Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বাড়িতে ঢুকে যুবককে ‘খুন’

ঘরে ঢুকে সোমবার রাতে এক যুবককে কোপানোর অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার ঝালদা শহর লাগোয়া পাটঝালদা গ্রাম এলাকায়।

কৃত্তিবাস কুইরি। নিজস্ব চিত্র

কৃত্তিবাস কুইরি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৩১
Share: Save:

ঘরে ঢুকে সোমবার রাতে এক যুবককে কোপানোর অভিযোগ উঠল পুরুলিয়ার ঝালদা শহর লাগোয়া পাটঝালদা গ্রাম এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় আহত কৃত্তিবাস কুইরি (২৯) মঙ্গলবার ভোরে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন মারা যান। পাটঝালদা গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবককে কেন এ ভাবে মারা হল এবং কে বা কারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত—তা স্পষ্ট নয় তাঁর পরিবারের কাছে। ঝাড়খণ্ডে ময়না-তদন্তের পরে, এ দিন গ্রামে নিয়ে এসে দেহের সৎকার করেন পরিজনেরা। ঝাড়খণ্ডের পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত কৃত্তিবাসের পরিজনেরা থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোজকার মতোই সোমবার রাতে খাওয়া সেরে একটি আলাদা ঘরে ভাই হারাধনের সঙ্গে ঘুমিয়েছিলেন ওই যুবক। বছর চোদ্দোর কিশোর হারাধনের বক্তব্য, তাঁরা দুই ভাই এক তলার ওই বাড়ির একটি ঘরে শুয়েছিলেন। ঘরের দরজা রোজকার মতোই খিল আঁটেনি তারা। তবে বাইরের বারান্দায় লোহার দরজায় তালা ঝোলানো ছিল। ছাদে অবশ্য কোনও দরজা নেই। তাদের বাবা-মা পাকা বাড়ির সামনে পুরনো মাটির বাড়িতেই শুয়েছিলেন।

এ দিন হারাধন জানায়, রাত ৮টা নাগাদ তারা শুয়ে পড়েছিল। তার দাবি, ‘‘সওয়া ১০টা নাগাদ দাদার চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায়। অন্ধকারের মধ্যে আমিও চিৎকার করে উঠি। তারপরেই মনে হয়, কে বা কারা যেন ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে ছাদের দিকে দৌড়ে যায়। দাদা গোঙাচ্ছিল। উঠে আলো জ্বালিয়ে দেখি, দাদার মাথা ক্ষতবিক্ষত, ডান হাতের আঙুলেও অনেকখানি কাটা। বিছানা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠি।’’

রাতেই কৃত্তিবাসকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে ঝালদা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে রাঁচীর একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু বেশিক্ষণ বাঁচিয়ে রাখা যায়নি।

কৃত্তিবাসের বাবা পেশায় কৃষিজীবী রাধাগোবিন্দ কুইরি মঙ্গলবার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘কারা আমার এমন সর্বনাশ করল বুঝতে পারছি না। ছেলে চাষবাস করে। কারও সঙ্গে কোনও ঝামেলা ছিল না। তা হলে কেন তাকে এ ভাবে খুন করা হল, বুঝতে পারছি না!’’ ছেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হলেই ঝালদা থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ওই প্রৌঢ়।

এ দিন পাটঝালদার কুইরিপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, থমথমে পরিবেশ। জটলা থাকলেও ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে বিশেষ আগ্রহী নন অনেকেই। কৃত্তিবাসের বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে রক্তের দাগ। গ্রামের এক বাসিন্দা জানালেন, তাঁদের গ্রামে এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। ওই যুবকের সঙ্গে কারও সে রকম শত্রুতা ছিল বলেও তাঁদের জানা নেই। ঘটনার ঠিকমতো তদন্ত করে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন তাঁরা।

জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও তারা ইতিমধ্যেই ঘটনার খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। অভিযোগ হলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ওই আধিকারিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Jhalda Purulia Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy