E-Paper

ফি বর্ষায় বেআব্রু হয় নিকাশি

বেহাল নিকাশি নিয়ে ঝালদা শহরের ক্ষোভ আজকের নয়। জল নিষ্কাশনের জন্য শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ডে ভরসা বলতে সরু-অপরিসর নালা।

পুরুলিয়া পৌরসভা।

পুরুলিয়া পৌরসভা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৬
Share
Save

দু’এক পশলা বৃষ্টি হল কী হল না, নিকাশি নালা উপচে রাস্তা জল থইথই। কোথাও পরিকল্পনাহীন নিকাশি তো কোথাও নিয়মিত নজরদারির অভাবে ভোগান্তি চলছেই। পুরসভার কি হুঁশ আছে?

পুরুলিয়া

বছর দুয়েক আগে এক রাতের বৃষ্টি দেখিয়েছিল পুরুলিয়া শহরের নিকাশি ব্যবস্থার প্রকৃত ছবি। শহরের একাধিক এলাকা চলে যায় জলের তলায়। অভিযোগ, বৃষ্টি হলে যে সব অংশ দিয়ে জল বেরিয়ে যেত, সেই ফাঁকা জায়গা এখন ভরেছে নির্মাণে। যে ভাবে শহর বেড়েছে, নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তাই এই হাল। এর সঙ্গে আঙুল উঠছে, অনেক রাস্তায় ফুটপাতের পাশে থাকা নিকাশি নালার দখল নিয়েও। নিয়মিত নালা সাফাই না হওয়ার অভিযোগ তো আছেই। পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি জানান, পুরুলিয়া পরিকল্পিত শহর নয়। নিকাশি ব্যবস্থাও মান্ধাতা আমলের। তবে নিকাশির বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। একটু বৃষ্টিতে সাহেববাঁধ লাগোয়া যে সূর্যসেন পল্লিতে জল জমে, সেখান থেকে জল বার করতে পৃথক নিকাশি নালা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সরানো হচ্ছে নিকাশি নালার উপরে থাকা দখলদারিও।

ঝালদা

বেহাল নিকাশি নিয়ে ঝালদা শহরের ক্ষোভ আজকের নয়। জল নিষ্কাশনের জন্য শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ডে ভরসা বলতে সরু-অপরিসর নালা। শহরবাসীর দাবি, প্রায় বুজে যাওয়া ওই সব নালা দিয়ে জল ঠিকমতো যেতে পারে না। বৃষ্টিতে নালার জল উপচে পথে গড়ায়। দুর্গন্ধে পথ চলা দায় হয়ে ওঠে। মুশকিল আসান হতে পারত হাইড্রেন। তবে নামমাত্র যে কয়েকটি হাইড্রেন রয়েছে, তা শহরের জল পুরোপুরি নিষ্কাশন করতে পারে না। বর্ষার মরসুমে শহরে জল দাঁড়ানো যেন দস্তুর হয়ে উঠেছে। ঝালদার উপপুরপ্রধান সুদীপ কর্মকারের তবে দাবি, শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে নতুন করে নালা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হবে হাইড্রেনও।

রঘুনাথপুর

তুলনামূলক নতুন এলাকাগুলিই নিকাশি নিয়ে রঘুনাথপুর পুরকর্তৃপক্ষের মাথাব্যথার কারণ। সে ভাবে নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই ওই সব এলাকা তাই জলে ডোবে। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দপল্লির বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে বর্ষায় জল-যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। জনবসতি বাড়লেও পুরসভা নিকাশি ব্যবস্থা গড়তে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। পুরপ্রধান তরণী বাউরির তবে আশ্বাস, ইতিমধ্যে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার করা হয়েছে। কোন কোন এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা গড়তে হবে, তা নিয়ে সমীক্ষা হয়েছে। তিন কোটির কিছু বেশি টাকা ব্যয়ে নিকাশি ব্যবস্থা গড়ার প্রস্তাব ‘সুডা’র কাছে পাঠানো হয়েছে।

বাঁকুড়া

সাফাই করা হয় না নিকাশি নালা, প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায় বাঁকুড়া শহরবাসীর তরফে। শিখরিয়াপাড়া, বড়কালীতলা, সিনেমারোড, রামপুর, কমরারমাঠ, লোকপুর এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে নালা পরিষ্কার না হওয়ায় নালা উপচে জল রাস্তায় আসে। নোংরা জল মাড়িয়ে চলে যাতায়াত। কোথাও বড় সমস্যা দানা বাঁধলে স্থানীয় কাউন্সিলরকে চাপ দিয়ে সাফাই কর্মীদের আসতে বাধ্য করানো হয় বলে দাবি। রোগব্যাধি ঠেকাতে নিয়মিত নালা পরিষ্কারের দাবি
উঠছে। পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার তবে বলেন, “সমস্ত কাউন্সিলরদের নির্দেশ দিয়েছি, সাফাই কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত নালা পরিষ্কার করতে হবে।”

সোনামুখী

আবর্জনা সাফাই করা হলেও নালা দিয়ে জল বেরোতে চায় না। মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ে, জানাচ্ছিলেন সোনামুখী পুরসভা লাগোয়া কৃষ্ণকালীতলার বাসিন্দারা। বুড়াশিবতলায় রাস্তার ধারে জমে আছে আবর্জনা। স্বর্ণময়ীতলাতেও নিকাশি নালা বেহাল। পরিকল্পনা ছাড়া নালা তৈরির জন্য এই হাল বলে দাবি। পুরপ্রধান সন্তোষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “সোনামুখী প্রাচীন শহর। বিভিন্ন এলাকার পুরনো বাড়িগুলো নিচু। বাধ্য হয়ে নিকাশি নালা তেমন করেই করতে হয়েছে। তাতে নতুন এলাকার সঙ্গে সামঞ্জস্য আনা যথেষ্ট মুশকিল।” তাঁর দাবি, তবু প্রতিনিয়ত পরিচ্ছন্ন করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন এলাকায় নতুন হাইড্রেন করা হয়েছে।

বিষ্ণুপুর

বিষ্ণুপুর শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাপড় মোড় এলাকা থেকে সার্কাস ময়দান হয়ে একটি কাঁচা হাইড্রেন যমুনাবাঁধে পড়েছে। শহরের একটি বড় অংশের জল ওই নালা দিয়েই বয়ে যায়। তবে তা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় প্রবল বৃষ্টিতে এলাকা জলে ভাসে। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মল্লেশ্বর এলাকা, কলেজ রোড, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোপেশ্বরপল্লি হোক বা ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালগঞ্জ, ছবিটা সর্বত্র কমবেশি একই। পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামী বলেন, “রবীন্দ্র স্ট্যাচু থেকে কলেজ রোড পর্যন্ত আধুনিক নিকাশি নালা নির্মিত হচ্ছে। পুরনো দিনের বসতি এলাকায় বড়সড় নিকাশি নালা তৈরির সে ভাবে সুযোগ নেই। তবে যেখানে নিকাশি নালা বড় করার প্রয়োজন, তা পরিকল্পনায় ধরা আছে। প্রতিটি ওয়ার্ডেই ৩০০ মিটার করে নিকাশি নালা তৈরি হবে।” (চলবে)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia Jhalda Raghunathpur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।