ঝুঁকি: গ্যাসের লাইনে ভিড় করে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
এপ্রিল থেকে জুন— এই তিন মাস প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার উপভোক্তারা বিনামূল্যে একটি করে সিলিন্ডার পাবেন। ২৬ মার্চ এই ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই ঘোষণার জেরেই এপ্রিলের শুরু থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় রান্নার গ্যাসের দোকানের সামনে লম্বা লাইন পড়ছে মহিলাদের। উদ্দেশ্য, সরকারি প্রকল্পে পাওয়া তাঁদের এলপিজি কানেকশন আপডেট করানো। ভিড় করে লাইনে দাঁড়াতে গিয়েই লঙ্ঘিত হচ্ছে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে দূরত্ব বজায় রাখার স্বাস্থ্যবিধি।
শনিবার এমন ছবি দেখা গিয়েছে দুবরাজপুর পাওয়ার হাউস মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা অনুমোদিত গ্যাস ডিলারের অফিসের সামনে। রবিবার সেই একই ছবি ধরা পড়েছে সিউড়ির মাদ্রাসা মোড়ে আরেকটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা অনুমোদিত গ্যাস ডিলারের সামনে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে একই ছবি মানছেন প্রশাসনের কর্তারাও। লাইনে দাঁড়াতে নিরাপদ দূরত্ব বিধি যাতে সকলে মানেন সে জন্য ছুটে আসতে হয়েছে পুলিশকেও।
‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ প্রকল্পে বীরভূম জেলায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পেয়েছেন প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ মহিলা। এই প্রকল্পে রান্নার গ্যাস সংযোগ নিখরচায় মিললেও রিফিল বাজারদরে কিনতে হয়। পরে ভর্তুকির টাকা গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। প্রতিমাসে ৮০০-৯০০ টাকা খরচ করে সিলিন্ডার কেনা সম্ভব হয় নি অধিকাংশ পরিবারের পক্ষেই।
সংস্থার তরফে করা সমীক্ষাই বলছে, ৭৫.৭৩ শতাংশ গ্রাহকই সংযোগ পেয়েও গ্যাস সিলিন্ডার হয় রিফিল করাতে পারছেন না বা গ্যাস ওভেন কিনতে সক্ষম হচ্ছেন না। সারা বছরে ৩ থেকে ৪টি সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন সামান্য কিছু পরিবার। প্রকৃত সমস্যা সেখানেই। যাঁদের সংযোগ সচল নয়, লাইনে ভিড় করতে হচ্ছে তাঁদেরই।
এত ভিড় হচ্ছে কেন? গ্যাস ডিলারদের কথায়, ‘‘উজ্জ্বলা যোজনার উপভোক্তাদের অনেকেই গত ছ’মাস ধরে কোনও সিলিন্ডার তোলেননি। তাই অনেকেরই অ্যাকাউন্ট লক হয়ে গিয়েছে। সেই সব গ্রাহকদের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট আপডেট করতে হচ্ছে। তাছাড়া অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গেলেও প্রত্যেক গ্রাহককে সিলিন্ডার বুক করতে হবে মোবাইলের মাধ্যমেই। অধিকাংশ উপভোক্তার মোবাইল নম্বর আপডেট করানো নেই। তাই লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ সারতে হচ্ছে উপভোক্তাদের।’’ ডিলাররা জানাচ্ছেন, সব ধাপ ঠিক না হলে করোনা পরিস্থিতেতে প্রাপ্য সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে। তাই গ্যাস নিতে ভিড় করছেন উপভোক্তারা।
তবে এমন ভিড়ে যে সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে তাও মানছেন সকলে। ডিলারদের দাবি, ‘‘সামাজিক দূরত্ব যাতে বজায় থাকে আমরা সেটা দেখার চেষ্টা করছি। প্রশাসনের সাহায্য নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy