কুস্তাউরের হাটতলায় তৃণমূলের মুখপাত্র সমীর চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সভার এক সপ্তাহের মধ্যেই দলের রাজ্য মুখপাত্র সমীর চক্রবর্তীকে নিয়ে জবাবি-সভা করল তৃণমূল। ৩১ জানুয়ারি সেলিমের সভা ছিল পুরুলিয়ার রাস ময়দানে। সোমবার পুরুলিয়া ২ ব্লকের কুস্তাউরের হাটতলায় সভা করেন সমীর। তবে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ভিড়ের নিরিখে তৃণমূলের সভা সেলিমের সভার কাছে যেতে পারেনি। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এটা ছিল তাঁদের ব্লক-স্তরের সভা।
তৃণমূল নেতৃত্ব এ দিনের সভাকে সিপিএমের সভার জবাবি-সভা বলে মানতে না চাইলেও সেলিমের বক্তব্যের পাল্টা শোনা গিয়েছে সমীরের মুখে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে বিজেপির সঙ্গে ‘সেটিং’ করা-সহ নানা অভিযোগ তুলেছিলেন সেলিম। এ দিন সমীর জবাব দিতে গিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ‘চোরেদের মন্ত্রিসভায় থাকব না’ বলে তথ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর ইস্তফা দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন। কলকাতার সভায় জ্যোতি বসু ও অটলবিহারী বাজপেয়ীর হাতে-হাত রাখার কথা তুলে ধরে সে দিন কাদের সেটিং হয়েছিল, প্রশ্ন তোলেন সমীর। তিনি দাবি করেন, ‘‘তৃণমূল-বিজেপি সেটিংয়ের কথা কথা বলা হচ্ছে! তাই কি ইডি সুজয়কে (সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়) ডেকেছিল? কোন প্রমাণ পায়নি। পেলে তো তিহাড় জেলে থাকত। এদের কাজ শুধু অপপ্রচার করা।’’
উল্টে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘মুসলিম ভোট ভাগ করার জন্য বিজেপির কাছ থেকে সিপিএম টাকা নিচ্ছে। অন্য রাজ্যগুলিতে বিজেপির লোকসভায় ভোট কমার আশঙ্কায় বাংলায় ঝাঁপাতে চাইছে। একদিকে হিন্দুত্বের জয়ধ্বনি দিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণ, অন্যদিকে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা হ্রাসের চেষ্টা এবং সিবিআই-ইডি লাগিয়ে চোর-চোর বলে একটা আওয়াজ তোলার চেষ্টা।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘এ সব কথা বলে উনি একটি সম্প্রদায়ের মানুষের স্বাধীন চিন্তা ভাবনাকে অপমান করছেন। আসলে তৃণমূল এবং বিজেপি— দুই দল সম্পর্কেই মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা বলেন, ‘‘মানুষ দেখেছেন কাদের বাড়ি থেকে টাকার পাহাড় বেরিয়েছে।’’ বাংলার প্রতি বঞ্চনার প্রশ্নে বিবেক বলেন, ‘‘টাকার হিসেব না দিলে সরকার কী ভাবে টাকা দেবে?’’
তবে সিপিএমের তুলনায় এ দিনের সভায় ভিড় কম হওয়ায় চর্চা শুরু হয়েছে। সে দিন সিপিএম নেতৃত্বের দাবি ছিল, তাঁদের সভায় ১০-১২ হাজার ভিড় হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি ছিল, চার থেকে সাড়ে চার হাজারের বেশি ভিড় নয়। তবে এ দিনের সভায় তৃণমূলের হিসেবে সাড়ে তিন হাজার ভিড় হয়েছে। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার বক্তব্য, ‘‘এটা মোটেই সিপিএমের সে দিনের সভার পাল্টা সভা নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্লকে ব্লকে সভা হচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা মতোই ভিড় হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy