এই চেয়ারেই সুভাষচন্দ্র বসু বসেন বলে দাবি কর্মকার পরিবারের। নিজস্ব চিত্র
সভা করতে এসে মঞ্চে তাঁর জন্য রাখা সোফা সরিয়ে কাঠের চেয়ারে বসেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। তাঁর স্পর্শ পাওয়া সেই চেয়ার আজও পুজো করে বাঁকুড়ার দেশুড়িয়া গ্রামের নিরঞ্জন কর্মকারের পরিবার। গত ৭২ বছর ধরে সেই আসন পুজো করে আসছেন কর্মকার পরিবারের সদস্যরা।
১৯৪০ সালের ২৮ এপ্রিল বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটিতে একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ভিড়ে ঠাসা সেই সভায় নেতাজির জন্য রানিগঞ্জ থেকে সোফা ভাড়া করে এনেছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু প্রবীণরা বলেন, মঞ্চে উঠে সোফা সরিয়ে পাশে রাখা একটি সাধারণ কাঠের চেয়ার টেনে বসে পড়েন নেতাজি।
সভা শেষ হতেই দেশুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রামরূপ কর্মকার ছুটে যান মঞ্চে। তাঁর কাছ থেকে আনা কাঠের চেয়ারেই বসেছিলেন নেতাজি। তাঁর স্পর্শ পাওয়া সেই চেয়ার মাথায় করে সে দিন নিজের বাড়িতে ফেরেন রামরূপ। ঠাকুরঘরে যত্ন করে রেখে দেন ওই চেয়ার। বাড়ির সকলকে জানিয়ে দেন, ওই চেয়ারে নেতাজি বসেছেন। তাতে বসার অধিকার আর কারও নেই।
এর পর দীর্ঘ সাত দশক কেটে গেছে। সময়ের নিয়মে প্রয়াত গিয়েছেন রামরূপ। কিন্তু নেতাজির স্পর্শ পাওয়া সেই চেয়ার আজও আছে কর্মকার পরিবারের ঠাকুর ঘরে। চেয়ারের উপর রাখা নেতাজির ছবি। আজও প্রতি দিন কর্মকার পরিবারের কূলদেবী মনসার নিত্যপুজোর পাশাপাশি ঠাকুরঘরে রাখা চেয়ারে নেতাজির ছবিতে মালা পরিয়ে দেন পরিবারের সদস্যরা। ফুল দিয়ে সাজানো হয় চেয়ারটি। প্রয়াত রামরূপ কর্মকারের বড় ছেলে আশি ছুঁইছুঁই নিরঞ্জন কর্মকার বললেন, ‘‘এই চেয়ারটি দেখতে যতই সাধারণ হোক, আমাদের কাছে তা গর্বের। আজ পর্যন্ত ওই চেয়ারে বসার স্পর্ধা দেখায়নি আমাদের পরিবারের কেউই। আমরা যে ভাবে ওই চেয়ারকে শ্রদ্ধা করে এসেছি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও তাই করে চলেছে। আমাদের বিশ্বাস, নেতাজি আবার কোনও এক দিন ফিরে এসে ওই চেয়ারে বসবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy