ধৃত রমেশ রজক। নিজস্ব চিত্র
এক মহিলাকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগে ঝালদার এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বছর পঁয়ত্রিশের নিহত মহিলা ঝালদা থানার একটি গ্রামের বাসিন্দা। রবিবার রাতে ওই বধূকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির কাছে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে রমেশ রজক নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে।
সোমবার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মঙ্গলবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ দাবি করেছে, রমেশের সঙ্গে ওই বধূর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। সম্পর্ক ছিন্ন করায় তাঁকে খুন করে ওই যুবক। জেরায় খুনের কথা রমেশ স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের। এসডিপিও (ঝালদা) সুমন্ত কবিরাজ বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন। ধৃতকে হেফাজতে নিয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ২০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল ওই মহিলার। তাঁদের এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান রয়েছে। পরে স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ছেলেকে নিয়ে একা থাকতে শুরু করেন তিনি। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, স্বামী কাজের সন্ধানে অন্যত্র চলে যাওয়ার পরে ওই বধূর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় রমেশের। বধূর থাকার জন্য রমেশ ওই গ্রামে একটি বাড়িও তৈরি করে দিয়েছিল। সেখানে ছেলেকে নিয়ে থাকতেন ওই বধূ। আগেই তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। ওই বাড়িতে রমেশের যাতায়াত ছিল। দু’জন এক সঙ্গে আনাজের ব্যবসা-ও শুরু করেছিল।
পুলিশের দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে, দু’জনের সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। পরে রমেশের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে রাঁচী চলে যান ওই মহিলা। সেখানে এক জনের সঙ্গে হোটেল ব্যবসা শুরু করেন।
সম্প্রতি রাঁচী গিয়েছিল রমেশ। সেখানে দু’জনের বিবাদ হয়। জেরায় পুলিশকে রমেশ জানায়, রাঁচীতে তাকে মারধর করে মহিলার ব্যবসায়ী-বন্ধুর পরিচিত কয়েকজন। তখনই ওই মহিলাকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়ে ফিরে আসে রমেশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গত রবিবার সন্ধ্যায় ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছিলেন বধূ। রাতে তাঁর মেয়ে দেখেন, বাড়ির বাইরে শৌচালয়ের পিছনের ঝোপে লুকিয়ে রয়েছে এক জন। মাকে সে কথা তিনি জানান। অভিযোগ, এর পরে ছেলেমেয়েকে নিয়ে শৌচালয়ের দিকে যেতেই ঝোপ থেকে বেরিয়ে ওই বধূর উপরে হামলা চালায় রমেশ। তার এলোপাথাড়ি ভোজালির কোপে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে যান বধূ।
চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। তাঁরাই বধূকে ঝালদা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা সেখানেই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, সোমবার নিহতের বাবা ঝালদা থানায় লিখিত অভিযোগে দায়ের করেন। ওই দিনই সন্ধ্যায় ঝালদা থেকে রমেশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতকে সাত দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছিল বিচারকের কাছে। বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন। খুনে ব্যবহৃত ভোজালিটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy