাস ও পুলকার যে পথে নামছে না, সেটা জেনেও সরকার বা স্কুল-কর্তৃপক্ষের কি হাত গুটিয়ে থাকা মানায়? এই সব প্রশ্নে সরব হয়েছেন নিয়মিত পুলকার না-পেয়ে বিপাকে পড়া অভিভাবকেরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলকার পরিষেবা সচল করতে স্কুল-কর্তৃপক্ষের সক্রিয় কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

অধিকাংশ স্কুলের বক্তব্য, স্কুলের নিজস্ব বাস যাতে নিয়মিত চলে, সেটা দেখার দায়িত্ব স্কুল-কর্তৃপক্ষের। কিন্তু অনেক স্কুলেরই তো নিজস্ব বাস নেই! সেই সব স্কুলে পড়ুয়াদের যাতায়াতের জন্য অভিভাবকেরা নিজেরা পুলকার বা বাস ঠিক করেন। এই বিষয়ে স্কুল-কর্তৃপক্ষ হস্তক্ষেপ করেন না।

রিজেন্ট পার্ক এলাকার ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের অধ্যক্ষ রঞ্জন মিত্র জানান, তাঁদের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের নিজস্ব বাস ব্যবহার করে। তাদের যাতায়াতে কোনও অসুবিধা হলে তাঁরা দেখবেন। রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘যে-সব অভিভাবক স্কুলের বাস পরিষেবা নেন না, তাঁরা নিজেদের ব্যবস্থাপনায় পুলকার বা বাস ঠিক করেন। ক’জন পড়ুয়া একটি পুলকারে উঠবে, কোন রুট ধরে সেই পুলকার চলাচল করবে, সবই ঠিক করবেন অভিভাবকেরা। স্কুল-কর্তৃপক্ষের পক্ষে সেই সব পুলকার বা বাসকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। অভিভাবকদের ঠিক করা পুলকারের তালিকাও নেই স্কুলে।’’

রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাসের বক্তব্য, অভিভাবকদের ঠিক করা বাস বা পুলকারে তো একটি স্কুলের পড়ুয়া ওঠে না। অনেক সময় দেখা যায়, একটি পুলকারে বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়া আছে। ‘‘এ-সব ক্ষেত্রে আমরা একা কী ভাবে ওই সব পুলকার নিয়ন্ত্রণ করব? তার উপরে এই ধরনের পুলকার বা বাসে মাঝেমধ্যেই চালক বদলে যায়। এমনকি বদল হয় মালিকানাও। পুলকারের মালিকেরা সব তথ্য আমাদের দেন না,’’ বলেন সুজয়বাবু।

শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যের প্রশ্ন, স্রেফ দু’দিনের নোটিসে প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু হয়ে গেল। হঠাৎ এত কম সময়ের নোটিসে স্কুল চালু হয়ে গেলে পুলকার সংস্থাগুলিই বা কী ভাবে প্রস্তুত হবে? ব্রততীদেবী বলেন, ‘‘অভিভাবকদের ঠিক
করা পুলকারের উপরে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। আমাদের স্কুলে এখনও বেশ কিছু শ্রেণির ক্লাস চলছে অনলাইনে। পরীক্ষা চলছে। ফলে সব পড়ুয়াকে এখন স্কুলে আসতেও
হচ্ছে না।’’

বেসরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের হাজিরা কম হলেও সরকারি বা সরকার সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে সব শ্রেণির পড়াশোনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ধরনের স্কুলের পড়ুয়ারা যাতায়াতের সময় সমস্যায় পড়ছে বলে অভিযোগ। মিত্র ইনস্টিটিউটের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘পুলকারের মালিকদের সঙ্গে স্কুল-কর্তৃপক্ষের কোনও সরাসরি সম্পর্ক না-থাকলেও স্কুলের পড়ুয়াদের স্বার্থে আমরা সংশ্লিষ্ট পুলকারের মালিক বা চালকদের সঙ্গে বসব। ওদের অসুবিধাগুলিও শোনা হবে।’’

হিন্দু স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই শুধু একটি নির্দিষ্ট স্কুলের পড়ুয়ারা একটি পুলকারে আসে না। বহু ক্ষেত্রে কলেজ স্ট্রিটের হিন্দু, হেয়ার ও সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা একসঙ্গে একটি নির্দিষ্ট রুটের পুলকার ঠিক করেন। এই তিনটি স্কুল পুরোদমে চালু হয়ে যাওয়ায় প্রায় সব পড়ুয়াই স্কুলে আসছে। তাদের পুলকার পরিষেবা পেতে অসুবিধা হচ্ছে না।

ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্রাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের পুলকার বা ছোট গাড়ি চলে না। স্কুলবাস চলে। যাদের স্কুলে যেতে অসুবিধা হচ্ছে, তাদের ছোট ছোট বাসে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি। অভিভাবকদের কোনও অসুবিধা হলে আমাদের সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

school student Transport Problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE