চলছে স্লোগান। নিজস্ব চিত্র
আর্থিক অবস্থা ভাল। তবুও খাস জমি নিজের নামে পাট্টা করানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে বিষ্ণুপুরের মড়ার পঞ্চায়েতের সোনারডাঙা এলাকায় বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মহকুমাশাসক অনুমপকুমার দত্ত ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সোনারডাঙা এলাকায় ২৩.৪৩ একর জমির মধ্যে ৩.২৭ একর খাস ডাঙা জমি রয়েছে। সেখানে একটি সরকারি প্রকল্প গড়ার জন্য পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। সে জন্য শুক্রবার প্রশাসনের আধিকারিকেরা জায়গাটি সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। সঙ্গে ছিলেন ভূমি দফতরের আধিকারিকেরাও। শনিবার খবর ছড়ায়, ওই খাস জমি মড়ারের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ কয়েকজনের নামে পাট্টা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। এরপরেই গ্রামের কিছু মানুষ বিক্ষোভে নামেন।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সোনারডাঙার বাসিন্দা শাহেনশা মণ্ডল বলেন, “খাস জায়গা যোগ্যদের না দিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ একাধিক নেতা রাতের অন্ধকারে নিজেদের নামে পাট্টা করিয়ে নিলেন। তাঁদের বহিষ্কারের দাবিতেই আমরা বিক্ষোভে নেমেছি।”
মড়ার পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান অরুণ বিশ্বাসের দাবি, “২০২০-’২১ সালে এলাকার অনেকের সঙ্গে আমিও পাট্টার জন্য আবেদন করি। পাট্টা হাতে পাইনি। তবে অনলাইনে আমার ও স্ত্রীর নামে ওই জায়গায় প্রায় ৯ কাঠা নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। আমি প্রশাসনের কাছে পাট্টা বাতিলের আর্জি জানিয়েছি।”
তাতে অবশ্য ক্ষোভ থামেনি। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, ভূমিহীনেরা জমির পাট্টা পাওয়ার কথা। এ ক্ষেত্রে অবস্থাপন্ন হলেও প্রধান কী করে পাট্টা পাচ্ছিলেন? ভূমি দফতরের একাংশের যোগসাজসের অভিযোগ তুলছেন কেউ কেউ। বিষ্ণুপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক পার্থসারথী মাজি বলেন, “এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। পোর্টালে নাম উঠলেও পাট্টা এখনও বিলি হয়নি। আমরা সংশোধন করে নিচ্ছি।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমির স্থায়ী সমিতির বৈঠকে আলোচনা ও লিখিত সিদ্ধান্তের পরেই পাট্টা প্রাপকদের নাম ঠিক হয়। তবে কী সেখানেই গলদ? এ বিষয়ে বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ শমীক পাল বলেন, “নাম কম থাকলে খুঁটিয়ে দেখা হয়। এ ক্ষেত্রে লম্বা তালিকা হওয়ায় অসাবধানবশত ভুল হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, তবে স্থানীয় স্তরে তদন্ত করার সময় গ্রাম সংসদ সদস্য, প্রধান বা প্রধানের প্রতিনিধি ও ভূমি দফতরের প্রতিনিধি-সহ অনেকেই থাকেন। সেখানেই সাধারণত ভুলটা ধরা পড়ার কথা। তবে পাট্টা বিলির আগে আরও একবার পর্যবেক্ষণ করা হত। এখন প্রশাসনিক ভাবেই পাট্টা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ বলেন, “যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের বাদ দিয়ে তৃণমূলের প্রধান ও তাঁর সঙ্গীরা নিজেদের নামে পাট্টা করিয়ে নিলেন! প্রশাসন সে সব মুখ বুজে মেনেও নিচ্ছে। আর কত নীচে নামবেন তৃণমূল নেতারা? সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও প্রধানকে বহিষ্কার করা হোক।” তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই, খোঁজ নিচ্ছি। তবে গলদ থাকলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy