Advertisement
E-Paper

ঝড়, ব্যাধি সঙ্গে নিয়েই পৃথিবীর পাঠশালা বঙ্গে

আপাতত ওই সব ক্লাসের পাঠ্যক্রমের জন্য বই, বোর্ড, ড্রয়িং খাতা, গল্পের বই ইত্যাদি জোগাড় করা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৯
Share
Save

কয়েক মাসের লকডাউনে ত্রাণ থেকে শুরু করে আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে তারা সব সময় আগুয়ান। এ বার রাজ্য জুড়ে ‘পৃথিবীর পাঠশালা’ খুলেছে ‘কোয়রানটিন্ড স্টুডেন্ট-ইউথ নেটওয়ার্ক’।

যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ও বর্তমান পড়ুয়াদের তৈরি এই নেটওয়ার্ক আপাতত রাজ্যের ১৭টি জায়গায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের পঠনপাঠন চালাতে উদ্যোগী হয়েছে। তাদের পক্ষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৈকত সিট শনিবার জানান, কলকাতার ঠাকুরপুকুর, দমদম, কলেজ স্ট্রিট, বাঘা যতীন ছাড়াও আলিপুরদুয়ারে একটি, হুগলির আরামবাগে দু’টি, বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে দু’টি, হাওড়ার পাঁচলা ও বাউড়িয়ায়, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, অশোকনগর ও হাবড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি, সোনাখালি ও বালিদ্বীপে পৃথিবীর পাঠশালা খোলা হচ্ছে। এর মধ্যে সাতটিতে কিছু দিন ধরে পাঠশালার কাজ চলছে। অন্যান্য এলাকাতেও নিয়মিত যাতায়াত এবং সেখানকার পড়ুয়া, তাদের পরিবার এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে পাঠশালা নিয়ে।

আপাতত ওই সব ক্লাসের পাঠ্যক্রমের জন্য বই, বোর্ড, ড্রয়িং খাতা, গল্পের বই ইত্যাদি জোগাড় করা হচ্ছে। পাঠশালার কাজকর্মকে কী ভাবে আরও প্রাণবন্ত ও কার্যকর করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা চলছে অভিজ্ঞদের সঙ্গে। কেন এমন উদ্যোগ? উদ্যোক্তারা জানান, তাঁরা মাঝেমধ্যেই কলকাতা ও আশপাশের জেলার কিছু স্কুলে শিক্ষামূলক শিবির করতেন। বেশি যাওয়া হত সুন্দরবনের দিকে। শিবিরে কখনও প্রকৃতি নিয়ে অডিয়ো-ভিডিয়ো, কখনও বা বিজ্ঞানের নানা বিষয় হাতে-কলমে করে দেখানো হত। প্রচার চালানো হত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। এর ফলে পড়ুয়ারা ঠিক কী জানছে এবং কী বুঝছে, তার একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল তাঁদের।

ঘূর্ণিঝড় আমপানের পরে ওই নেটওয়ার্ক ত্রাণকাজ করতে ফের সেই সব জায়গায় গিয়েছিল। আমপান, লকডাউন ওই সব গ্রামের একটি গোটা প্রজন্মের শিক্ষার উপরে কী গভীর ছাপ ফেলছে, উদ্যোক্তারা তা প্রত্যক্ষ করেছেন। উত্তর ২৪ পরগনার একটি গ্রামে তাঁরা ৮০ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়ার দেখা পান, যাদের বাড়ি ও পরিবার আমপানে বিপর্যস্ত। তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল সেই মুহূর্তের প্রয়োজনীয় রেশন। নেটওয়ার্কের সদস্যদের মনে হয়েছিল, এই ধরনের পড়ুয়াদের নিয়মিত পড়ানো প্রয়োজন। শুধু আমপান-বিধ্বস্ত সুন্দরবন নয়, উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া হয় কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং অন্যান্য জেলাতেও। কোথাও কারও বাড়ির ছাদে পৃথিবীর পাঠশালা তো কোথাও কোনও ক্লাবঘরে। দু’-একটি জায়গায় ইট-বালি-টিন-কাঠ কিনে খাড়া করা হয়েছে একচিলতে পাঠশালা। এই কাজে তাঁরা সহযোগিতা পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের। এগিয়ে এসেছেন আরও অনেক পরিচিত, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।

‘‘দারিদ্রসীমার নীচে থাকা এই সব পড়ুয়ার শৈশব নানান সমস্যার মধ্যে রয়েছে। ওদের সঙ্গী হতে চাইছি আমরা,’’ বললেন সৈকতবাবু। তিনি জানান, ছোট ছোট দল গড়ে পড়ানো হচ্ছে পৃথিবীর পাঠশালায়। পড়াচ্ছেন নেটওয়ার্কের সদস্যেরাই। খেলা, করোনা, কার্টুন চ্যানেল, ভিন্গ্রহের প্রাণী— সব কিছু নিয়েই আলোচনা চলছে। স্কুলের পাঠ্যক্রমের সঙ্গে বাস্তব জগতের যোগ কতটা, সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পাঠশালায় মেয়েদের আনতে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে কোথাও কোথাও। আবার পাঠশালায় আসার বাড়তি উৎসাহও দেখা যাচ্ছে অনেক জায়গায়।

Education Quarantined Student Youth Network School Cyclone Amphan Coronavirus in West Bengal

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।