বাঁকুড়া পুরসভা
কোথাও আংশিক ছাড়, আবার কোথাও পুরোটাই। সঙ্গে ভাতা বৃদ্ধি থেকে পরিষেবামূলক প্রকল্পের ভাড়া কমিয়ে দেওয়া। পুরভোটের মুখে মঙ্গলবার বোর্ড মিটিংয়ে এমনই বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া পুরসভা। বিরোধীরা অবশ্য পুরোটাই ‘ভোটের চমক’ বলে দাবি করছেন।
বাঁকুড়া পুরভবনে এ দিন বাজেট ও বোর্ড অফ কাউন্সিলর্সদের রুটিন মিটিং হয়। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। তাই পুরকর্তাদের অনেকের মতে, মেয়াদ ফুরনোর আগে এটাই সম্ভবত শেষ বোর্ড মিটিং। ফলে, বৈঠকে ভোটমুখী কী-কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় থাকে, তা নিয়ে অনেকের আগ্রহ ছিল।
বোর্ড মিটিং ও বাজেট মিটিং শেষে বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত জানান, সিদ্ধান্ত হয়েছে নতুন ঘরবাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বাঁকুড়া পুরসভার ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’ তিন শতাংশ থেকে কমিয়ে দুই শতাংশ করা হবে। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমির মালিকানার ‘মিউটেশন ফি’ সম্পূর্ণ তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আর কোনও ‘ডেভেলপমেন্ট ফি’ লাগবে না। পুরসভার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শববাহী গাড়ির ন্যূনতম ভাড়া ৮০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছে। পুরসভার দিনমজুরদের দৈনিক ভাতাও বাড়ানো হয়েছে। চুক্তিভিত্তিতে পুরসভায় কাজ করা সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের মাসিক ভাতা ২,০০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। চুক্তিভিত্তিতে কাজ করা পুরসভার কম্পিউটার কর্মীদের দৈনিক ভাতাও বাড়ানো হয়েছে ৫০ টাকা। প্রতি শনিবারই পুরসভার অফিস দুপুর ২টো পর্যন্ত খোলা থাকত। এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় মাসের প্রথম ও তৃতীয় শনিবার দিনভর অফিস খোলা থাকবে। দ্বিতীয় ও চতুর্থ শনিবার অফিস বন্ধ থাকবে। তবে জল, আলো ও নিকাশি প্রভৃতি জরুরি দফতর অবশ্য যেমন চলে, তেমনই চলবে।
দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা বাঁকুড়া পুরসভার কিছু সমস্যা সমাধানে মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে আসন্ন অর্থবর্ষের জন্য পেশ হওয়া বাজেটেও। শহরের রাস্তার কুকুরদের নির্বীজকরণ প্রকল্পে প্রতি মাসে এক লক্ষ টাকা খরচ বরাদ্দ করা হয়েছে। শহরের সাফাই ও নিকাশি কাজের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে সাড়ে ১০ কোটি টাকা। পুরপ্রধান বলেন, “বাস্তবের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই বোর্ড মিটিং ও বাজেটে আমরা এই সিদ্ধান্তগুলি নিয়েছি। আগামী ১ এপ্রিল থেকেইসিদ্ধান্তগুলি কার্যকরী করা হবে।”
তবে ‘এ সব ভোট বৈতরণী পার হওয়ার কৌশল’ বলে কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতি দাবি করেন, “গত পাঁচ বছরে কোনও উল্লেখযোগ্য কাজই করতে পারেনি তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা। এখন ভোটের আগে এই সব ভাঁওতাবাজি করে মানুষের নজর টানতে চাইছে।”
আবার বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র দাবি করেন, “দু’বছর আগে বাঁকুড়ায় পথ কুকুরদের নির্বীজকরণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। আর পুরভোটের মুখে সেই প্রকল্পে অর্থবরাদ্দ করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইছে তৃণমূল। তবে মানুষ ওদের আর বিশ্বাস করবে না।”
মহাপ্রসাদবাবু অবশ্য বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিরোধীরা সবেতেই রাজনীতি খোঁজেন। তৃণমূল উন্নয়নে বিশ্বাসী। বাঁকুড়া পুরসভার সমস্ত স্তরের মানুষের কথা ভেবেই বাজেট ও বোর্ড মিটিং-এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy