শান্তিনিকেতনে মিছিল এসএফআইয়ের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে তাদের শাস্তি মকুব করে পুনরায় পড়াশোনার সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানাল বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিবৃতি দিয়ে জানালো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এ কথা জানান। তবে বরখাস্ত হওয়া অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের শাস্তি নিয়ে বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি। এ দিনই সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে বরখাস্ত, পড়ুয়াদের সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও উপাচার্যের দাবিতে সভা করেন এসএফআইয়ের শীর্ষ নেতৃত্ব। নিজেরা আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা।
গত ২৩ নভেম্বর বেশ কয়েকটি দাবিতে উপাচার্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কথা বলতে যান কিছু পড়ুয়া। নিরাপত্তারক্ষীরা ঢুকতে বাধা দিলে পড়ুয়াদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের ধস্তাধস্তি বেধে যায়। এরপরই পড়ুয়াদের হাতে ঘেরাও হন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। প্রায় ১০ ঘণ্টা ঘেরাও থাকার পর নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের সাহায্যে উপাচার্যকে মুক্ত করা হয়। সেই বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যও। তিনি বিক্ষোভে পড়ুয়াদের উস্কানি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলেন কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যকে বাংলোতে বন্দি রেখে পড়ুয়ারা আন্দোলন চালিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
ওই ঘটনায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ গত ডিসেম্বর মাসে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে বরখাস্ত ও সাতজন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তনেই। তা নিয়ে সম্প্রতি আন্দোলনেও নামে বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা। এ দিনের বিবৃতিতে বিশ্বভারতী জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের তাদের পড়াশোনা পুনরায় শুরু করার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তবে তারা ২৩ নভেম্বরের ঘটনার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করলে তবেই তা দেওয়া হবে। আন্দোলনরত পড়ুয়া প্রত্যুষ মুখোপাধ্যায়, মৃত্যুঞ্জয় দাসরা বলেন, “আমরা আইনি পরামর্শ নিয়ে এবং নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে এ নিয়ে আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাব।”
এ দিন বিশ্বভারতী অভিযানের ডাক দিয়েছিল এসএফআই। এ দিন বোলপুর স্টেশন থেকে শান্তিনিকেতন পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত এসএফআইয়ের তরফে প্রতিবাদ মিছিল করা হয়। ছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য, রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান, রাজ্য সহ সভাপতি দেবাঞ্জন দেব। মিছিল থেকে পড়ুয়াদের সাসপেনশন প্রত্যাহার, উপাচার্যের পদত্যাগ-সহ একাধিক দাবি তোলা হয়।
এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, “গোটা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে কেন্দ্রের সরকার। বিশ্বভারতীতেও তার কোনও পার্থক্য নেই। যখন থেকে এই উপাচার্য এসেছেন তখন থেকে আমরা একই জিনিস লক্ষ্য করছি। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার উপর শাস্তির খাঁড়া নামিয়ে আনা হচ্ছে। সে জন্যই আমরা আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।” এ দিন বিভিন্ন দাবি নিয়ে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব বিশ্বভারতী প্রোক্টর অফিসে যান। সেখানে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টার উপর আলোচনাও করেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy