বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
ফের নাম না করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করল বিশ্বভারতী। রবিবার একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতর ও রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে সমালোচনা করে বিশ্বভারতী। সেই সঙ্গেই জমি প্রসঙ্গ তুলে অমর্ত্য সেনকে নাম না করে আক্রমণ করা হয়। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিশেষ দলের হয়ে রাজনীতি করার পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন আশ্রমিকেরা।
এ দিনের বিবৃতিতে বিশ্বভারতীর দাবি, ‘‘অবৈধ ভাবে যাঁরা ৬৫ একর জমি দখল করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী প্রতিবাদ নথিভুক্ত করেছে। এটা লজ্জার বিষয় যে বিশ্বভারতীর সাথে যুক্ত থাকার কারণে যাঁরা খ্যাতি অর্জন করেছেন তাঁরাও অবৈধ ভাবে জমি দখলের অপরাধে অপরাধী। এখন ক্ষমতায় থাকা সরকারের সঙ্গে তাঁদের রাজনৈতিক সংযোগের কারণে এই ব্যক্তিদের নিন্দা করা নিষিদ্ধ।”
অমর্ত্য সেনের বাসভবন প্রতীচী বাড়ির জমি-বিতর্ক নিয়ে অমর্ত্য সেনকে এর আগে লাগাতার নিশানা করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে। এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলেই ফের এক বার অমর্ত্যকে আক্রমণ করা হল বলে মনে করছেন আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা।
প্রতীচী বাড়ির ‘বিতর্কিত’ জমি থেকে অমর্ত্যকে সরে যাওয়ার যে নোটিস বিশ্বভারতী দিয়েছিল, তার উপরে বীরভূম জেলা আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সেই সময়ও অমর্ত্যকে সমর্থন জানিয়ে উপাচার্যের নিন্দায় সরব হয়েছিলেন বিদ্বজ্জনেদের অনেকে। অমর্ত্যের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠিও দিয়েছেন বহু গুণীজন। এ দিন তাঁদেরও আক্রমণ করা হয়েছে প্রেস বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “একটি প্রতিষ্ঠান যা ভারতের একজন কৃতী সন্তান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তা পশ্চিমবঙ্গের তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে খুব কমই সমর্থন পায়। পরিবর্তে জমি হড়পকারীদের দাবিকে সমর্থন করে বিশ্বভারতীতে জমায়েত হয়ে দৃশ্যমান ব্যক্তিরা যা করছেন। তা রাজনৈতিক সুবিধার আশায় করছেন বলে অনুমান করা যেতে পারে।’’
বিশ্বভারতীর এই বিবৃতির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন প্রাক্তনী ও আশ্রমিকেরা। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উপাচার্য বরাবর একই ভাবে বিদ্বজনদের আক্রমণ করে চলেছেন। এর থেকে বোঝা যায় উনি দিশাহারা হয়ে পড়েছেন এবং ওঁর কথার কোনও ভিত্তি নেই।’’ প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘উনি বিশেষ দলের হয়ে রাজনীতি করে চলেছেন এবং ক্রমাগত সবাইকে অপমান করে যাচ্ছেন।’’
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়েও বিবৃতিতে আক্রমণ করা হয়েছে রাজ্য সরকারকে।বলা হয়েছে, “উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে লড়াই এমন কুৎসিত মোড় নিয়েছে যা অনেক আগেই অনুমান করা গিয়েছিল। বামফ্রন্ট শাসনের দীর্ঘ সময়কালে অনিলায়ন শব্দটি বহুল প্রচলিত ছিল। সেই সময় এক বিশিষ্ট বামফ্রন্ট নেতার সম্মতি ছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও নিয়োগ সম্ভব ছিল না।’’ বিবৃতিতে বিশ্বভারতীর আরও দাবি, ‘‘ওই বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া তৎকালীন রাজ্যপাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করেছিল। তার ফলে তৎকালীন শাসক দলের নেতাকর্মীরা উপাচার্যকে হেনস্থা করতে মাঠে নেমে পড়েছিল। আজ একই ভাবে অন্য নাম নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে অচলাবস্থা আনা হয়েছে।”
আশ্রমিক অনিল কোনার উপাচার্যকে বিঁধে বলেন, ‘‘উনি বিদ্বজ্জনদের আক্রমণ করে নিজেকে মহান প্রমাণ করতে চাইছেন, যা আগে কোনও উপাচার্যকে করতে হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy