Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Injury

ঘুমন্ত যুবকের মাথায় থাবা অজানা জন্তুর

ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, সরিফুদ্দিনের গাল, মুখ ও হাতে ক্ষত রয়েছে। মোট ৩৫টি সেলাই করা হয়েছে।

জখম: বাজিতপুর গ্রামের যুবক সরিফুদ্দিন শেখ।

জখম: বাজিতপুর গ্রামের যুবক সরিফুদ্দিন শেখ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২১ ০৬:৪৬
Share: Save:

অজানা জন্তুর হামলায় আহত হলেন এক যুবক। মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়রের বাজিতপুর গ্রামের ওই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আহতের নাম সরিফুদ্দিন শেখ। রাতেই তাঁকে পড়শিরা উদ্ধার করে পাত্রসায়র ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।

ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) কল্যাণ রাই বলেন, ‘‘আহতের যুবকের বর্ণনা অনুযায়ী প্রাণীটি ভারতীয় নেকড়ে বা হায়না হতে পারে। প্রচণ্ড বৃষ্টি হওয়ায় জন্তুটির পায়ের ছাপ অস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে, পায়ের ছাপ দেখে বোঝার উপায় নেই।’’ তিনি জানান, ওই গ্রামে বুধবার রাত থেকে বনকর্মীরা সার্চলাইট নিয়ে টহল দেবেন। গাড়িও থাকবে।’’ তিনি জানান, সোনামুখী, পাত্রসায়রের জঙ্গলে হায়না ও নেকড়ে রয়েছে। বনকর্মীদের তাই সতর্ক করা হয়েছে।

হামিরপুর পঞ্চায়েতের বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা ৩৪ বছরের সরিফুদ্দিন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হচ্ছিল। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে এলাকা। রাতে প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচতে বাড়ির বারান্দায় সরিফুদ্দিন তাঁর দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুমাতে যান। সন্তানেরা একটি দড়ির খাটে আর তিনি মাটিতে বিছানা পেতে শুয়েছিলেন। স্ত্রী ছিলেন ঘরের ভিতর।

সরিফুদ্দিনের দাবি, ‘‘আনুমানিক রাত ১২টা-সাড়ে ১২টা নাগাদ হঠাৎ কোনও জন্তু আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঘুম ভাঙতেই আধো অন্ধকারে দেখি, একটা নেকড়ে জাতীয় কোনও জন্তু আমার মাথায় থাবা বুসিয়েছে। সেটাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করি। আমার চিৎকারে বাচ্চাদের ঘুম ভেঙে যায়। স্ত্রী বেরিয়ে আসে। ওরা চিৎকার করায় কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তি করার পরে জন্তুটা পালায়।’’

পাত্রসায়র ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, সরিফুদ্দিনের গাল, মুখ ও হাতে ক্ষত রয়েছে। মোট ৩৫টি সেলাই করা হয়েছে।

পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দত্ত বলেন, ‘‘রাতেই খবর পেয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাই। গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা মোল্লারুদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘এখন গরমের সময় গ্রামের অনেক মানুষ উঠোনে বা বারান্দায় ঘুমোন। সন্ধ্যার পরেও বারন্দায় শিশুরা খেলে, ঘুমোয়। গ্রামের ভিতরে বুনো জন্তু ঢুকে পড়ে লোকজনে কামড়ালে খুবই
চিন্তার কথা।’’

হামিরপুর পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সাদ্দাম বলেন, ‘‘আমাদের এলাকা থেকে জঙ্গল আড়াই কিলোমিটার দূরে। আগে কখনও এলাকায় বুনো জন্তুর আক্রমণ হয়নি। বন দফতরকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি। মানুষকেও বলেছি আতঙ্কিত না হতে।’’

পাত্রসায়রের রেঞ্জ অফিসার শিবপ্রসাদ সিংহ জানান, সন্ধ্যা থেকেই বন দফতরের গাড়ি ওই গ্রামে টহল দেবে। বনকর্মীরাও নজর রাখবেন। আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। তাঁর মতে, ‘‘বিদ্যুতের ঝলকানি ও বৃষ্টিতে কোনও কারণে ভয় পেয়ে জন্তুটি ওই বাড়িতে ঢুকে থাকতে পারে। বন দফতর থেকে ওই ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy